এমপিওভুক্তির খবর পেয়ে এক রাতে তৈরি হলো কলেজ!

  • মোহাম্মদ রনি মিয়াজী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পঞ্চগড়
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নতুনহাট টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের সাইনবোর্ড

নতুনহাট টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের সাইনবোর্ড

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নাম এসেছে—এমন খবর পাওয়ামাত্র ধানক্ষেত সংলগ্ন ফাঁকা মাঠে একটি কলেজের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুধু তাই নয়, এক রাতেই মাঠের ঠিক মাঝখানে লাগানো হয় কলেজটির সাইনবোর্ড।

এক রাতে নির্মাণ হওয়া কলেজটির নাম নতুনহাট টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ। ছিল না কোনো ভবন; এমনকি শিক্ষক-শিক্ষার্থীহীন ওই কলেজের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সম্প্রতি ঘোষিত এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায়।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন ঝলইশালাশিরি ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে কলেজটির আদ্যোপান্ত জানা যায়। এমপিওভুক্তির খবর পেয়ে আগের রাতে স্থাপিত হয়েছে ওই কলেজের সাইনবোর্ড।

স্থানীয়রা জানান, নতুন হাট বাজারের হোসনাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি পতিত জমিতে হঠাৎ করে বসানো হয়েছে কলেজের সাইনবোর্ড। হঠাৎ করে কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। কলেজের সাইনবোর্ড দেখে স্থানীয়রা সবাই বিস্মিত হয়ে পড়েন বলে জানান। কেবল কাগজে-কলমে থাকা এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকায় কিভাবে গেল তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।


গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) এমপিওভুক্তির তালিকায় নাম প্রকাশ হওয়ার পর ওই কলেজ কর্তৃপক্ষ সেদিনই শুরু করে ভবণ নির্মাণের কাজ। সেদিন রাতেই ইট গেঁথে ভবনের কাঠামো তৈরি করা হয়, রাতের মধ্যেই টাঙানো হয় কলেজের নাম লেখা একটি সাইনবোর্ড।

পঞ্চগড় বিসিকনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ দেলদার রহমান ভুঁইফোড় এ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বলে জানান স্থানীয়রা। যোগাযোগ করা হলে দেলদার রহমানের নিজেকে কলেজটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বলে পরিচয় দেন। তিনি জানান, কলেজটির অধ্যক্ষ তার স্ত্রী শামীমা নাজনীন।

রাতারাতি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ দেলদার রহমান বলেন, আমার ঘর আমি যখন খুশি তখন উঠাবো। এর আগে টিনশেড ঘরে পাঠদান চলতো। বর্তমানে কলেজটিতে ২ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করছে বলে দাবি করেন তিনি।

দেলদার রহমান আরও জানান, গেল এসএসসিতে এ কলেজের ৬০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, কাগজে-কলমে সব তথ্যই তার কাছে আছে।

এ ব্যাপারে পঞ্চগড় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিমাংশু কুমার রায় সিংহ বলেন, এমপিওভুক্তির বিষয়ে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। এসব বিষয়ে এমপি-মন্ত্রী ও সচিবরা জড়িত। এমপিওভুক্তির বিষয় ওনারাই ভালো জানেন।

উল্লেখ্য, পঞ্চগড় জেলার ৫ উপজেলার মোট ৪টি কারিগরি কলেজ এমপিওভুক্তির তালিকায় এসেছে। এমপিওভুক্ত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগের এমন করুন চিত্রই দেখা যায়।