বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য থাকছে প্রণোদনা

  • মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শেয়ার বাজার, ছবি: বার্তা২৪

শেয়ার বাজার, ছবি: বার্তা২৪

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য আসছে বাজেটে (২০১৯-২০ অর্থবছরে) থাকছে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারির পর থেকে চলা দরপতনে অস্থিতিশীল পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অর্থমন্ত্রনালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ এ প্রণোদনায় থাকছে, করপোরেট কর হার কমানোর উদ্যোগ, দ্বৈত কর প্রথা বাতিল এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) আরও শক্তিশালী করা। অর্থাৎ আরও ৫ হাজার কোটি টাকা ফান্ডের যোগান দেওয়া হবে।অর্থমন্ত্রী এই প্রস্তাবগুলো বাজেটে রাখতে সায় দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি গত সোমবার পুঁজিবাজার সহায়ক কিছু কর প্রণোদনার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি)। অন্যদিকে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বাজেটে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কোনো কিছু করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টদের।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা রাখা হবে। পাশাপাশি ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুটি বড় ধস হয়েছে। সেই ধসের মতোই কয়দিন পরপর বাজারে দরপতন হচ্ছে। এই দরপতনের পেছনে নিশ্চয় কেউ না কেউ আছেন। এদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। আইনের আওতায় নেওয়া হবে তাদের।’

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘করপোরেট কর কমানো হতে পারে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় তার জন্য কর ছাড় দেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘কখনো কখনো দেখা যেতো বাজেট ঘোষণার পর শেয়ারবাজার চাঙা হতো আবার কখনো নিম্নমুখী হয়েছে। কিন্তু এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য উল্টো হয় এমন কিছুই করব না।’

বর্তমান পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট দূর করতে বন্ড লেনদেনের কর অব্যাহতির পাশাপাশি স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কর অবকাশ সুবিধাসহ বাজেটে একগুচ্ছ প্রণোদনা চেয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি এনবিআরকে এই প্রস্তাবগুলো দিয়েছে ডিএসই, সিএসই এবং বাংলাদেশ মাচেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন।

বাকি প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর ব্যবধান ২০ শতাংশ, করমুক্ত লভ্যাংশ সীমা বৃদ্ধি, দ্বৈত করনীতি প্রত্যাহার, ট্রেজারি বিল ও বন্ড লেনদেনে কর অব্যাহতি এবং স্মলক্যাপ বোর্ডে তালিকাভুক্ত স্বল্পমূলধনী কোম্পানির কর অবকাশ সুবিধা ইত্যাদি।

ডিএসইর এমডি কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ‘পুঁজিবাজারকে গতিশীল, উন্নয়ন ও বিশ্বমানের করতে প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। অর্থনীতির সঙ্গে একটি সত্যিকারের পুঁজিবাজার গড়তে এসব প্রণোদনা প্রয়োজন। কর ছাড় দিলে দৈনিক লেনদেন বাড়বে,কর্পোরেট কর ব্যবধান বাড়লে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত হবে। এতে বাজার গতিশীল হলে সরকারের রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে।’

সিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘বর্তমানে দেশে লক্ষাধিক কোম্পানি নিবন্ধিত হলেও মধ্যম ও বৃহদায়তনের কমপক্ষে কয়েক হাজার কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ আছে। অথচ শুধুমাত্র কয়েকশ কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে যা একান্ত নগণ্য। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করতে বেসরকারি পুঁজি সঞ্চালনের প্রয়োজন