আমদানিতে শীর্ষে সিমেন্ট ক্লিংকার ও রপ্তানিতে গার্মেন্টস পণ্য

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত


অবকাঠামোগত উন্নয়ন বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকার বেশি আসছে

গার্মেন্টস ছাড়া রপ্তানিতে অন্য পণ্যের নেই গতি


চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানীতে শীর্ষে সিমেন্ট ক্লিংকার রপ্তানিতে যথারীতি পোশাক শিল্প। চলতি অর্থ বছরে ২ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ১৬৩ মেট্রিকটন সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি ও ৩৪ লাখ ২২ হাজার ৫৭১ মেট্রিকটন গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থ বছরে সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ১৮১ মেট্রিক টন এবং গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৯ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৪ মেট্রিক টন।

গত কয়েক বছর ধরে আমদনি রপ্তানিতে এই দুই পণ্যের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বেড়ে যাওয়া এবং রপ্তানিতে পোশাক খাত ছাড়া অন্যান্য খাত এগিয়ে না আসায় আমদানি রপ্তানিতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

আমদানিতে সিমেন্ট ক্লিংকার ছাড়াও সার, স্টিল শিল্পের জন্য কয়েল, লবণ, চিনি, ভোজ্য তেল ও পেট্রোলিয়াম তেলের আধিক্য রয়েছে। বিপরীতে রপ্তানিতে গার্মেন্টস শিল্পের পণ্য বাড়তে থাকলেও ফ্রোজেন ফুডের পরিমাণ কমছে, পাটজাত পণ্যও কমছে, চামড়াজাত পণ্য উঠানামার মধ্যে রয়েছে, একসময় চা রপ্তানিও হলেও এখন আর রপ্তানি হচ্ছে না। সবমিলিয়ে পোশাক শিল্প ছাড়া রপ্তানিতে আর কোনো গতি নেই।  

বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে জানা যায়, গত মাসে সিমেন্ট ক্লিংকার আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ২০ হাজার ১৪৫ মেট্রিক টন, এর আগের মাসে জুলাইতে আমদানি হয়েছে ১৬ লাখ ৯৪৬ মেট্রিক টন। বিপরীতে গত মাসে গার্মেন্টস খাতে রপ্তানি হয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ মেট্রিক টন, এর আগের মাসে জুলাইতে হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮৪৫ মেট্রিক টন। এছাড়া পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪৭ হাজার ২৬৭ মেট্রিক টন, চামড়া ২ হাজার ৫৫৯ মেট্রিক টন, ফ্রোজেন ফুডস ৭ হাজার ৩২২ মেট্রিক টন।

আমদান রপ্তানি কার্যক্রম প্রসঙ্গে চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক ও ব্যবসায়ী নেতা মাহফুজুল হক শাহ বলেন,‘ আমাদের দেশে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি। আর রপ্তানির আইটেম না বাড়ালে এই এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না। দেশে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন চলছে, এসব উন্নয়নের কারণে সিমেন্ট ক্লিংকার বেশি আমদানী হবে এটাই স্বাভাবিক, বিপরীতে রপ্তানিতে গার্মেন্টস খাত ছাড়া আর কোনো খাত নেই। তবে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানিতে আইটেম বাড়াতে নজর দিচ্ছে।’

সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানি বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারিং এসোসিয়েশনের নির্বাহি পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন,‘দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৫টি কারখানা সিমেন্ট উৎপাদন করছে। ছাতক ও লাফার্জ সুরমা শুধুমাত্র পূর্নাঙ্গ সিমেন্ট কারখানা যারা ক্লিংকারও তৈরি করে। বাকি সব কোম্পানি বিদেশ থেকে ক্লিংকার আমদানি করে। প্রতিবছর এসব কারখানায় প্রায় তিন কোটি মেট্রিক টন সিমেন্ট উৎপাদিত হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে উৎপাদন এবং আমদানি।’

আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম সম্পর্কে পিআইএল শিপিং কোম্পানির আবদুল্লাহ জহির বলেন,‘ একসময় দেশ থেকে লোহার গুড়ো ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হতো। কিন্তু এখন গার্মেন্টস খাত ছাড়া অন্য কোনো খাত নেই বললেই চলে। এই ধারা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।‘

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে চলতি অর্থবছর ৮ কোটি ৫৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬৪৯ মেট্রিকটন পণ্য আমদানী হয়। এরমধ্যে কনটেইনারে করে আসে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৬৭ মেট্রিকটন এবং বাল্কে আসে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার ৮২ মেট্রিক টন। অপরদিকে ৭১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি হয়েছে এবং এরমধ্যে কনটেইনারে পরিবাহিত হয়েছে ৭০ লাখ ৩০ হাজার ৮৫৪ মেট্রিক টন এবং বাল্কে পরিবাহিত হয়েছে ৫৯ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন পণ্য।