বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নেই আরও ৮ হাজার কোটি টাকা

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বেশির ভাগ দিন দরপতনের মধ্য দিয়ে নতুন আরও এক সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে (১৪ জুলাই থেকে ১৮ জুলাই) তিন দিন সূচকের উত্থান আর দু’দিন পতন হয়েছে।

ফলে দুই পুঁজিবাজারেই সূচক লেনদেন ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। আর তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধনও কমেছে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

এর মধ্যে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে চার হাজার ৩২৭ কোটি ৪৩ লাখ আট হাজার ৫৩১ টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছে তিন হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

এর আগের সপ্তাহের টানা পাঁচ দিন সূচক পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছিল। সেই সময় বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমেছিল সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজার ভালো হবে, বিনিয়োগকারীদের এ প্রত্যাশার ছিটেফোঁটাও পূরণ হচ্ছে না। বরং ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট পাসের পর থেকে আবার নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার পরিবর্তে কোম্পানিগুলো আগামীতে ‘নো ডিভিডেন্ট’ ঘোষণা করবে—এমন গুজব ও ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের দূরাবস্থার খবরে হতাশা বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে।

পাশাপাশি সুশাসনের অভাবে বাজারে পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে বলেও অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের। এছাড়াও গ্রামীণফোনের দেনা-পাওনা নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং পিপলস লিজিং কোম্পানির অবসায়ন ঘোষণায় নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ও তারল্য সঙ্কট তৈরি হয়েছে। পুঁজি ফিরে পাওয়ার পরিবর্তে নতুন করে পৌনে ২৭ লাখ বিনিয়োগকারীদের প্রায় আট হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ফলে নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। নতুন করে সৃষ্ট দরপতনের ফলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের হাহাকার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তারা দরপতনের প্রতিবাদে সপ্তাহ জুড়ে মতিঝিলের রাস্তায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ১৫ দফার একটি স্মারকলিপিও দিয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের চেয়ে ৯১ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ১৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ২৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮২৯ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক কমে ১৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, কমেছে ২৭৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ২৮১টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি বিদায়ী সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন ৪৬৭ কোটি টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৩৬ কোটি ৭৭ লাখ ২৮ হাজার ৭৯৬ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ১১২ কোটি ৮৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮ টাকা।

সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ২৩৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে সিএসইর প্রধান সূচক ২৪৮ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ৭২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর তাতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৮৯ কোটি ৪৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫২ টাকা।