ঝাড়ুদার দিয়ে চিকিৎসা হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে!

  • কাজল সরকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এক রোগীকে ইনজেকশন দিচ্ছেন পরিচ্ছন্নকর্মী কিশোর লাল

এক রোগীকে ইনজেকশন দিচ্ছেন পরিচ্ছন্নকর্মী কিশোর লাল

অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা পিছু ছাড়ছে না হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের। এমপি-মন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশ কর্ণপাত করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নানা সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটিতে এবার পরিচ্ছন্নকর্মী দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও এমন কাণ্ড বেশ পুরনো বলেই জানিয়েছেন রোগীরা। ঝাড়ুদার দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন হাসপাতালটির কয়েকজন স্টাফ। তবে এ কথা মানতে নারাজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।

বিজ্ঞাপন

অনেক রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মেলে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় জরুরি বিভাগে রোগীদের সেলাই ও ব্যান্ডেজ করছেন পরিচ্ছন্নকর্মী কিশোর লাল ও আবুল হোসেন। এমনকি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ও অফিস সহকারীরা বিভিন্ন সময় প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। আবার একই সুই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেলাই করতেও দেখা যায়।

রোগীকে চিকৎসাসেবা দিচ্ছেন পরিচ্ছন্নকর্মী আবুল হোসেন

এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন হাসপাতালটির কয়েকজন স্টাফ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্টাফরা বলেন, হাসপাতালে স্টাফ সংকট ও পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সরঞ্জাম বরাদ্দ না থাকায় এমনটা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ রোগীরা না জেনেই গার্ড ও ঝাড়ুদারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সচেতন রোগীরা।

চিকিৎসা নিতে আসা বানিয়াচং উপজেলার আড়িয়ামুকুর গ্রামের রাজন দাস বলেন, আমরা তো আর চিনি না কে ডাক্তার আর কে ঝাড়ুদার। এ কারণে যারাই চিকিৎসা দেয় তাদের কাছ থেকেই আমরা চিকিৎসা নেই।

সদর উপজেলার পইল গ্রামের আবুল কালাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোন পরিচয়পত্র না থাকায় কে পরিচ্ছন্নকর্মী আর কে চিকিৎসক তা বুঝতে পারি না। বুঝতে পারলে আমরা প্রতিবাদ করি। কিন্তু কর্ণপাত করে না কর্তৃপক্ষ।

তিনি বলেন, একই সুই দিয়ে একাধিক রোগীকে সেলাই দেয়া হয়। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ এভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে দিনের পর দিন সাধারণ রোগীরা হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতিন্দ্র চন্দ্র দেব বলেন, ইমার্জেন্সি বিভাগে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও তার সহযোগীরা আছেন। সুতরাং ঝাড়ুদার দিয়ে চিকিৎসা দেওয়ার কথা না।

একই সুই দিয়ে সেলাই করলে কোন সমস্যা হয় না দাবি করে তিনি বলেন, একজন রোগীকে সেলাই দেওয়ার পর সেটা যদি ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয় তাহলে কোন সমস্যা হয় না।