লালমনিরহাটে মহাসড়কের দু'ধারের জীবন্ত বড় গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, লালমনিরহাট-বড়বাড়ি মহাসড়কের দু'ধারে লাগানো বিশাল বিশাল গাছ পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধনেও ভূমিকা রাখছে। কিন্তু গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত মহাসড়কটির মহেন্দ্রনগর থেকে বড়বাড়ি অংশের গাছগুলো টেন্ডার ছাড়াই কেটে ফেলেন স্থানীয় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব। স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তাদের জানানো হয়, জেলা পরিষদের পুরনো হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটা হচ্ছে। প্রথম দিন চারটি গাছের কথা বলা হলেও গত তিন দিনে প্রায় আট/১০টি গাছ কাটা হয়েছে। এরপরও থেমে থাকেনি গাছকাটা মহোৎসব।
করাত মিস্ত্রিদের কাছে জানতে চাইলে তারাও স্বীকার করেন, জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লবের ডাকে তারা শ্রমিক হিসেবে গাছ কাটছেন। কাটা গাছগুলো দাম প্রায় সাত/আট লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করে স্থানীয় সংস্কৃতিকর্মী সূফী মোহাম্মদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘গাছগুলো সড়কটিতে বেশ শোভা বর্ধন করে বীরদর্পে দাঁড়িয়েছিল। প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে মহেন্দ্রনগর এলাকার জীবন্ত গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব। অবশিষ্ট যে কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়েছিল, সেগুলোও কেটে নিতে নতুন মিশনে নেমেছেন তিনি। এ কারণে তাকে স্থানীয়রা গাছকাটা নেতা বলেও চেনেন।’
জেলা পরিষদ সদস্য মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব গাছ কাটার সত্যতা স্বীকার করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘দরপত্র (টেন্ডার) না হলেও জেলা পরিষদের পুরনো হলরুমের আসবাবপত্র মেরামত করতে কিছু কাঠের প্রয়োজন। তাই জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে চার/পাঁচটি গাছ কাটা হচ্ছে।’
হলরুমের জন্য দেওয়া বরাদ্দ পর্যাপ্ত না হওয়ায় এসব গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, জীবন্ত গাছ তো দূরের কথা, ওই সড়কের মৃত গাছ কাটারও আপাতত কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।