ভারতের গুজরাটে দাঙ্গার সময় ধর্ষণের শিকার বিলকিস বানুর মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আত্মসমর্পণ করেছেন। আত্মসমর্পণের জন্য বাড়তি সময় চেয়েছিলেন অপরাধীরা। সু্প্রিম কোর্টে ওই আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।
ধর্ষকদের দুদিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। অবশেষে রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে আত্মসমর্পণ করেন ১১ জনই। গুজরাতের পঞ্চমহল জেলায় গোধরা সাব-জেলে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তারা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ দুটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে গোধরা জেলের সামনে উপস্থিত হন বিলকিস বানু মামলার ১১ অপরাধী। রবিবারই শেষ হয়েছে তাদের আত্মসমর্পণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা।
বিলকিস বানু ধর্ষণ মামলায় ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার। গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট জানায়, গুজরাট সরকারের ওই সিদ্ধান্ত এখতিয়ার-বহির্ভূত।
বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ ছিল, জালিয়াতি করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কারণ, ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ারই ছিল না গুজরাট সরকারের।
একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় যে, খুন এবং ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকেই দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলে ফিরে যেতে হবে। আত্মসমর্পণ করতে হবে তাদের।
এরপরেই অপরাধীদের কয়েক জন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে জানান, আত্মসমর্পণ করার জন্য তাদের আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক। কেউ জানান, তিনি অসুস্থ। কেউ আবার ছেলের বিয়ের কারণ দেখান। একজন শীতে ফসল কাটতে যাবেন বলেও জানিয়েছিলেন আদালতে।
অপরাধীদের আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, কোনও বাড়তি সময় দেওয়া হবে না তাদের। নির্ধারিত দিনেই তাদের জেলে ফিরতে হবে।
২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে খুন এবং গণধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে জেলে ‘ভাল আচরণ’ করার যুক্তি দিয়ে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ওই অপরাধীরা।
বিজেপি শাসিত গুজরাট সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করে। এর পরই ১১ জনকে ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্রও মিলেছিল। পরে শীর্ষ আদালত জানায়, মুক্তির সিদ্ধান্ত গুজরাট সরকার নিতে পারে না। তাই মুক্তি বাতিল হয়।