হাওরে ৭২ ক্লোজার এখনো অরক্ষিত

  • লিপসন আহমেদ,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,সুনামগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লালুর গোয়ালার ভাঙন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

লালুর গোয়ালার ভাঙন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সুনামগঞ্জের দ্বিতীয় বৃহৎ হাওর শনি। এই হাওরে জমি আছে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল অসময়ে নির্মিত হাওরটির লালুর গোয়ালা’র দুর্বল বাঁধ ভেঙে দেখতে দেখতে পুরো হাওর ডুবে যায়। লাখো কৃষক ওই দিন কান্নায় ভেঙে পড়েন। শনির হাওরে তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৃষকদের জমি আছে। এবার বুধবার (২২ জানুয়ারি) পর্যন্ত লালুর গোয়ালার ভাঙনে কাজই ধরেনি পিআইসি’র (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র) লোকজন।

শনির হাওরের তাহিরপুর-জামালগঞ্জের সীমান্তবর্তী বৌলাই নদীর পাড়ে লালুর গোয়ালার ভাঙন। এই ভাঙনই জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা-তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। এখনো পর্যন্ত কাজ শুরু না হওয়ায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে হাওরপাড়ের কৃষকদের।

বিজ্ঞাপন

হাওরপাড়ের তাহিরপুর উপজেলার রাজধরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, আমার বাড়ি থেকে পায়ে হাঁটলে ১০ মিনিট দুরত্বের ক্লোজার (ভাঙন) লালুর গোয়ালা, ওখানে নামকাওয়াস্তে, লোক দেখানোর জন্য কয়েকটি বাঁশ কোপা ছাড়া এখনো উল্লেখ করার মতো কোন কাজ শুরু হয়নি।

এই বাঁধ ঠিকভাবে না করা হলে পুরো শনির হাওর নিয়ে ঝুঁকি থাকবে। ২০১৭ সালেও এভাবেই বাঁধ নির্মাণে অবহেলা করা হয়েছিল, এ কারণে পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধ ভেঙে কাছা ধান ডুবে গিয়েছিল। এবারও পুরো হাওরপাড়ের মানুষ এই ক্লোজার নিয়ে চিন্তিত।

বাঁধের দেখভালকারী কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল কবীর বলেন, লালুর গোয়ালায় বাঁশ লাগানো শুরু হয়েছে। মাটির কাজ দু-এক দিনের মধ্যে শুরু হবে।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বললেন, শনির হাওরের লালুর গোয়ালা দুই উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজার। আমরা এটি দ্রুত করার জন্য তাগিদ দিচ্ছি। পানি নামতে বিলম্ব হওয়ায় ওখানে বাঁধের কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছিল। এখন গর্ত ভরাট শুরু হয়েছে। দিন দুয়েকের মধ্যে ক্লোজারে মাটি ফেলা শুরু হবে।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, ক্লোজারের পাশে পানি থাকলেও কিছু দূরেই মাটি পাওয়া যাবে। পানির কথা বলে কাজ বিলম্বিত করার এখন আর কোন সুযোগ নেই।

শনির হাওরের লালুর গোয়ালা কেবল নয়। জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশাসহ হাওরের তলানীর উপজেলাগুলোর অনেক বড় বড় ক্লোজারে এখনো কাজ শুরু হয়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান বলেন, ১৩৫টি ক্লোজারের মধ্যে ৬৩টিতে কাজ শুরু হয়েছে। তাহিরপুরের শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওরে মঙ্গলবার গিয়ে আমাদেরও খারাপ লেগেছে। আমরা জানিয়ে দিয়েছি আজ বুধবারের মধ্যে যেসব বাঁধে পিআইসি’রা কাজ শুরু করবে না, তাদের পিআইসি বাতিল করা হবে। নতুন করে পিআইসি গঠন করে কাজ করা হবে।

জেলা হাওর রক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন কমিটির অভিযোগ নিষ্পত্তিকারী কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. এমরান হোসেন বলেন, আজ বুধবারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলোতে কাজ শুরু না হলে সংশ্লিষ্ট পিআইসি বাতিল করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। যারা কাজ শুরু করতে পারবে, তাদের দিয়ে পিআইসি গঠন করা হবে।