কুষ্টিয়ায় ধর্মঘটে অটোরিকশা-ইজিবাইকই ভরসা
নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবিতে কুষ্টিয়ায় বাস ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের ফলে কুষ্টিয়ার আন্তঃজেলা সড়কপথে কোনো বাস চলাচল না করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। এতে পারাপারের জন্য সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকই একমাত্র ভরসা যাত্রীদের।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। এ জেলা থেকে চলাচলকারী উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের সকল বাস বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী দূরপাল্লার কিছু কিছু বাস চলাচল করলেও বেশিরভাগই বন্ধ আছে।
তবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক পাওয়া গেলেও চালকরা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। বেশি ভাড়া দিয়েও গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।
শহরের মজমপুর গেট, চৌড়হাস মোড়, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, লাহিনী বটতৈল, বারখাদা ত্রিমোহনীসহ বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা যায়।
মিরপুর থেকে কুষ্টিয়া শহরে আসা আকলিমা খাতুন বলেন, 'কুষ্টিয়া শহরের একটি ক্লিনিকে চাকরি করি। প্রতিদিনই আসা যাওয়া করতে হয়। বাসে ১০ টাকা ভাড়া দিলেই হয়। কিন্তু বাস না চলাচল করায় ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে ইজিবাইকে আসতে হয়েছে। এভাবে যদি হয় তাহলে আর চাকরি করা হবে না। কারণ মাস শেষে যে সামান্য বেতন পাই এভাবে চললে বেতনের অর্ধেকই চলে যাবে গাড়ি ভাড়ায়।'
মাগুরা যাওয়ার জন্য কুষ্টিয়ার চৌড়হাসে গাড়ির অপেক্ষায় আবু তালেব। তিনি বলেন, 'ধর্মঘটের কথা জানতাম না। রাস্তায় এসেইতো বিপদে পড়েছি। আমাকে মাগুরা যেতেই হবে। বাধ্য হয়ে মাহেন্দ্রতে করে ঝিনাইদহে যাব। তারপর সেখান থেকে ভেঙে ভেঙে আমাকে মাগুরায় যেতে হবে।'
কুষ্টিয়া শহরের আলফামোড় থেকে ভেড়ামারা, দৌলতপুর, মিরপুর, আমলা, বামুন্দি এবং গাংনী পর্যন্ত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। তবে যাত্রীর চাপ লক্ষ্য করা গেছে।
সেখানে কথা হয় আব্দুল মজিদ নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। পরিবারকে নিয়ে ভেড়ামারায় যাবেন। কিন্তু একঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সিএনজি চালিত অটোরিকশা পায়নি। যেটি আসছে মুহূর্তেই যাত্রী ভরে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুল ইসলাম জানান, অধিকাংশ পরিবহন শ্রমিকদের লাইসেন্স নেই। তাছাড়া অনেক পরিবহনেরই ফিটনেস নেই। এমন অবস্থায় মামলার ঝুঁকি নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই স্বেচ্ছায় বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে শ্রমিকরা।