পরিস্থিতি মেনে খেললেই ‘ম্যাচ’ জয়
এই মুহূর্তে বিশ্বের কোথায়ও মাঠে কোনো খেলা নেই। মাঠ-স্টেডিয়াম-অনুশীলন সব বন্ধ। তবে হ্যাঁ, এই সময়ে পুরো বিশ্বজুড়ে যে শুধু একটাই খেলা- লকডাউন! আর এই ‘খেলা’র ফল একটাই- জিতলেই জীবন। তাই হারা যাবে না।
এই খেলায় পুরো বিশ্ব একদিকে আর প্রতিপক্ষ মহামারী কোভিড-নাইন্টিন বা সহজ নামে যা পরিচিত; করোনাভাইরাস।
সমস্যা হলো চীনে যখন এই ভাইরাস মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে প্রথম নামল তখন বাকি বিশ্ব নিজেদের সুখ-দুঃখ বা আনন্দের নিত্যদিনের সূচিতেই আটকে ছিল। এই সুযোগে করোনাভাইরাস দ্রুতগতিতে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৮২টি দেশের একক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
লড়াইটা এখন করোনাভাইরাস বনাম গোটা বিশ্ব। এটি আর এখন চ্যাম্পিয়ন-রানার্সআপের ট্রফির লড়াই নয়। অস্তিত্বের লড়াই। যে জিতবে জীবন তার। যে হারবে বিনাশ তার।
বিশ্বের সাড়ে সাতশ কোটি মানুষ এই লড়াইয়ে লড়ছে। শুধু প্রতিপক্ষের নাম জানা আছে। কিন্তু তাকে খালি চোখে দেখা যায় না। আপাতত কোনো প্রতিষেধক নেই। এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়তে হবে শুধু কৌশল ও রক্ষণের ব্যূহ গড়ে।
কৌশল আপাতত:
১) বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া। |
২) ময়লা হাতে মুখ স্পর্শ না করা। |
৩) ভিড়-জমায়েত এড়িয়ে চলা। |
৪) সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করা। |
তবে শুধু কৌশল তৈরি করেই কোনো ‘ম্যাচ’ জেতা যায় না। সেই কৌশলের সফল প্রয়োগের ওপরই নির্ভর করে ম্যাচে জেতা সম্ভবপর হবে কিনা? এতদিনে আমরা সবাই করোনাভাইরাসের বিপক্ষে লড়াইয়ের কৌশলটা জেনে গেছি। এখন প্রয়োজন সেই কৌশল যথাযথ প্রয়োগ।
বাকি রইল রক্ষণব্যূহ। ফিরি সেই প্রসঙ্গে।
ক্রিকেটে প্রথম দশ ওভারের মধ্যে কয়েকটি উইকেট পড়ে গেলে ব্যাটিং দল বাকি উইকেট অক্ষত রাখতে সেই সময়টায় নিরাপদ, রক্ষণাত্মক এবং সুস্থির ব্যাটিংয়ের নতুন পরিকল্পনা তৈরি করে। একে বলে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করা।
ফুটবলেও তাই। কোনো ম্যাচে লালকার্ডের কারণে খেলোয়াড় সংখ্যা কমে গেলে সেই দল ম্যাচ বাঁচাতে বা জিততে রক্ষণভাগকে আরও শক্তিশালী করে। এমনকি স্ট্রাইকার পজিশন থেকে তখন খেলোয়াড়কে রক্ষণেও নামিয়ে আনা হয়। একে বলে পরিস্থিতির দাবি মেটানো বা পরিকল্পনার বদল।
করোনাভাইরাসকে পরাজিত করতে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব এখন সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির দাবি মেটাতে যে রক্ষণ পরিকল্পনা নিয়েছে; খেলোয়াড়ি ভাষায় তার নাম-লকডাউন।
আক্ষরিক এবং সহজ বাংলা-ঘরে থাকা। নিজ বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকা। খুব বেশি না-সপ্তাহ তিনেক এই রক্ষণব্যূহ অটুট রাখতে পারলেই ‘ম্যাচ’ জিতবে প্রিয় বাংলাদেশ; পুরো বিশ্ব।
‘ম্যাচটা’ শুরু হয়ে গেছে। চলুন জিতে আসি।