ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে চীনা ভাষায় প্রচারণা করতে দেখা যাচ্ছে। প্রথমবারের মতো পশ্চিমা বাংলা তথা ভারতে নির্বাচনী প্রচারণায় চীনা ভাষা মান্দারিন হরফে দেয়াল লিখন করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কলকাতার চায়না টাউনে সরজমিনে গিয়ে চীনা ভাষায় লিখন দেখতে পাওয়া যায়। এই এলাকায় অন্তত দুই হাজার চীনাভাষী ভারতীয় ভোটার রয়েছেন।
এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মালা রায়ের পক্ষে মমতা ব্যানার্জি ছবিসহ দেয়াল লিখন করেছেন। এসব লিখনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যাঙ্গ করা হয়েছে।
১৮ শতক থেকে এখানে চীনাভাষীরা বসবাস করে আসছেন। তারা জানান, তাদের ভাষায় এই প্রথমবার রাজনৈতিক প্রচার করা হলো ভারতে।
নির্বাচন কমিশন ভারতের এ নির্বাচনে আচরণবিধি খুবই কড়াকড়িভাবে পালন করছে। কারো অনুমতি ছাড়া ব্যাক্তিগত আবাসনের দেয়াল লিখন করা যাবে না।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের প্রচারে বাধা দেওয়ার সাহস করতে চাইছে না কেউ।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রচলিত ভাষায় দেয়াল লিখন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাদের।
ভারতের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দফার ভোট হবে আগামী ১১ এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোট ১৮ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ২৩ এপ্রিল, চতুর্থ দফায় ২৯ এপ্রিল, পঞ্চম দফার ভোট ৬ মে, ষষ্ঠ দফার ভোট ১২ মে এবং সপ্তম দফার ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৯ মে।
সাত দফায় ভোটগ্রহণের পর ভোটগণনা হবে আগামী ২৩ মে।
চলতি বছরে ভোটদাতার সংখ্যা গত বারের তুলনায় ৬ কোটি ৬০ লাখ বেশি। ২০১৯ সালে নথিভুক্ত মোট ভোটদাতা ৯০ কোটি। ২০১৪ সালে যা ছিল ৮৩ কোটি ৪০ লাখ। চলতি বছরের মোট ভোটদাতা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন গুণ। ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের সব মানুষের চেয়ে বেশি। ১৯৫১ সালে প্রথম ভোটের সময় ১৭ কোটি ৩০ লাখ নথিভুক্ত ভোটার ছিলেন ভারতে।
এবার ১৮-১৯ বছর বয়সী ভোটদাতার সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। নতুন ভোটদাতাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে রাজস্থান। এ রাজ্যে প্রায় ২০ লাখ ৩০ হাজার নতুন ভোটার চলতি বছরে নথিভুক্ত হয়েছেন।
ভারতের মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার সুনীল অরোরা জানান, এ বছর লোকসভা নির্বাচনে সমস্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) থাকবে প্রার্থীদের ছবি। ভারতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় দশ লাখ। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনে মোট ৭ দফায় ভোটগ্রহণ হবে।
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফায় ১১ এপ্রিল, দুইটি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এই দু’টি কেন্দ্র হলো- কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার।
এরপর ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ এবং দার্জিলিং, এই তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে।
মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, বালুরঘাট, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ, এই কেন্দ্রগুলোতে ভোট তৃতীয় দফায়। এই দফায় ভোটগ্রহণ ২৩ এপ্রিল, মোট পাঁচটি আসনে।
২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় মূলত নদিয়া-মুর্শিদাবাদ দুই বর্ধমান এবং বীরভূম মিলিয়ে মোট আটটি আসনে ভোট নেওয়া হবে। এগুলো হলো- বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব, বীরভূম, বোলপুর এবং বর্ধমান-দুর্গাপুর এবং আসানসোল কেন্দ্রে।
পঞ্চম দফায় ভোট ৬ মে। এই দফায় বনগাঁ, বারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, আরামবাগ এবং হুগলি, এই সাতটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে।
১২ মে ষষ্ঠ দফায় আটটি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। কেন্দ্রগুলো হলো- তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর।
সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচন ১৯ মে। এই দফায় নির্বাচন হবে দমদম, বারাসত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ এবং ডায়মন্ডহারবার, এই নয়টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ।