কোটা আন্দোলনে কেন নিশ্চুপ ছিলেন, জানালেন মাশরাফি

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

কোটা সংস্কারের আন্দোলন গেল মাসে শুরু হয়েছিল। তাতে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীসমাজ। সে সময় নিশ্চুপ ছিলেন বলে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিই পড়ে গিয়েছিলেন তোপের মুখে। মাশরাফি বিন মুর্তজাও ব্যতিক্রম নন। 

এরপর থেকে তো অনেক কিছুই বদলে গেল। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন থেকে তা রূপ নিল স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে। অবশেষে চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকারেরও পতন হলো। মাশরাফি তার সংসদ সদস্য পদও খুইয়েছেন। 

বিজ্ঞাপন

এত কিছুর পরে তিনি অবশেষে মুখ খুলেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন কেন তিনি তখন চুপ ছিলেন। তার ভাষ্য, ‘আমি কিছু করার চেষ্টা করিনি, তা নয়। আমি শুধু কিছু লেখার ভাবনায় থাকতে চাইনি। চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না। সেই শুরুর দিকেই চেষ্টা করেছি। কারণ তাদের দাবি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিন্তু সেটাও করতে পারিনি। সব মিলিয়ে অবশ্যই ব্যর্থ হয়েছি।’

তিনি চেষ্টা করেছিলেন স্ট্যাটাস দেওয়ার চেয়েও বড়  ও সুদূরপ্রসারী কিছু করতে। কেন তিনি তা পারেননি? তার জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে আমি আমার দলের অধিনায়ক নই। সহ-অধিনায়ক নই। এমনকি, বড় কেউ নই। মাত্র কয়েক বছর হলো শুরু করেছি রাজনীতি। আমি আমার জায়গা থেকেই চেষ্টা করেছি। যতটুকু সাধ্য ছিল, চেষ্টা করেছি যেন ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারি। কিন্তু সুযোগটা না পেলে তো কিছু করার থাকে না। হয়তো দলের উপদেষ্টামন্ডলিতে থাকলে বা সেরকম কেউ হলে দায়িত্ব পেতাম। তার পরও সাধ্যমতো করেছি, কিন্তু সুযোগটা আমি পাইনি।’

তবে এরপরও তিনি কাউকে দোষ দিতে চাইলেন না। দায়টা তুলে নিলেন নিজের কাঁধে। বললেন, ‘তার পরও কাউকে দোষ দেব না। দায় আমারই। বিশেষ করে, মানুষের যে আবেগ-ভালোবাসার জায়গা ছিল, ক্রিকেটার মাশরাফির প্রতি যে দাবি ছিল, সেটা পূরণ করতে পারিনি এবং সেই দায় মাথাপেতেই নিচ্ছি। আমি ব্যর্থ হয়েছি এবং সেটা আমাকে সেই শুরু থেকেই পোড়াচ্ছে। রাজনীতিবিদ হিসেবে, আমি কিছু করার চেষ্টা করেছি। পারিনি।’

তবে এই বিষয়ে যে কিছুই করতে পারেননি, এই হতাশাটা তিনি লুকাননি। বলেছেন, ‘এই কষ্ট থাকবেই। হয়তো আজীবন থাকবে। দেশের একটা ক্রাইসিস মুহূর্তে পাশে থাকতে পারিনি, কিছু করতে পারিনি, এটা আমাকে সবসময়ই ভোগাবে, পোড়াবে। সবসময়ই থেকে যাবে। সবসময় সব কথা বলা যায় না। কিছু জিনিস হয়তো বলার ব্যাপারও নয়। এতদিন চুপ ছিলাম। আজকে কিছু বলছি। কিছু হয়তো সামনে বলব। জীবনে অনেক কিছু হবে। তবে এই কষ্টটা রয়ে যাবে। যত কিছুই হোক, এটা কখনও যাবে না। নিজের ওপর সেই হতাশা সবসময়ই থাকবে।’