কওমি সনদের বিল পাসে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন মুফতি রুহুল আমীনের

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কওমি সনদের বিল পাসে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন মুফতি রুহুল আমীনের, ছবি: সংগৃহীত

কওমি সনদের বিল পাসে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন মুফতি রুহুল আমীনের, ছবি: সংগৃহীত

আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশের অধীনে কওমি মাদরাসাসমূহের দাওরায়ে হাদিসের (তাকমিল) সনদকে মাস্টার্স ডিগ্রি (ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবির সমমান প্রদান) বিল ২০১৮ সংসদে পাস হয়েছে।

জাতীয় সংসদে কওমি সনদের স্বীকৃতির বিল পাস করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মহাপরিচালক পীরে কামেল আল্লামা মুফতি রুহুল আমীন।

বিজ্ঞাপন

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উপেক্ষা করে দেশের শীর্ষ আলেমদের মতামত অনুযায়ী বিলটি পাস করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি তাকে অভিনন্দন জানান।

মুফতি রুহুল আমীন শিক্ষামন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, জাতীয় সংসদের সদস্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শিক্ষা সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সচিব এবং বিলটি পাস করার ক্ষেত্রে যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে মুফতি রুহুল আমীন বলেন, কওমি সনদের মান প্রদানের বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের ও খুশির। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, কওমি মাদরাসার সনদের বিষয়টি চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দরদপূর্ণ মনোযোগ ছিলো সবচেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে তার ভূমিকা ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন এক কাজের জন্য।

বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সংসদে পাসের জন্য তোলা হলে নানা প্রক্রিয়া শেষে বিলটি ভোটে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর ফলে বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে কওমি ছাত্র-শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/20/1537440701243.jpg

এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নাকচ করা হয়।

গত ১৩ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। আর সেদিনই বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে বিলটি তোলার কথা জানানো হয়। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলেই এই স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত ১০ সেপ্টেম্বরটি বিলটি সংসদে তোলার পর যাচাই-বাছাই করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

কওমি সনদের স্বীকৃতির বিষয়টি দীর্ঘদিনের দাবি। এই দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পর ১৯৯৯ সাল বিএনপি-জামায়াত ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করে কওমি মাদরাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল ইসলামী ঐক্যজোট।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ধর্মভিত্তিক এই দলগুলোর আক্বিদাগত ব্যাপক পার্থক্য থাকলেও কেবল এই ইস্যুতে তারা ‘শত্রুর’ সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি হয়। তবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কওমির স্বীকৃতি নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারী করা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় কওমি আলেমদের মুরুব্বি আল্লামা আহমদ শফিকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করা হয়। ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ওই কমিটিতে সদস্য সচিব ছিলেন গওহারডাঙ্গা মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমীন।

বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার কওমি মাদরাসা রয়েছে। এতদিন স্বীকৃতি না থাকায় কওমি মাদরাসার সদনধারীরা সরকারি-বেসরকারি কোনো চাকরিতে যোগ্য বলে বিবেচিত হতেন না। এখন তারা নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারবেন।

এদিকে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড গওহরডাঙ্গার উদ্যোগে গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়ায় কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।