টাইগারদের নির্বিষ বোলিংয়ের দিনে লঙ্কান ব্যাটিং ঝলক

ক্রিকেট, খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 12:54:26

এমন দিন ভুলে যেতেই চাইবেন টাইগাররা। মনে রাখার মতো কিছুই তো হলো না। পুরো একটি দিন কেটে গেল। খেলা হলো ৭৬ ওভার। কিন্তু কোনো উইকেটের দেখাই মিলল না। নির্বিষ বোলিংয়ে প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের পুরোটাই হয়ে রইল ম্লান।

প্রতিপক্ষের দিমুথ করুনারত্নেকে ফেরানোই গেল না। সুযোগটা এ ওপেনার ভালোই কাজে লাগিয়েছেন। হাঁকিয়েছেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ৪১৯ বলে ২৫ বাউন্ডারিতে ২৩৪* রানের হার না মানা ইনিংস খেলে এখনো উইকেটে টিকে আছেন। তার সঙ্গী ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২৭৮ বলে ২০ বাউন্ডারিতে ১৫৪* রানে দিন শেষে রয়ে গেলেন অপরাজিত। লাল বলের ক্যারিয়ারে এটি তার সপ্তম শতক। 

৫২৪ বলে দুজনের ৩২২ রানের অপরাজিত পার্টনারশিপ বাংলাদেশের বোলারদের হতাশা আর দুশ্চিন্তাটা কেবল বাড়িয়ে দিয়েছে। উইকেট নেওয়ার কোনো সুযোগই যে দেননি করুনারত্নে আর ধনাঞ্জয়া। সারা দিনে কেবল টাইগার বোলারদের নাস্তানাবুদ করেছেন। আগের দিন লাহিরু থিরিমান্নে যোগ করে যান ৫৮ রান।

করুনারত্নে-ধনাঞ্জয়ার ব্যাটিং ঝলকে শ্রীলঙ্কাও পৌঁছে গেল বাংলাদেশের স্কোরের হাত ছোঁয়া দূরে। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে স্বাগতিকদের দলীয় স্কোর দাঁড়িয়েছে ৩ উইকেটে ৫১২ রান। মাত্র ২৯ রানে পিছিয়ে এখন তারা। যেভাবে ব্যাটিং চালিয়েছেন তারা। আলোর স্বল্পতার কারণে খেলা আগেভাগে বন্ধ না হলে আজই টাইগারদের টপকে লিড নিয়ে ফেলতে লঙ্কানরা। তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

খেলা যে পর্যায়ে আছে তাতে করে জয়ের দেখা পাওয়াটা যে কোনো দলের জন্যই বেশ মুশকিল। ড্রয়ের শঙ্কাই এখন কেবল উঁকি দিয়ে যাচ্ছে ক্যান্ডির পাল্লেকেলের আকাশে। কেননা চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হলেও শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসই শেষ হয়নি। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কাকে আরও দুটি ইনিংস খেলতে হবে। তার পরই বোঝা যাবে জয়-পরাজয়ের হিসাব।

পুরো একটা দিন কেটে গেলেও একটি উইকেটও পায়নি বাংলাদেশ। টেস্টে চতুর্থবার এমন ঘটনার সাক্ষী হলো টাইগাররা। সর্বশেষ হয়েছিল ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে।

করুনারত্নে-ধনাঞ্জয়ার ৫২৪ বলে ৩২২ রান চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ জুটি। আগের রেকর্ড পার্টনারশিপটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার জেসন গিলেস্পি ও মাইক হাসির। ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে দুজনে করে ছিলেন ৩২০ রান।

টাইগারদের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জন্য যে কোনো উইকেটে এটি রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল তৃতীয় উইকেটে। ২০০৭ সালে ক্যান্ডির অ্যাসগিরিয়ায় মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা গড়ে ছিলেন ৩১১ রানের জুটি।

তার আগে ৩ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। করুনারত্নে ৮৫ ও ধনাঞ্জয়া ২৬ রানে তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত থেকে যান। তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ উইকেট তিনটি নিয়েছিলেন তৃতীয় দিনে।

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই ৭ উইকেটে ৫৪১ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ওপেনার তামিম ইকবাল (৯০) দশ রানের জন্য শতক মিস করলেও সেঞ্চুরি হাঁকান নাজমুল হোসেন শান্ত (১৬৩) ও ক্যাপ্টেন মুমিনুল হক (১২৭)। মুশফিকুর রহিম (৬৮*) ও লিটন দাস (৫০) অর্ধ-শতকের দেখা পান তৃতীয় দিন এসে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫৪১/৭ ডি., ১৭৩ ওভার (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০, মুশফিক ৬৮* ও লিটন ৫০; বিশ্ব ফার্নান্ডো ৪/৯৬, ধনাঞ্জয়া ১/১৩০, লাকমল ১/৮১ ও লাহিরু ১/৮৮)।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ৫১২/৩, ১৪৯ ওভার (করুনারত্নে ২৩৪* ব্যাটিং, ধনাঞ্জয়া ১৫৪* ব্যাটিং, লাহিরু ৫৮, ম্যাথুস ২৫, ওশাদা ২০; তাসকিন ১/৯১, তাইজুল ১/১৩৬ ও মিরাজ ১/১২৩)।

#চতুর্থ দিন শেষে

এ সম্পর্কিত আরও খবর