বেতনের ইএফটি ছাড়া গৃহঋণ পাবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা

  • আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইএফটি ছাড়া গৃহঋণ পাবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা 

ইএফটি ছাড়া গৃহঋণ পাবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা 

বেতন ব্যবস্থা ম্যানুয়াল থেকে ইলেক্ট্রনিক ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে পরিবর্তন না করলে গৃহঋণ নিতে পারবেন না সরকারি চাকরিজীবীরা। যদিও ঋণের আবেদনপত্রে এ বিষয়ে সুর্নিদিষ্ট কোনো শর্ত দেওয়া নেই। তবে সবাইকে ইএফটি’র আওতা আনতে পরোক্ষভাবে এমন শর্ত দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ইএফটি’র আওতায় আনতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনলাইনে বেতন বিল দাখিল বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কেবিনেট ডিভিশন, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় (জন বিভাগ ও আপন বিভাগ), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটি’র মাধ্যমে বেতন পান। কিন্ত বাকি ৩৯টি মন্ত্রণালয় এখনও ইএফটি আওতায় আসে নি।

এছাড়া চারটি বিভাগীয় শহরসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সব চাকরিজীবীরা বর্তমানে ইএফটি’র মাধ্যমে বেতন পান। বিশ্বব্যাংকের এক প্রকল্পের আওতায় গত তিন বছরে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়।

জানা গেছে, যারা ইএফটি’র আওতায় এসেছেন তারা রিহ্যাবের সদস্য আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে রেডি ফ্ল্যান্ট কিনতে পারবেন। তবে ঋণ পেতে ফ্ল্যাট কেনার প্রস্তাবটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের বোর্ডের অনুমোদন লাগবে। গত সপ্তাহ থেকে এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গৃহঋণের আবেদনপত্র পাওয়া যাচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব সরকারি চাকরিজীবীদের ইএফটি’র আওতায় আনতে কয়েক বছর সময় লাগবে। কারণ বিষয়টি বোঝাতেই কয়েক মাস সময় প্রয়োজন। বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে না পারলে কেউ ঋণ নিতে আগ্রহী হবেন না। আর বেতন অটোমেশন ছাড়া এ ঋণ পাওয়াও যাবে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধতন কর্মকর্তা জানান, তারা সরকারি চাকরিজীবীদের ইএফটি’র আওতায় আনতে চান কিন্তু মন্ত্রণালয়গুলো এগিয়ে আসছে না। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে অন্তত ১৫ বার বলার পর তারা ইএফটি চালু করেছে। এখন যেহেতু সরকারি চাকরিজীবীদর গৃহ ঋণ দেওয়া হবে তাই এই সুযোগে সবাইকে ইএফটি’র আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করা যায়, প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় এখন নিজ আগ্রহে এ ব্যবস্থার আওতায় আসবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার চলতি অর্থ বছরে গৃহঋণের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় ধারণা করছে, চলতি অর্থ বছরে চাকরিজীবীরা এই পরিমাণ অর্থ ঋণ নেবেন না।

প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে সরকারি ও আধা সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। তাদের মধ্যে আপাতত ১২ লাখ গৃহ ঋণ সুবিধা পাবেন। গত ৩০ জুলাই গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে অর্থ বিভাগ। নীতিমালা অনুযায়ী, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে এবং সর্বোচ্চ ৫৬ বছর বয়স পর্যন্ত গৃহ ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে। বেতন স্কেলের গ্রেড ভেদে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ এবং সর্বনিম্ন ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যাবে। ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছরে ওই ঋণ পরিশোধ করতে হবে।