মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে রেজোয়ান
মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার গোবড়া পাড়া গ্রামের বেকার যুবক রেজোয়ান করিম। তিনি দুই বছর আগে ৩০ শতক জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ শুরু করেন। বর্তমানে প্রতিটি গাছে অসংখ্য মাল্টা ধরেছে। একই সঙ্গে তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। রেজোয়ানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলার গোবড়া পাড়া গ্রামের ফয়জার রহমানের ছেলে রেজোয়ান করিম ছিলেন এলাকার বেকার যুবক। বাবার জমিতে একাধিকবার ফসল উৎপাদন করলেও লাভের মুখ দেখেননি। ইতিপূর্বে ধান, পাট, গম ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করেছেন রেজোয়ান করিম। কিন্তু লোকসানের কারণে সফল হতে পারেননি। এক সময় কৃষি কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন তিনি। এভাবে বেকার সময় কাটে তার দীর্ঘদিন।
২০১৮ সালে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস রেজোয়ানকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের রাজস্ব খাতের টাকা দিয়ে রেজোয়ানকে ৫০টি মাল্টার চারা ক্রয় করে দেয় উপজেলা কৃষি অফিস। একই সাথে রেজোয়ান নিজ অর্থ দিয়ে আরো ৫০টি চারা ক্রয় করে জমিতে লাগায়। বর্তমানে তার মাল্টা বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর মাল্টা ধরেছে। তার ক্ষেতের উৎপাদিত চারার কোন রোগবালাই নেই বললেই চলে। চারা রোপণের পর থেকে নিয়মিত পরিচর্যা করায় ২ বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে ৪০ থেকে ৫০ পিস মাল্টা ধরেছে। তার ক্ষেতের মাল্টা বেশ সুস্বাদু। প্রতি কেজি মাল্টা ১‘শ থেকে ১‘শ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। তার বাগানে শুধু বারি-১ জাতের মাল্টা রয়েছে।
রেজোয়ান করিম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন বেকার ছিলাম। বাবার জমিতে ফসল উৎপাদন করেও লাভের মুখ দেখতে পারিনি। এক সময় নিরাশ হয়ে কৃষি কাজ ছেড়ে দেই। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আবারো কৃষি পেশায় ফিরে এসেছি। ১ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছি। বর্তমানে আমার মাল্টা বাগানে প্রতিটি গাছে প্রচুর মাল্টা ধরেছে। আশা করছি মাল্টা বিক্রি করে এবারেই প্রথম লাভের মুখ দেখবো। বারি-১ জাতের মাল্টা সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও রয়েছে বাজারে।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এ দেশের আবহাওয়ায় বারি-১ জাতের মাল্টা খুবই উপযোগী। খেতেও খুব সুস্বাদু। এ জাতের কমলা ও মাল্টা আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভালো ফলন পেতে হলে প্রথমে গর্ত করে তার মধ্যে কেঁচো সার, ফসফেট, এমওপি সার প্রয়োগ করার পর চারা রোপণ করতে হবে।
যদি কোন কৃষক ১ বিঘা জমিতে মাল্টার চাষ করে তবে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে তার ১ লাখ টাকা লাভ হবে। দিন দিন কৃষকরা এ চাষাবাদে ঝুঁকছে।
পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বেকার যুবকদের মাল্টা চাষের দিকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে । এজন্য কৃষি বিভাগ থেকে চারাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।