আগের দুই আসরে গ্রুপ পর্বের শীর্ষ দলটা ছিল গুজরাট টাইটান্স। তবে এবারের আসরে তারা তৃতীয় দল হিসেবে বিদায় নিয়েছে। শীর্ষস্থানের সম্ভাবনা বহু আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল, টিকে ছিল প্লে অফের আশা, তবে সেটা কাল শেষ হয়ে গেল বৃষ্টিতে। নিজেদের মাঠ নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে দলটা। তাতে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। ওদিকে কলকাতার শীর্ষ দুইও নিশ্চিত হয়ে গেছে কাল।
এই ম্যাচটা গুজরাটের শেষ ‘হোম’ ম্যাচ ছিল। এই ম্যাচে দলটার ক্যান্সার সচেতনতা বাড়াতে ল্যাভেন্ডার রঙা বিশেষ জার্সি পরে নামার কথা ছিল। শুভমান গিল তা নেমেওছিলেন। কিন্তু শেষমেশ এই জার্সি পরে আর খেলা হলো না। টসই যে হতে দিল না বৃষ্টি! শেষমেশ ল্যাপ অফ অনার যখন দিচ্ছিল গুজরাট, তখন জার্সিটা খুলে এক খুদে ভক্তের হাতে তুলে দেন শুভমান।
এই ম্যাচের পর আইপিএল থেকে বিদায় নেওয়া দলের কাতারে চলে এল শেষ ২০২২ সালের চ্যাম্পিয়ন ও গেল বারের রানার্স আপ গুজরাট। সেখানে তাদের জন্য আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আর পাঞ্জাব কিংস।
এদিকে ৯ জয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা আছে শীর্ষে। দুইয়ে থাকা রাজস্থানের পয়েন্ট ১৬, তাদের হাতে ম্যাচ আছে দুটো, তবে তাদেরও প্লে অফ নিশ্চিত হয়নি এখনও, বিদায়ের শঙ্কাটা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না তাদের। ফলে দুই, তিন আর চার এই তিনটা জায়গার জন্য লড়াই করছে ছয়টা দল। রাজস্থান, চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, দিল্লি ক্যাপিটালস ও লখনৌ সুপার জায়ান্টস।
সঙ্কটের শুরু হয়েছিল পাকিস্তান সফরের আগে থেকেই। সেই সফরে পুরো দল ঢাকায় থেকে পাকিস্তান সফরে যায়। জটিলতা এড়াতে সাকিব কানাডা থেকে দুবাই হয়ে পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যোগ দেন।
সেই সফর শেষে বাংলাদেশ দল দেশে ফিরে। সাকিব ফেরেননি। তিনি চলে যান ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতে। সেখান থেকেই সিরিজ শুরুর একদিন আগে ভারতের চেন্নাইয়ে পৌছান। তারপর কানপুরে সিরিজের শেষ টেস্টে তিনি ঘোষণা দেন বিদেশের মাটিতে এটাই তার শেষ টেস্ট। মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলে তিনি টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান।
তবে তার সেই ইচ্ছেটা অপূর্ণই রয়ে গেল। তার ফেরা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে বাক-বিতন্ডা থেকে শুরু করে স্টেডিয়ামের আশপাশে মিছিল শ্লোগানে ক্রিকেট আনন্দ হারিয়ে গেল। রাজনীতিই মুখ্য হয়ে উঠলো। এমন পরিস্থিতি যে তৈরি হবে সেটা প্রায় অনুমিত ছিল। সেই আভাষ তো অনেক আগেই মিলেছিল। পরিস্থিতির এই সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিসিবির মারফত সাকিবকে না করে দেয়।
বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভুঁইয়া সজীব এই বিষয়ে তার পরিস্কার বার্তায় জানিয়ে বলেন, ❝আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে যা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না। যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজে কোনপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। কোন অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।❞
সাকিবের খেলোয়াড়ি জীবনে দীর্ঘদিনের সতীর্থ সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল এই সার্বিক বিষয়ে তার মতামতে বলেন, ‘সাকিব চাইলে কানপুরেই তার টেস্ট ম্যাচ ক্যারিয়ার শেষ করতে পারতেন। বলতে পারতেন এটাই আমার শেষ টেস্ট ম্যাচ। কিন্তু তিনি দেশের মাটিতে মিরপুরে খেলে টেস্টকে বিদায় জানানোর ইচ্ছে প্রকাশ করলেন। আমরাও ভেবেছিলাম সেটাই হবে। তবে হয়নি। আপনি যদি একদিক দিয়ে বিবেচনা করেন তাহলে আমি মনে করি যে ওর বিদায়ের কারণে আমাদের ক্রিকেটটা যেন বন্ধ না হয় সেই কারণেই আমার মনে হয় বর্তমান সরকার এই ঝুঁকিটা নিতে চায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা চলাকালে যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটলো যার প্রেক্ষিতে আমাদের দেশে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটাই বন্ধ হয়ে গেল! তখন কি হবে? দেশের ভাবমূর্তি তো তখন আরো বড় সঙ্কটে পড়বে। সেদিক বিবেচনা করে আমি বলতে পারি সাকিব এখানে তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে পারেননি সেটা দুঃখজনক তো অবশ্যই। তারপরও আমি বলবো তাকে ঘিরে, তার রাজনৈতিক পরিচয়কে ঘিরে যা হয়েছে সেটা বর্তমান সময়ের জন্য অনেক বিতর্কিত ইস্যু। আমি মনে করি দেশের ক্রিকেটটাই আসল বিষয়। সেই বিবেচনাবোধকে সামনে রেখে আমি বলতে পারি সরকার এই বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত।’
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ক্রিকেট মহলে এমন একটা পরিস্থিতিতে তাকে ঘিরে বিতর্ক যে তৈরি হতে পারে সেটা কি সাকিব আগে অনুমান করতে পারেননি। অবশ্যই পেরেছিলেন। আর সেই জটিলতা এড়াতে তিনি যেভাবে টরন্টো থেকে পাকিস্তান, পাকিস্তান থেকে ইংল্যান্ড, ইংল্যান্ড থেকে ভারত, ভারত থেকে ফের আমেরিকার বিমান ধরেছিলেন মাঝে একটা দিনও বাংলাদেশে না এসে; সেই তিনিই তো কানপুরে টেস্ট ক্যারিয়ারকে গুডবাই বলে দিলে বর্তমানের এই জটিল পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো। নয়কি?
এই প্রশ্নে সাকিবের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বললেন, ‘মিরপুরে দেখলাম সাকিবের ভক্তরা তার সমর্থনে মাঠের আশেপাশে এসেছেন। তারা দাবি তুলছেন সাকিবের ইচ্ছেটা যেন বিসিবি পুরুণ করে। সাকিব আসলে মাঠের পারফরমেন্সের বিচারে লা-জবাব। আগেই বলেছি সাকিব চাইলেই তার টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষটা কানপুরেই করতে পারতেন। তাকে ঘিরে দেশে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটা তো তিনি আগেই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। আমার কাছে তো মনে হয় সাকিব এখানেও হয়তো বা এই বিষয়ে একটা গেম খেলেছেন। যেহেতু সে এখন রাজনীতিবিদ। আওয়ামী লীগের সাতমাসের এমপি ছিলেন তিনি। কানপুরেই সাকিব টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করলে আজ হয়তো আমাদের এই পরিস্থিতি দেখতে হতো না। আমি তো মনে করি সাকিব যদি এখনো ফেইসবুক লাইভে এসে নিজের ভুল শিকার করে একটা বক্তব্য দেন তাহলে মানুষ হয়তো তাকে ক্ষমা করতেও পারে।’
বাংলাদেশ দল যখন পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজের জন্য সফরে ছিল তখনই বিসিবি নতুন কোচের জন্য চারধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। সেই চেষ্টায় ফিল সিমন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিসিবি। পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ দল দুটি টেস্ট ম্যাচই জিতে।
বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের কোচ হতে নিজের আগ্রহ প্রসঙ্গে ফিল সিমন্স জানান,‘ পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ যখন ২-০ তে টেস্ট সিরিজ জেতে তখনই আমার আগ্রহের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। বিশেষ করে সেই সিরিজে তরুণ ক্রিকেটারদের পারফরমেন্স আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। একঝাঁক তরুণ খেলোয়াড়দের দক্ষতা, প্রতিভা ও সক্ষমতা দেখে বাংলাদেশ নিয়ে আমারও আগ্রহের মাত্রা বেড়ে যায়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজে তরুণ খেলোয়াড়রা পরিস্থিতি দারুণভাবে সামাল দেয়।’
পাকিস্তান সফর শেষে বাংলাদেশ দল ভারত সফরে যায়। সেই সফরের ফল আবার পুরো উল্টো। দুটো টেস্ট ম্যাচই হারে বাংলাদেশ প্রতিরোধ ছাড়াই। টি- টোয়েন্টি সিরিজের হারের ধরণ আরো বাজে। একতরফা ভঙ্গিতে তিনটি টি- টোয়েন্টিই জেতে ভারত। দলের সেই ব্যর্থতা প্রসঙ্গে ফিল সিমন্স বলেন, ‘টি- টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ওখানে ভালো করতে পারেনি। তবে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ সেই সিরিজ খেলেছে বিশ্ব সেরা টি- টোয়েন্টি দলের বিপক্ষে।’
বাংলাদেশের কোচের পদের চাকরি নিতে যে দুটি বিষয় সিমন্সকে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী করে তুলে তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, প্রথমত এখানকার তরুণ খেলোয়াড়দের উন্নয়নের চ্যালেঞ্জটা আমাকে আগ্রহী করেছে। দ্বিতীয়ত, টেস্ট এবং ওয়ানডে দলের দায়িত্বও আমি পাচ্ছি। এই দুটো চ্যালেঞ্জ যখন সামনে আসে তখন বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব নিতে হ্যাঁ বলাটা আমার জন্য আর কঠিন কিছু ছিল না।’
নতুন কোচ ফিল সিমন্স আত্মবিশ্বাসী যে এই সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর একটা ভালো সুযোগ আছে বাংলাদেশ দলের সামনে। টেস্টে অবশ্য এখনো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকা পেছনের দশ বছরে উপমহাদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার এই দুর্বল পরিসংখ্যান জানলেও বাংলাদেশ এই সিরিজে এই দলকে মোটেও হালকা মেজাজে নিচ্ছে না।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ঘোষণা করেছে যে, নতুন ঘরোয়া নারীদের ক্রিকেট কাঠামোর শীর্ষ দুই স্তরে বা নারীদের হান্ড্রেড প্রতিযোগিতায় ‘ট্রান্সজেন্ডার নারী’রা অংশ নিতে পারবেন না।
এই নতুন নীতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের গত বছরের সিদ্ধান্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গেল বছর পুরুষ হিসেবে বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করা কাউকে নারীদের আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
ট্রান্সজেন্ডার অংশগ্রহণ ইদানীং ক্রীড়াজগতে আলোচিত একটি ইস্যু হয়ে উঠেছে। যেখানে বিভিন্ন খেলা তাদের অন্তর্ভুক্তি এবং তার ফলে প্রতিযোগিতায় ন্যায়বিচার বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
সাইক্লিং, সাঁতার এবং অ্যাথলেটিক্সসহ বেশ কিছু অন্যান্য খেলার আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোও কার্যত ট্রান্সজেন্ডার প্রতিযোগীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইসিবি জানিয়েছে যে তারা ‘প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা প্রমাণ’ পর্যালোচনা করেছে এবং ‘ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং অন্তর্ভুক্তি’ বিবেচনা করেছে।
তবে, তারা নিশ্চিত করেছে যে ঘরোয়া কাঠামোর তৃতীয় স্তরে, যা আগামী বছর থেকে চালু হবে, এবং বিনোদনমূলক ক্রিকেটে, যেকোনো ব্যক্তি তাদের পরিচিত লিঙ্গ অনুযায়ী অংশগ্রহণ করতে পারবে।
তবে এখানে একটি ‘ব্যক্তিগত ক্ষমতা নীতি’ থাকবে, যা এমন ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যারা শারীরিক ক্ষমতা, স্ট্যামিনা বা আকারের কারণে প্রতিযোগিতায় অসমতা বা নিরাপত্তা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
ইসিবি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ট্রান্সজেন্ডার অংশগ্রহণ একটি জটিল বিষয়, যেখানে অনেকের শক্তিশালী মতামত রয়েছে এবং সবদিকের ভারসাম্য রক্ষা করা প্রায় অসম্ভব।’
‘আমরা চাই আমাদের খেলায় সবাইকে অন্তর্ভুক্ত ও স্বাগত জানানো হোক, এবং আমরা মনে করি যে গৃহীত অবস্থানটি পেশাদার খেলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এবং বিনোদনমূলক স্তরে অন্তর্ভুক্তি বজায় রাখে, যেখানে নিরাপত্তা এবং বৈষম্য মোকাবেলার জন্য সুনির্দিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।’
বেঙ্গালুরু টেস্ট জিততে মাত্র ১০৭ রান করতে হবে নিউজিল্যান্ডকে। চতুর্থদিন সেই টার্গেটের পেছনে ছুটতে ব্যাট করতে নামে অতিথি দল। কিন্তু আকাশের কালো মেঘের আনাগোনায় আলোর স্বল্পতায় খেলা চালানো সম্ভবপর হয়নি। নিউজিল্যান্ডের শেষ ইনিংসের শুরুতে মাত্র ৪ বল খেলা হতেই চতুর্থদিনের খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। আজ শেষদিনের পুরো ৯০ ওভার পড়ে আছে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য ১০৭ রান করার। তবে শঙ্কার বিষয় হলো বেঙ্গালুরুতে ম্যাচের শেষদিন বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে!
প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার জবাব বেশ ভালোই দেয় ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে। প্রথম ইনিংস তাদের শেষ হয়েছিল মাত্র ৪৬ রানে। দেশের মাটিতে কোনো টেস্ট ম্যাচে এটাই ভারতের সর্বনিম্ম স্কোর। দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিংয়ে ভারত ৪৬২ রান করে। টপঅর্ডারে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি হাফসেঞ্চুরি করেন। মিডলঅর্ডারে সারফরাজ আহমেদ তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ১৫০ রানের ঝলমলো ইনিংসে হাসে তার ব্যাট। উইকেটকিপার কাম ব্যাটার ঋষভ পান্ত মাত্র ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। ও’ রাউকির বলে স্কয়ার কাট করতে গিয়ে ব্যাটে বল লাগিয়ে টেনে সেটা নিজের স্ট্যাম্পে নিয়ে আসনে পন্থ। ৯৯ রানে বোল্ড হওয়ার পর আবেগহীন চেহারায় মাঠ ছাড়েন এই উইকেটকিপার। পুরো গ্যালারি যখন তার সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল ঠিক তখনই চারধার শুনশান নিরবতায় আছন্ন করে ডাগআউটে ফিরেন পন্থ।
নিউজিল্যান্ডের দুই পেসার ম্যাট হেনরি এবং ও’ রাউকি তিনটি করে উইকেট পান। দলীয় ৪৩৩ রানে ঋষভ পান্ত ফেরার পর ভারতের পরের পাঁচ ব্যাটার আর বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেনি। ৪৬২ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। শেষ ৫ উইকেট ভারত হারায় মাত্র ২৯ রান যোগ করে।
বৃষ্টি বাধা না হলে পঞ্চম এবং শেষদিনের প্রথম সেশনেই এই টেস্ট জিতে যাবে নিউজিল্যান্ড। নাকি অপেক্ষা করছে নতুন কোনো নাটক?
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৪৬ ও ৪৬২। নিউজিল্যান্ড ৪০২ ও ০/০।