শিগগিরই সুলভ মূল্যে ব্রডব্যান্ড সেবা বাস্তবায়ন করা হবে: পলক
দেশজুড়ে প্রতিটি বাড়িতে সুলভ মূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ফেনী পিটিআই স্কুল মাঠে হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় তিন জেলার নারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলার ৭৪৫ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফোর-জি স্পিড প্রত্যেকটি মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি যেন নিশ্চিত করে সেজন্য আমরা কাজ করছি। এমনকি প্রত্যেক জায়গায় ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি ও দাম কমানোর জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী ৫ মাসের মধ্যে ইন্টারনেটের দাম আরও কমানো হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেটে যুক্ত। যা ১৫ বছর আগে ছিল ৫৬ লাখ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে এ সংখ্যা বৈপ্লবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে দেশে আইটি নির্ভর কর্মসংস্থানের সুযোগ ছিল না। এখন আইটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় ২০ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে।
ফেনীতে প্রযুক্তি নির্ভর যুব শক্তি তৈরিতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এ জেলায় ১১৪টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব হয়েছে। এখানে আরও ১০০টি ল্যাব স্থাপন করা হবে। জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় মেয়েদের, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ছেলেদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা উল্লেখ করে পলক বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন নারীর ক্ষমতায়নের জন্য দরকার নারীর অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। একসময় যৌতুক প্রথা একটি ব্যাধি হিসেবে তৈরি হয়েছিল। সেটির সমাধান কেউ দিতে পারেনি। পেরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই নারী শিক্ষা, নারী ক্ষমতায়নে গুরুত্ব দিয়েছেন। এখন প্রাইমারিতে ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষক। ১৯৯৬ সালে এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে অভিভাবকরা সন্তানদের পড়ালেখা করানোর উৎসাহ পেয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ। তারমধ্যে প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব না। সবাই বিদেশও যেতে পারবে না। এজন্য আমাদের এমন কিছু ব্যবস্থা করতে হবে যাতে করে ঘরে বসে আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করা যায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম বলেন, অতীতে মানুষ হাসাহাসি করলেও ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন দৃশ্যমান এবং দেশ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী প্রশংসনীয়। যে ল্যাপটপ দেওয়া হবে তা দিয়ে অন্য ১০ জনকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে তারা প্রশিক্ষিত হয়ে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান এবং ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় প্রধান (প্রকল্প ও যোগাযোগ) প্রকৌশলী কাজী তারানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোস্তফা কামাল। এ সময় সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাসহ তিন জেলার হার প্রকল্পের নারী প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।