কিশোরগঞ্জের মাঠে সরব বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা
কিশোরগঞ্জ: নির্বাচন নিয়ে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার আগেই ভোটের মাঠে নেমে গেছেন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। একাধিক প্রার্থীর সরব উপস্থিতিতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে স্থানীয় বিএনপি'র রাজনীতি।
জেলার ছয়টি আসনে কমপক্ষে পাঁচজন করে তিরিশ জন প্রার্থী জোরেশোরে প্রচারণা শুরু করায় স্থানীয় রাজনীতি নতুন মাত্রা পেয়েছে কিশোরগঞ্জে।
'কেন্দ্রের দ্বিধায় আক্রান্ত হয় বসে থাকলে তৃণমূলে রাজনীতি করা যাবে না', বলেন কিশোরগঞ্জ বিএনপির সরব কর্মী ফারুক আব্দুস সোবহান। তিনি বলেন, 'গ্রাম-গঞ্জের মানুষ নির্বাচনমুখী। বিভিন্ন দল মাঠে নেমে গেছে। বিএনপি বসে থাকলে রাজনীতির মাঠ হারাবে।'
কিশোরগঞ্জ দৃশ্যত আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হলেও বিএনপির রাজনীতি এখানে বেশ শক্তিশালী। বিগত নির্বাচনগুলোতে কিশোরগঞ্জের সব কটি আসনেই আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। তবে জনসমর্থন থাকলেও সাংগঠনিকভাবে বিএনপি বেশ দুর্বল। মূল ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং প্রায়ই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪ কমকে এ বিষয়ে ভিন্নমতের সুরে বলেন, 'নির্বাচনকে সামনে রেখে বহু প্রার্থীর অতি উৎসাহ বিপজ্জনক। কালকে দলে এসেছে বা দুর্দিনে পালিয়ে ছিল, এমন বহুজনই মাঠে নেমে গ্রুপিং এর ক্ষেত্র প্রস্তুত করছেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ব্যক্তিগত প্রচারণায় মাঠ গরম হলেও বিএনপির রাজনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।'
'অতীতেও অধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর কারণে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ায় বিজয়ের মতো আসনও বিএনপিকে হারাতে হয়েছে' বলে দাবি করেন ছাত্রদল থেকে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া এক নেতা।
পেছনের কারণ যাই হোক, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাহারি পোস্টার ও ফেস্টুনে জেলা ও উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক ও এলাকা ছেয়ে গেছে। নিজস্ব অফিস নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অলিখিত নির্বাচনী অফিসও চালু করেছেন কেউ কেউ।
তবে এ ব্যাপারে কয়েকজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাংবাদিক বলেছেন অন্য কথা। তারা বলেন, 'খালেদা জিয়ার মুক্তি বা দলের মতাদর্শ প্রচারের চেয়েও ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলের মতলবেই এসব করা হচ্ছে। আগামীতে মনোনয়ন পাওয়া বা বিশেষ কোনও প্রার্থী বা দলের হয়ে প্রক্সি দেওয়াই অধিক সংখ্যক প্রার্থীর উপস্থিতির কারণ। বার বার নির্বাচন এলেই এরা মাঠে নামে। বার বার পরাজিত হলেও এদের বোধোদয় হয় না। কারণ রাজনীতি তাদের কাছে এক ধরনের বিনিয়োগ। কিশোরগঞ্জ বিএনপি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। ব্যক্তিস্বার্থ লোভী অতিউৎসাহী বিনিয়োগকারীদের কব্জায় বন্দি হয়ে গেছে।'