২০২৫ সালে হজে যেতে নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। এদিন অফিস সময়ের পরও হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকগুলোর শাখা খোলা থাকবে। যেন শেষ সময়ে কোনো হাজি নিবন্ধন নিয়ে জটিলতায় না পড়েন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মিলে নিবন্ধন করেছেন ৭৬ হাজার ৯৪২ জন হজযাত্রী। কোটা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত কোটা খালি আছে ৫০ হাজার ২৫৬টি।
মাত্র এক দিন সময় বাকি থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না হজ নিবন্ধনে। শেষ দিনে আরও কিছু হাজি নিবন্ধন করতে পারেন। কিন্তু এ সংখ্যা খুব উল্লেখ করার মতো নয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার। এমতাবস্থায় হজ এজেন্সির মালিকরা আরেক দফা সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। যদিও আর সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের শেষ সময় দেওয়া হয়েছে। সৌদি সরকার আমাদের কাছে বারবার জানতে চাচ্ছে আমরা কত সংখ্যক হাজি পাঠাবো। কিন্তু শেষ না হওয়ায় আমরা জানাতে পারছি না। এজন্য ২৬ ডিসেম্বরের পর আর সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। নিবন্ধন শেষ হলে আমরা প্রকৃত সংখ্যাটি সৌদিকে জানাতে পারবো। আর এ সংখ্যা অনুসারে বাড়ি ভাড়া, মিনায় তাঁবু নির্ধারণ ইত্যাদি কাজ শেষ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে এসব কাজের জন্য সৌদিতে এক কোটি টাকার বেশি পাঠিয়েছি।
ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। আমরা বেসরকারি এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে হাজিদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি, আগামী হজ অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পারবো আমরা।
এদিকে বৃহস্পতিবার নিবন্ধনের শেষ দিন হওয়ায় পবিত্র হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ব্যাংকগুলোর সব শাখাসমূহে ২৬ ডিসেম্বর অফিস সময়ের পরেও খোলা রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২০২৫ সনের হজের নিবন্ধন কার্যক্রম ২৬ ডিসেম্বর শেষ হবে। হজযাত্রীদের নিবন্ধনের অর্থ জমাদানের স্বার্থে ওইদিন সারাদেশে হজের অর্থ গ্রহণকারী সব ব্যাংকের শাখাসমূহ অফিস সময়ের পরেও খোলা রাখা প্রয়োজন।
বর্ণিতাবস্থায়, ১৫ ডিসেম্বর সারাদেশে হজের অর্থ গ্রহণকারী ব্যাংকের শাখাসমূহ অফিস সময়ের পরেও যতক্ষণ অর্থ জমাদানকারী থাকেন ততক্ষণ পর্যন্ত হজের নিবন্ধনের অর্থ গ্রহণের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের হজের জন্য গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় প্রাথমিক নিবন্ধন। নিবন্ধনের শেষ সময় ছিল ৩০ নভেম্বর। কিন্তু কাঙ্খিত সাড়া না মেলায় এক দফা সময় বাড়ানো হলো। এর পর আরও দুই দফা সময় বাড়ানো হয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার বাংলাদেশ থেকে একলাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ১৯৮ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি একলাখ ১৭ হাজার হজযাত্রী যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে।
২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের বিপরীতে হজে গিয়েছিলেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন। ৪১ হাজার ৯৪১ জনের কোটা ফাঁকা ছিল।