লোকসভা নির্বাচন

ভারতীয় নেতাদের বক্তব্যে ‘স্ট্রিট ফাইট’ শুরু হয়েছে

  • খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ভারত থেকে: ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে দেশটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্যে কার্যত ‘স্ট্রিট ফাইট’ শুরু হয়েছে। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। বিরোধী রাজনীতিকদের অনেকে গণতন্ত্র ও সম্ভ্রমের ভাষা ত্যাগ করে একজন আরেকজনকে আক্রমণ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘কংগ্রেসের অবস্থা এখন ডুবন্ত টাইটানিকের মতো। যতই নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে ততই কংগ্রেসের জাহাজ ডুবে যাচ্ছে। কংগ্রেসের সঙ্গে যারা এ জাহাজে সওয়ার হয়েছেন তারাও এখন নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পালাচ্ছেন।’

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ এপ্রিল) মহারাষ্ট্রের নানদেদ-এ এক জনসভায়  নরেন্দ্র মোদি এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘ভারতকে যারা বিভক্ত করতে চায় কংগ্রেস তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। কংগ্রেসের এখনো মাত্র ৪৪টি আসন থাকলেও তা আরও কমতে চলেছে।’

‘আমেথিতে রাহুলের জেতা অনিশ্চিত বলে কেরালার ওয়েনাদে দৌড়াতে হয়েছে। কারণ সেখানে ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠরা ( হিন্দু) সংখ্যালঘু। তাই কংগ্রেসকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে এমন সিট খুঁজতে হবে, যেখানে রাহুল জিততে পারে। কেরালায় কেন, ভবিষ্যতে আমেথিতে কংগ্রেসের একটি পতাকা দেখতে পাওয়া যাবে না।

মোদির এ বক্তব্যে বিরুদ্ধে ভারতের নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশন এ অভিযোগকে আমলে নিয়ে মোদির এ বক্তব্যের কপি চেয়েছে তাদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/07/1554577235936.gif

কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে এক জনসভায় বলেছেন, ‘হিন্দু ধর্মের মূল শিক্ষাগুলো মোদি কখনই মেনে চলেন না। হিন্দু ধর্মে গুরুকে যে সম্মান দেওয়া হয়, মোদি সেই পরম্পরাকেও ভেঙেছেন। আপনারা জানেন, তার রাজনৈতিক গুরু এলকে আদভানিকে মোদি অপমান করেছেন। গুরুকে প্রণাম জানানো তো দূরে থাক, মঞ্চ থেকে ছুড়ে নিচে ফেলে দিয়েছেন। আদভানি জীকে জুতা মেরে মঞ্চ থেকে নামিয়েছেন।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ  রাহুলের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেছেন,  ‘আদভানিজী আমাদের পিতৃতুল্য। আপনার কথায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। দয়া করে আপনার বক্তব্যের শালীনতা বজায় রাখুন।’

অন্যদিকে কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘গরিব, কৃষক, মজদুরের ঘরে কোনো চৌকিদার দেখেছেন? এ পাঁচ বছর ধরে মোদি আম্বানির মতো শিল্পপতি-বড় লোকদের চৌকিদারি করেছেন।

ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) শারদ পাওয়ার বলেছেন, ‘মোদি প্রচারে যেখানেই যান, ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন।’

এদিকে ইন্ডিয়া টুডে পলিটিক্যাল স্টক এক্সচেঞ্জে করা সমীক্ষায় মোদির জনপ্রিয়তা গত অক্টোবরে ৪৬ শতাংশ থাকলেও চলতি বছর মার্চে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ শতাংশ ও এপ্রিলে ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩৫ শতাংশ ভোটার রাহুল-কে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইছেন।

ভারতের সাধারণ নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট হবে আগামী ১১ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোট ১৮ এপ্রিল, তৃতীয় দফার ভোট ২৩ এপ্রিল, চতুর্থ দফার ভোট ২৯ এপ্রিল, পঞ্চম দফার ভোট ৬ মে, ষষ্ঠ দফার ভোট ১২ মে ও সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ হবে ১৯ মে। সাত দফায় ভোটগ্রহণের পর ভোটগণনা হবে ২৩ মে।