ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন বাস যাত্রী। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১৭ জন। দিল্লির কাছে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে পড়ে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ৫০ ফুট নিচে পড়ে যায়। বাসটি লখনৌ থেকে দিল্লির দিকে আসছিল। ১৬৫ কি.মি. দীর্ঘ রাস্তাটি উত্তর প্রদেশের নয়ডা থেকে আগ্রাকে সংযুক্ত করেছে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, একটি যাত্রীবাহী বাস লখনৌ থেকে দিল্লি আসার পথে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বাসটি প্রায় ১৫ ফুট নিচে ড্রেনে গিয়ে পড়ে। এখনও পর্যন্ত ২০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, উদ্ধার কাজ চলমান রয়েছে।
আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এ ঘটনায় খুবই শোকাহত।
অঘোষিত সফরে উক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। তার সফরের কয়েক ঘণ্টা আগেই দেশটিতে রাশিয়া ড্রোন হামলা চালায়।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ইউক্রেনকে সমর্থন করতে আলোচনার জন্য তিনি এই সফর করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
পশ্চিমা অংশীদারদের কাছ থেকে যুদ্ধের জন্য সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চাপের মধ্যেই অঘোষিত সফরে কিয়েভে পৌঁছেন মার্কিন এই সামরিক কর্মকর্তা।
এক্স প্ল্যাটফর্মে অস্টিন বলেন, ‘তার চতুর্থ এই সফর এটাই প্রমাণ করে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও ইউক্রেনের পাশে রয়েছে।’
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের যুদ্ধে একটি ভয়াবহ রাশিয়ান অভিযান রুখে দিতে অসুবিধায় পড়েছেন কিয়েভ বাহিনী। এর ফলে ধীরে ধীরে বেশ কয়েকটি শহর, গ্রাম এবং গ্রাম ছেড়ে দিতে বাধ্য করছে ইউক্রেনের সেনাদেরকে।
জেলেনস্কি পশ্চিমা মিত্রদের প্রায় তিন বছরের যুদ্ধ শেষ করতে তার ঘোষিত 'বিজয় পরিকল্পনাকে' সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের বৃহত্তম সংঘাত। চলমান এই যুদ্ধে অনেক বেসামরিক নাগরিকসহ উভয় পক্ষের হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তার কৌশলের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ এবং রাশিয়ায় সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য পশ্চিমা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি। তবে কিয়েভের মিত্ররা এর আগে এই পদক্ষেপকে সমর্থন করতে অস্বীকার করেছে।
পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া ঢিলেঢালা হয়েছে এবং অস্টিন কিয়েভে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হয়েছিল।
গাজা থেকে শিগগিরই এক হাজার নারী ও শিশুকে চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনে ইউরোপে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ( ডব্লিউএইচও) ইউরোপ শাখার প্রধান হ্যান্স ক্লুজ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
সাক্ষাৎকারে হ্যান্স ক্লুজ বলেন, ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার অনেক নারী ও শিশু চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ইসরায়েল চিকিৎসা সেবার জন্য আগামী মাসের মধ্যে আরও এক হাজার নারী ও শিশুকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য ইউরোপে সরানোর সুযোগ দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার পাশাপাশি ইউরোপীয় দেশগুলো দ্বারা তাদেরকে সহায়তা করা হবে।
ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং সেখানে চিকিৎসাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন করছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের তদন্তকারীরা দেশটির বিরুদ্ধে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের’ অভিযোগ এনেছে।
ক্লুজ বলেন, ‘আমরা সংলাপ অব্যাহত না রাখলে এটি কখনই ঘটতো না। ইউক্রেনের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। এখন, দখলকৃত অঞ্চল (ইউক্রেনের) দনবাসে ১৫ হাজার এইচআইভি-এইডস রোগী এইচআইভি-এইডস ওষুধ পাচ্ছেন। আমরা সর্বদা সম্ভাব্য কঠোরতম ভাষায় এ ধরনের হামলার ঘটনায় নিন্দা অব্যাহত রাখব।’
৫৫ বছর বয়সী এই বেলজিয়ান ‘স্বাস্থ্যকে রাজনীতিকরণ না করার’ গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন।
ক্লুজ বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ হল শান্তি। স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে তাদের কাজ করার অনুমতি দিতে হবে।’
ক্লুজ তরুণদের স্বাস্থ্য এবং পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চান।
উল্লেখ্য, অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ডব্লিউএইচও প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন মে মাসে বলেছিলেন, প্রায় ১০ হাজার লোককে জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য গাজা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে সেখানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ডব্লিউএইচও ইউরোপ ইতোমধ্যেই গাজা থেকে চিকিৎসার জন্য ৬০০ জনকে সাতটি ইউরোপীয় দেশে সরিয়ে নিয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৩৩ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬০৩ জনে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
মেডিকেল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভোর থেকে গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ৩৩ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে। এরমধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে হামলায় নিহত হয় ১৮ জন।
এদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার (২০ অক্টোবর) অন্তত ১২টি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এসব হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়ো গেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
উল্লেখ, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪২ হাজার ৬০৩ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও ৯৯ হাজার ৭৯৫ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। বন্দি রয়েছে ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি নাগরিক।
চলমান যুদ্ধ থেকে পালাতে গিয়ে আন্দামান সাগরে নৌকাডুবিতে মিয়ানমারের ৭ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ৩০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার রাত ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে মিয়ানমার উপকূলে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, রোববার রাতে মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চল তানিনথারি এলাকার কিয়াউক কর দ্বীপের কাছাকাছি এলাকায় ৭০ থেকে ৭৫ জনকে বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ৩০ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অন্তত ৩০ জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
খবরে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহীদের চলমান যুদ্ধ থেকে বাঁচতে অনেকেই নৌকায় করে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় নৌকায় তাদের গৃহস্থালি সামগ্রীও ছিল। সেইসঙ্গে সাগরে অনেক ঢেউ ছিল বলেন স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
তবে ঠিক কী কারণে নৌকাটি ডুবে গেছে সে বিষয়ে কেউ কিছু জানাতে পারেননি এবং ঘটনার বর্ণনা দিলেও জান্তার হাতে আটকের ভয়ে কেউ তাদের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
উল্লেখ্য, কিয়াউক কর মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ৫শ ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।