লেবাননে কামানের আওয়াজে ইফতার শুরু

রামাদ্বান কারীম, ইসলাম

নুসরাত জাবীন বিভা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 04:50:02

রোজা পালনের মূল বিষয়গুলো সারা বিশ্বে এক হলেও রমজানকে কেন্দ্র করে একেক দেশের মানুষ মাসটি স্বাগত জানান ও উদযাপন করেন ভিন্নভাবে। রমজান মাস উদযাপনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশের রয়েছে নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও রীতিনীতি।

এগুলো বছরের পর বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। তবে এবছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেসব রীতি উদযাপনে কিছু বিধি নিষেধ আরোপিত হয়েছে। ফলে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের রমজান পালনের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।

কিন্তু পালন করতে না পারলেও জানার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই চলুন জেনে নিই রমজান মাস উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রথা।

ধারাবাহিক এই আয়োজনে আজ থাকছে লেবাননের কথা।

লেবাননে কামানের শব্দে ইফতার শুরু হয়। মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই এক প্রথা চালু আছে। রমজান মাসজুড়ে ইফতারের সংকেত হিসেবে কামান দাগানো হয়। প্রায় ২০০ বছর আগে মিসরে এই প্রথা শুরু হয় যা মিদফা আল ইফতার নামে পরিচিত।

লেবাননে কামানের আওয়াজে ইফতার শুরু হয়, ছবি: সংগৃহীত

সেসময় অটোম্যান শাসক খোশ কাদাম ছিলেন শাসনকর্তা। সূর্যাস্তের সময় নতুন একটি কামান পরীক্ষা করার সময় কাদাম ভুল করে এটি দাগিয়ে ফেলেন। কামানের শব্দে পুরো কায়রো প্রকম্পিত হয়ে ওঠে এবং অনেকেই ভাবেন এটি নিশ্চয়ই রোজা ভাঙার সময় জানানোর নতুন সংকেত। এই নতুন পন্থা উদ্ভাবনের জন্য অনেকেই তাকে এবং তার মেয়ে হাজা ফাতমাকে ধন্যবাদ জানায় এবং একে প্রথা হিসেবে চালু করা জন্য অনুরোধ করেন।

পরে এই চল লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরও অনেক দেশে শুরু হয়। তবে ১৯৮৩ সালে এক আক্রমণের পর অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত কামান বাজেয়াপ্ত করা শুরু হলে এই প্রথা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। কিন্তু লেবাননের সেনাবাহিনী এটি পুনর্জীবিত করে এবং এখনও চালু রয়েছে।

২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী লেবাননের মোট জনসংখ্যা ৪,০১৭,০৯৫ জন। স্থায়ী নাগরিক ছাড়াও ৪ লাখের মতো উদ্বাস্তু রয়েছে, তন্মধ্যে ফিলিস্তিন থেকে আসা উদ্বাস্তুর সংখ্যা সর্বাধিক ২,৭০,০০০ জন।

১৮টি ধর্মীয় গোষ্ঠী লেবাননে বিরাজমান। প্রত্যেকে স্বকীয়তার সঙ্গে নিজ ধর্মের রীতিনীতি ও উৎসব পালন করেন। এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের লোকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ায় না। ধর্মীয় সমঝোতা আর পারস্পরিক সম্প্রীতি বেশ জোরদার দেশটিতে। পৃথিবীর অন্যকোনো দেশে এমন নজির নেই।

লেবানন সরকারের সর্বোচ্চ পদগুলো ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতাদের জন্য আনুপাতিক হারে নির্ধারিত। ধর্ম ও গোষ্ঠীগতভাবে বিভক্ত হয়েও ধর্মীয় সম্প্রীতি টিকিয়ে রাখতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর