ময়মনসিংহে জেলা তাঁতি লীগের আহ্বায়ক মো. তাইজুল ইসলাম জুয়েলকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নগরীর মাসকান্দা পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। তাইজুল ইসলাম সদর উপজেলার চরপাড়া এলাকার মো. সেকান্দর আলীর ছেলে।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে তাইজুল ইসলাম জুয়েল নগরীর মাসকান্দা এলাকার পাসপোর্ট অফিসের সামনে অবস্থান করছেন। এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, কোন মামলায় তাইজুল ইসলাম জুয়েলকে আদালতে পাঠানো হবে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি এখনো পুলিশ হেফাজতে আছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। শত শত নারীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। শেখ হাসিনার মাথা পালিয়ে গেলেও বডি রয়েছে এই দেশে। তার সেই সব সাঙ্গপাঙ্গরা দেশে এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের চৌরাস্তা পুরান বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় কৃষকদলের আয়োজনে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেন, আমাদের দলে একটা বেইমান ছিলেন। যার নাম শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। এই লোভী উচ্ছিষ্টভোগী নেতা বিএনপির সাথে বেইমানি করে রাতের আঁধারে কিং পার্টি খুলে শেখ হাসিনার সাথে হাত মিলিয়ে ২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেন। ফরিদপুর-১ আসনে তিনি বিএনপি নেতা কর্মীদের ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই বেইমান নেতার ফাঁদে কোন বিএনপি নেতাকর্মী পা দিবেন না।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে এমপি নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা বিচার করেছে সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে। ওই একই ট্রাইব্যুনালে এখন সত্য-সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করা হবে। যা পৃথিবীর সবাই জানবে। আশা করি, শেখ হাসিনার ফাঁসি হবে। কারণ দেশের শিশুরাও এই খুনি হাসিনার ফাঁসি চায়।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক এফএম কাইয়ুম জঙ্গি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, আতাউর খান, মো. ইকরাম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় সাহা প্রমুখ।
এছাড় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের ৮৬ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ওই মামলায় গ্রেফতার চার নেতাকর্মীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রাতে হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাশার সবুজ (৫৫), উপজেলার ছয়আনী গালা গ্রামের হারুন অর রশিদ (৫৮), কালই গ্রামের নিত্য সরকার (৪৫) ও মতিয়ার রহমান মতি (৬৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুনার রশীদ খান মুন্নুর কন্যা জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বয়ড়া গ্রামের বাস ভবনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাকর্মীদের আলোচনা সভায় বক্তব্য চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হামলা চালায়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ করা হয়।
দেশিয় অস্ত্র, লোহার লড, বাটাম, হকিস্টিক, চাপাতি ও লাঠি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাসহ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়। মামলায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনের জড়িত থাকার বিষয়েও উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মুমিন খান জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বয়ড়া গ্রামের বাস ভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বুধবার ভোরে নিজ নিজ বাড়ি থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি মুমিন খান।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের দরপত্র (টেন্ডার) জমাদানে বাধা দেয়ার অভিযোগে পৌর যুবদল আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সেনা সদস্যরা।
আটক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস লালমনিরহাট পৌরসভা গেট এলাকার বাসিন্দা। তিনি লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আড়াইশত শয্যা বিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সামগ্রী সরবরাহসহ ৩টি গ্রুপে সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের নিদিষ্ট বক্সে দরপত্র জমা দিতে বলা হয়।
হাসপাতালের দরপত্র জমাদানে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দরপত্রবক্স তথা হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। সেই পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকাল থেকে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাঁধা দিয়ে আসছিলেন লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস। এসময় দরপত্র গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকেও লাঞ্ছিত করেন তিনি।
অন্য দরদাতারা দরপত্র জমাদান করতে না পেয়ে সেনা সদস্যদের খবর দেন। খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা এসে ধাওয়া দিয়ে যুবদল নেতা জুলহাসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হলে ২৪ জন দরদাতা তাদের দরপত্র জমা দেন।
লালমনিরহাট জেলা যুবদলের সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, পৌর যুবদল আহ্বায়ক জুলহাস দৌড়ে পালানোর কারণে তাকে আটক করেছে। এটি মূলত আপোষযোগ্য বিষয়। পত্রিকায় না লেখাই ভালো।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সামিরা হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছিল জুলহাস নামে একজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়ে তাদের ফোন করা হলে তারা এসে বিশৃঙ্খলাকারীকে আটক করেছে।
এব্যাপরে জানতে লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদেরকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, দরপত্র দাখিল নিয়ে হট্টগোল করার চেষ্টা করলে জুলহাস নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।