ফ্রিল্যান্সিংয়ে প্রতিষ্ঠিত সায়েম, করেছেন কর্মসংস্থানের সুযোগ

  • বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বাবাহীন পরিবারে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে মায়ের গরু বিক্রির দেয়া ২৪ হাজার টাকায় ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাজিমাত করেছে উদ্যোক্তা আবু সায়েম।

২০১৪ সাল থেকে নিজের চেষ্টায় মেধাকে কাজে লাগিয়ে অল্প দিনেই সফলতা লাভ করেছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীলতায় ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সায়েম এখন প্রতিষ্ঠিত।

বিজ্ঞাপন

রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বাসিন্দা আবু সায়েম। সায়েম যখন নবম শ্রেণিতে পড়ে তখনই তার বাবাকে হারায়। বাবাকে হারানোর পর পরিবারের ভরণপোষন নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েন তিনি। বন্ধুদের সাথে গল্পের সময় যে সায়েম ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা প্রাকশ করতো সে তার স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে হলেন উদ্যোক্তা। নিজেকের গড়েছেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে।

উদ্যোক্তা আবু সায়েম বার্তা২৪.কমকে বলেন, টানা পোড়নের পরিবারের ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছেকে মাটি দিয়েছি৷ ব্যতিক্রমী বাসনা থেকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ছুটে চলেছি। তাই চাকরিতে মনোনিবেশ করিনি। আজ চাকরি করে হয়তো নিজে প্রতিষ্ঠিত হতাম কিন্তু অন্যদের কাজের সুযোগ করে দিতে পারতাম না। এই ফ্রিল্যান্সিং জগতে আমার মেন্টর বলতে কেউ ছিল না। নিজের চেষ্টায় এগিয়ে আজ পুরো অর্জন। সল্প পরিসরে শুরুটা করেছিলাম ২০১৪ সালে। বর্তমানে আমার এখানে ৫০ জন কাজের সুযোগ পাচ্ছে তাদের বেতন ৭৫০০ -৩০০০০ টাকা পর্যন্ত। আত্মবিশ্বাসী হয়ে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ নিজের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছি৷ আগামীতেও আর অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।

রংপুরে তার ২ টি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে আয় লাখ টাকা। মাস খানেক আগে তিনি পেয়েছেন সিলভার বাটন। নিজে প্রতিষ্ঠিত হবার পাশাপাশি তরুণ তরুণীদেরও করে দিয়েছে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এতে বেকারত্বের অভিশাপ দূর করে সুগম হয়েছে উপার্জনের পথ। তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ পেয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার তরুণ- তরুণী।

কর্মরত তরুণী সোনালী বলেন,পড়ালেখার পাশাপাশি নিরিবিলি ও নিরাপদ পরিবেশে কাজ করতে পারছি। উপার্জনের টাকা দিয়ে নিজের খরচ চালিয়েও পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারি।

কর্মরত বেশকয়েকজন তরুণ বলেন, এই প্রতিষ্ঠান আমাদের জন্য আশীর্বাদ। পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ করে না দিলে নিজে উপার্জন করতে পারতাম না। পরিবারকেও সহযোগিতা করতে পারতাম না। আগামীতেও ইচ্ছে আছে নিজেরা সাবলম্বী হয়ে সায়েম স্যারের মত প্রতিষ্ঠান চালু করার।

নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে প্রযুক্তির এই যুগে ফ্রিল্যান্সিংয়ের আশীর্বাদে অন্যান্যদের অনুপ্রেরণা উদ্যোক্তা আবু সায়েম। ৫০ থেকে আগামীতে ৫০০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে দুচোখ ভরা স্বপ্ন তার।