মায়ের বিরুদ্ধে শিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যার অভিযোগ 

  • ডিস্ট্রিক্ত করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়, ছবি: বার্তা২৪.কম

ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়, ছবি: বার্তা২৪.কম

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামে পুকুর থেকে তানজিলা খাতুন টিয়া নামের তিন মাসের এক শিশুকন্যার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শিশুটির মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

শিশুটির মৃত্যুর জন্য তার মা তানজিলা খাতুন তারিনকে (২৯) দায়ী করছেন পরিবার ও এলাকাবাসী। তারিন রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের জামিরা গ্রামের আইয়ুব ইসলাম টুকুর মেয়ে, তার স্বামীর নাম তুষার হোসেন। 

আজ শনিবার (২৫শে জানুয়ারী) সন্ধ্যায় বজরাপুর গ্রামে  এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং রাতে তারিন ও পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বজরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম টেনুর পালিত কন্যা তারিন তিন মাস আগে কন্যা শিশুটির জন্ম দেন। শিশু জন্মের পর থেকে তারিন পালিত বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বজরাপুর গ্রামেই থাকেন। শনিবার সন্ধ্যা নামার আগে শিশু তানজিলার নিখোঁজ হওয়ার খবর জানতে পারেন প্রতিবেশী ও পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে তারা তাজুল ইসলামের বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখেন। পরে পুকুর থেকে শিশুটির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বাগাতিপাড়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। কিভাবে তিন মাসের শিশু পুকুর পর্যন্ত পৌঁছলো তা নিয়ে জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
natore
মৃত তিন মাসের কন্যা শিশু


তারিনের চাচা সুরুজ আলী তার স্ত্রী রুবিনা বেগমের বরাত দিয়ে জানান, সন্ধ্যার আগে তারিন শিশুকন্যাকে নিয়ে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে যায়। তবে কিছুক্ষণ পর একাই ফিরে আসে। তখন বাড়ির লোকজন টিয়ার খোঁজ করলে তারিন জানায় পাশের বাড়ির এক চাচীর কাছে টিয়াকে রেখেছেন তিনি। কিছুক্ষণ পর টিয়াকে না পেয়ে বাড়ির লোকজন তারিনকে খুঁজতে থাকে। তারিনকে না পেয়ে পাশের বাড়িগুলোতে টিয়ার খোঁজ করে পাওয়া না যাওয়ায় বাড়ির সকলে একত্রে টিয়াকে খুঁজতে থাকে। কিছুক্ষণ পর রুবিনা পুকুরে টিয়ার ভাসমান মৃতদেহ দেখতে পায়।

তারিনের স্বামী তুষার হোসেন জানান, কখনও কখনও তারিন খুব রেগে যেতেন। মেয়ের মৃত্যুর খবর জানার আধঘন্টা আগেও তিনি স্ত্রী তারিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তখন তারিন বেশ স্বাভাবিক ছিলেন। এ ঘটনায় তিনি কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান জানান, তিনি শিশুটির মরদেহ পানিতে ভেসে ওঠার খবরে ওই বাড়িতে আসেন। তারিন মানসিকভাবে সুস্থ হলেও অতিরিক্ত রাগের কারণে অনেক সময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন। শিশুটির একা একা পানিতে পড়ে যাবার কোন কারণ নেই।

ঘটনাস্থল প্রাথমিকভাবে তদন্তকারী বাগাতিপাড়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক তারেকুল ইসলাম জানান, এতো ছোট শিশু কিভাবে পুকুরের পানিতে গেল তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। 

এ বিষয়ে রাতে বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন বলেন, শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনার সাথে মা তারিন যুক্ত কি না- তা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জানা যাবে।