পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলকে হোয়াইট ওয়াশ করে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন তিনি, এই ধারাবাহিক ক্রীড়া সাফল্য জুলাই বিপ্লবের ফসল, দুর্নীতিমুক্ত থাকতে পারলে ক্রীড়াঙ্গন আরও সফল হবে।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে অনুষ্ঠিত দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটোতেই দাপুটে ও গৌরবময় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টেস্ট স্ট্যাটাস অর্জনের ২৪ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষেই প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয় এবং প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলো টিম-টাইগার্স।
এ ঐতিহাসিক অর্জন উপলক্ষে জাতীয় ক্রিকেট দল এবং সংশ্লিষ্ট সকলকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে তারই সুফল পাওয়া যাচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। পাকিস্তানকে টেস্টে প্রথমবার হোয়াইট ওয়াশ করা কিংবা সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ শিরোপা জিতা, সবকিছুই নতুন বাংলাদেশের প্রতিফলন।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক বলয় থেকে ক্রীড়াঙ্গনকে মুক্ত রাখলে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে আরো সাফল্য আসবে। সরকার সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে’।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়ে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রের প্রতিটি পর্যায়ে সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
ম্যাচটার নিয়তি ভারতের ইনিংস শেষেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। ২৯৭ রান হজমের পর টি-টোয়েন্টিতে জেতার কথা কল্পনাও করা কঠিন, বিশেষত দলের শক্তি-সামর্থ্য বিচারে তা অসম্ভবের চেয়েও বেশি কিছুই ছিল। বড় হারই অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশের জন্য। ২০তম ওভারের শেষ বলটা হওয়ার পর হারের ব্যবধানটা জানা গেল, বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে মোটে ১৬৪ রান, ম্যাচটা হেরেছে ১৩৩ রানে।
ইচ্ছে হলেই যেন বল গ্যালারিতে পাঠাচ্ছে ভারত। এমন ম্যাচে বাংলাদেশ শুধু অসহায় ভঙ্গিতে চেয়ে দেখল ভারতের রান আনন্দ।
ওপেনার স্যাঞ্জু স্যামসন আগের দুই ম্যাচে স্কোর তেমন বড় করতে পারেননি। সেই দুঃখ ভুললেন সিরিজের শেষ এবং তৃতীয় ম্যাচে। মাত্র ২২ বলে হাফসেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন এই মারকুটো ব্যাটার। ৮ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় হাফসেঞ্চুরি পান তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের কোনো ব্যাটারের টি-টোয়েন্টিতে এটি দ্রততম হাফসেঞ্চুরি।
একদিনে স্যামসন, অন্যপ্রান্তে সূর্যকুমার। কে কার চেয়ে বেশি শট খেলবেন, কার স্ট্রাইকরেট বেশি থাকবে- যেন সেই প্রতিযোগিতায় মেতে উঠলেন দুজনে। মাত্র ৪৪ বলে এই জুটিতে ১০০ রান যোগ হলো। সূর্যকুমার মাত্র ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরির আনন্দে ভাসেন। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি পান স্যামসন। টি- টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ দুজনে যোগ করেন রেকর্ড ১৭৩ রান। টি- টোয়েন্টিতে যে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যে কোনো জুটিতে এটি ভারতের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
শুরুর ১০ ওভারে ভারতের স্কোর গিয়ে পৌছাল ১৫২ রানে। তখনই বোঝা যায় এই ম্যাচে আরো অনেক বড় কিছু অপেক্ষা করছে। সেটাই তারা করে দেখাল। টি- টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ ২৯৭ রানের নতুন রেকর্ড গড়ল ভারত। আগেরটা ছিল ৫ উইকেটে ২৬০ রান, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে।
ভারতের ইনিংসের পর বাংলাদেশ শুরুতেই পারভেজ ইমনের উইকেট খোয়ায়। এরপরও লিটন দাসের ব্যাটে চড়ে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তুলে ফেলে ৫৯ রান। পাওয়ারপ্লে শেষে তার আর তাওহীদ হৃদয়ের জুটি জমে গিয়েছিল যখন, তখন ২০০ ছোঁয়ার একটা সম্ভাবনা জেগে উঠেছিল। তবে লিটনের ৪২ রানে বিদায়ের পর নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন তাওহীদ। ফিফটি পেয়ে ৪২ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকলেও তিনি দলকে নিয়ে যেতে পেরেছেন স্রেফ ১৬৪ পর্যন্ত।
ম্যাচটা মাহমুদউল্লাহর শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল, সে ম্যাচে বল হাতে একটা সাফল্য পেয়েছেন তিনি। আউট করেছেন সূর্যকুমারকে। এরপর ব্যাট হাতে করতে পেরেছেন মোটে ৯ বলে ৮। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে তার সঙ্গী হয় বিশাল ব্যবধানের হার।
সেই একই গল্প। সেই একই ফল। মামুলি ব্যাটিং এবং দলের হার। মুখস্থ করা এই চিত্রনাট্য নিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করলো বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শনিবার রাতে (১২ অক্টোবর) গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ হারলো ৭ উইকেটে। সেই সঙ্গে টানা তিন হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় হয়ে গেল নিগার সুলতানা জ্যোতির দলের। আর এই জয়ে ৩ জয় ও ১ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে এলে গত আসরের রানার্স আপ দক্ষিণ আফ্রিকা।
দুবাইয়ে টসে জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং বেছে নেয়। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট গেল। দিলারা আক্তার পুরো টুর্নামেন্টের মতো শেষ ম্যাচেও ব্যর্থ হলেন। শূন্য রানে শেষ হলো তার এবারের বিশ্বকাপ মিশন। সাথী রানী, সোবহানা মুস্তারি ও নিগার সুলতানা জ্যোতি ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে গেলেন। তারই ফলশ্রুতিতে দলের স্কোর একশ’র ঘর পার করলো।
সাথী রানী ৩০ বলে ১৯ রান করেন। পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকভাবে রান করে গেলেন সোবহানা মুস্তারি ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। মুস্তারি ৪৩ বলে খেললেন ৩৮ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার নিগার সুলতানার ব্যাট থেকে এলো ৩৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস। দুজনে রান পেলেন তবে ইনিংস তৈরি করতে গিয়ে অনেক বেশি বল খেললেন তারা। টি- টোয়েন্টি ঘরানার ক্রিকেট এমন ডিফেন্সিভ ব্যাটিং দিয়ে জেতা যায় না।
১২০ বলের ম্যাচে ১০৩ রান লড়াই জমিয়ে রাখার জন্য বড় কোনো সম্পদ নয়। রান তাড়ায় নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা কোনো তাড়াহুড়ো করেনি। ২৩ রানে ওপেনিং জুটি ভাঙ্গলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাজমিন ব্রিটস ও অ্যানেকে বোসচ দলকে জয়ের পথ দেখান। ব্রিটস ৪১ বলে করেন ৪২ রান। বোশের ব্যাটে আসে ২৫ বলে ২৫ রানের কার্যকর ইনিংস।
শেষের দিকে মারিজানে কেপ ও চোলে ট্রাইয়ন দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ভারত। মোহাম্মদ শামি চোট থেকে পুরোদমে সেরে না ওঠায় দলে ফিরতে পারেননি। এদিকে ভারত তাদের সহ-অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেছে জসপ্রীত বুমরাহর নাম।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দল থেকে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, তবে এবার বুমরাহকে সহ-অধিনায়ক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভারত তিন পেসার (বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও আকাশ দীপ) এবং চার স্পিনার (অশ্বিন, জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল ও কুলদীপ যাদব) নিয়ে মাঠে নামবে। রিজার্ভে রয়েছেন হারশিত রানা, নীতিশ কুমার রেড্ডি, মায়াঙ্ক যাদব ও প্রসিধ কৃষ্ণ।
প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৬ অক্টোবর বেঙ্গালুরুতে, দ্বিতীয় টেস্ট ২৪ অক্টোবর পুনেতে, এবং তৃতীয় টেস্ট ১ নভেম্বর মুম্বাইতে।
ভারতীয় স্কোয়াড: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), জসপ্রীত বুমরাহ (সহ-অধিনায়ক), ইয়াশভি জায়সওয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, সরফরাজ খান, ঋষভ পান্ত, ধ্রুব জুরেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ ও আকাশ দীপ।
বোলিং দল অসহায়। দলটা বাংলাদেশ। ব্যাটিং দল রান উৎসবে। দলটা ভারত। এই সমীকরণেই শেষ হলো ভারতের ইনিংস। রান উৎসব থামলো তাদের ২০ ওভারে ২৯৭ রানে। স্যাঞ্জু স্যামসন সেঞ্চুরি করলেন। সূর্যকুমার করলেন ৭৬ রান। রিয়ান পরাগ ও হার্দিক পান্ডিয়াও বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে যেন খেলা করলেন। ছক্কা-চারের ঝড়ো ভেসে গেল হায়দরাবাদে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ টি- টোয়েন্টি।
ইচ্ছে হলেই যেন বল গ্যালারিতে পাঠাচ্ছে ভারত। এমন ম্যাচে বাংলাদেশ শুধু অসহায় ভঙ্গিতে চেয়ে দেখল ভারতের রান আনন্দ।
ওপেনার স্যাঞ্জু স্যামসন আগের দুই ম্যাচে স্কোর তেমন বড় করতে পারেননি। সেই দুঃখ ভুললেন সিরিজের শেষ এবং তৃতীয় ম্যাচে। মাত্র ২২ বলে হাফসেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন এই মারকুটো ব্যাটার। ৮ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় হাফসেঞ্চুরি পান তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের কোনো ব্যাটারের টি- টোয়েন্টিতে এটি দ্রততম হাফসেঞ্চুরি।
একদিনে স্যামসন, অন্যপ্রান্তে সূর্যকুমার। কে কার চেয়ে বেশি শট খেলবেন, কার স্ট্রাইকরেট বেশি থাকবে- যেন সেই প্রতিযোগিতায় মেতে উঠলেন দুজনে। মাত্র ৪৪ বলে এই জুটিতে ১০০ রান যোগ হলো। সূর্যকুমার মাত্র ২৩ বলে হাফসেঞ্চুরির আনন্দে ভাসেন। মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি পান স্যামসন। টি- টোয়েন্টিতে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ দুজনে যোগ করেন রেকর্ড ১৭৩ রান। টি- টোয়েন্টিতে যে কোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যে কোনো জুটিতে এটি ভারতের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
শুরুর ১০ ওভারে ভারতের স্কোর গিয়ে পৌছাল ১৫২ রানে। তখনই বোঝা যায় এই ম্যাচে আরো অনেক বড় কিছু অপেক্ষা করছে। সেটাই তারা করে দেখাল। টি- টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ ২৯৭ রানের নতুন রেকর্ড গড়ল ভারত। আগেরটা ছিল ৫ উইকেটে ২৬০ রান, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে।
দিল্লিতে আগের ম্যাচে ভারত করেছিল ২২১ রান। হায়দরাবাদে করল ২৯৭। দিল্লিতে জিতেছিল ভারত ৮৬ রানে। হায়দরবাদে আরো বড় জয়ের অপেক্ষায়!