অনুমতি পেলেই সিংড়ায় করোনা পরীক্ষা শুরু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

র‍্যাপিড টেস্ট কিট দ্বারা করোনা সংক্রমণের প্রাথমিক ধাপ অ্যান্টিবডি স্ক্রিনিংয়ের (আইজিজি ও আইজিএম) জন্য প্রস্তুত নাটোরের সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখন অপেক্ষা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর এর আনুষ্ঠানিক অনুমতির।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) আইইডিসিআর বরাবর নিজেদের সক্ষমতা উল্লেখপূর্বক আনুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। অনুমতি মিললেই দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো জেলার উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক পরীক্ষা।

বিজ্ঞাপন

 এই পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে স্থানীয় পর্যায় থেকেই শনাক্ত হবে ৬০ ভাগ করোনা রোগী। চাপ কমবে রাজধানী ঢাকা ও বিভাগীয় শহরগুলোর নির্ধারিত ল্যাবগুলোর পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিনের ওপর। এতে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার ফলাফল মিলবে মাত্র ১৫ মিনিটে।

আইইডিসিআর বরাবর প্রেরিত অনুমতির আবেদন সম্পর্কে বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম।

ওই আবেদনে জানানো হয়, টেলিমেডিসিন সেবায় দেশের শীর্ষস্থান অর্জনকারী সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অত্যাধুনিক ল্যাবের চারজন অভিজ্ঞ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (৩ জন ডিপ্লোমা ও ১ জন বিএসসি) র‍্যাপিড টেস্ট কিট দ্বারা করোনার প্রাথমিক নমুনা পরীক্ষায় সক্ষম। তাদের হাত ধরেই গত বছর দেশে উপজেলা পর্যায়ে প্রথম সিংড়াতেই ডেঙ্গু রোগীর প্লাটিলেট কাউন্টের মাধ্যমে সংক্রমণ পরীক্ষা হয়।

হাসপাতালের ল্যাবে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা

র‍্যাপিড টেস্ট কিটের বৈশিষ্ট্যগত কারণে সমজাতীয় হরমোন, ডায়াবেটিস, হেপাটাইটিস বি, প্রেগন্যান্সির মতো এই স্ক্রিনিং টেস্টও এখানে করা সম্ভব। শুধু নমুনা সংগ্রহ থেকে প্রতিবেদন তৈরিতে নিয়োজিতদের জন্য পর্যাপ্ত পিপিই’র ব্যবস্থা সাপেক্ষে অনুমতি প্রদানের পর যে কোনো সময় থেকে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ল্যাবের সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অসীত কুমার রায় বলেন, আমাদের জন্য যদি পর্যাপ্ত পিপিই’র ব্যবস্থা করা হয়, তবে যে কোন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারবো। এখন পর্যন্ত আমাদের কাজ শুরু করার মতো পিপিই রয়েছে। পরিস্থিতি এর ভবিষ্যৎ চাহিদা নির্ধারণ করবে।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম আলমাস বলেন, আমরা রক্ত পরীক্ষা থেকে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি নির্ণয় করবো। যেহেতু ভাইরাস আইসোলেশন করছি না, তাই এই পরীক্ষা করতে আমরা সক্ষম এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত। যদি অনুমতি পাই, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে সেবা প্রদানের চেষ্টা করবো।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন-(পিসিআর) মেশিন প্রাথমিক নয়, মূলত চূড়ান্ত সংক্রমণ পরীক্ষার মেশিন। আর র‌্যাপিড টেস্ট কিট প্রাথমিক সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য। আমরা প্রাথমিকভাবে সংক্রমণ নির্ণয় করতে পারলে আইজিজি ও আইজিএম নেগেটিভ রোগীকে পিসিআর পর্যন্ত যেতে হবে না। এতে পিসিআরে চাপ কমবে, যারা প্রকৃত আক্রান্ত, তারাই নিশ্চিত সেবা পাবে।

আমাদের ল্যাব বায়োকেমিস্ট্রি অ্যানালাইজারের মতো উন্নতমানের মেশিন দ্বারা অনেক আগে থেকেই সমৃদ্ধ। তাই বিভিন্ন কিটসের সাথে আমাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অনুমোদন পেলে প্রাথমিকভাবে সঙ্গরোধে বা আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষায় অগ্রাধিকার থাকবে। প্রয়োজনে আমরা সম্ভাব্য রোগীর নিকট গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতে প্রস্তুত, যোগ করেন তিনি।

যেভাবে কাজ করবে র‌্যাপিড টেস্ট কিটস: সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তির এক ফোঁটা রক্ত কিটসের নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। ১৫ মিনিটের মধ্যে কিটসের কন্ট্রোল লাইন আইজিজি ও আইজিএম মার্ক বরাবর এলে করোনা পজিটিভ, না এলে নেগেটিভ।