কুমিল্লার দম্ভচূর্ণ করে বিপিএল শিরোপা বরিশালের

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। যতবার ফাইনাল খেলেছে, শিরোপা তাদের হাতেই উঠেছে। চার শিরোপার দুটি আবার বরিশালকে হারিয়েই জেতা কুমিল্লার। এমন প্রতিপক্ষের সামনে ফরচুন বরিশালের আত্মবিশ্বাস নড়বড়ে হতে পারত। স্নায়ুচাপে খাবি খেতে পারত তারা। কিন্তু তামিম ইকবালের এই বরিশালকে দমিয়ে রাখতে পারল না কুমিল্লা। ৬ উইকেটের জয়ে প্রথমবারের মতো বিপিএল শিরোপা জয় করল বরিশাল।

মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে কুমিল্লার ব্যাটিং শুরু থেকেই ছিল এলোমেলো। প্রথম ওভারে জীবন পেয়ে এক বল পরই উইকেট ছুঁড়ে দেন সুনীল নারাইন। প্রথমবার তার ক্যাচ হাতে জমাতে না পারলেও দ্বিতীয়বাড় দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে নারাইনকে সাজঘরের পথ চেনান ওবেড ম্যাকয়।

বিজ্ঞাপন

নারাইন তড়িঘড়ি ফিরলেও লিটন দাস এবং তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে স্বপ্ন দেখছিল কুমিল্লা। কিন্তু কীসের কি! জেমস ফুলারের বলে দুজনই ক্যাচ দিয়েছেন ডিপ থার্ডে থাকা মাহমুদউল্লাহর হাতে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে জেতানো লিটন (১৬) আর হৃদয়ের (১৫) ব্যাট থেকে কুমিল্লা ফাইনালে পেয়েছে সাকুল্যে ৩১ রান।

পাওয়ার প্লে শেষে প্রথম তিন ব্যাটারকে হারানো কুমিল্লার স্কোর দাঁড়ায় ৪৯ রান। এলোমেলো ব্যাটিংয়ের অবশ্য সেখানেই শেষ নয়। মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নামা দুই বিদেশি জনসন চার্লস এবং মঈন আলিও দলকে খুব একটা নির্ভরতা জোগাতে পারেননি। 

ধীরগতিতে ব্যাট চালিয়ে কুমিল্লার রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দুটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে খোলসমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে রান তোলার তাড়ায় সাইফউদ্দিনের বল স্কুপ করতে গিয়ে উল্টো বোল্ড হতে হয় তাকে। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান।

শেষদিকে আন্দ্রে রাসেলের ১৪ বলে ৪ ছক্কায় খেলা ২৭ রানের ক্যামিও দেড়শ ছাড়ায় কুমিল্লার সংগ্রহ। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৪ রানে থামে কুমিল্লা। বরিশালের পক্ষে ৪৩ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন জেমস ফুলার।

জবাব দিতে নেমে শুরু থেকে কুমিল্লার বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৮ ওভারে ৭৬ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে বরিশাল। অষ্টম ওভারের শেষ বলে মঈন আলির বলে তামিম বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। ফেরার আগে সমান তিনটি করে চার-ছক্কায় ২৬ বলে ৩৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তামিম। যার সুবাদে ১৫ ম্যাচে ৪৯২ রান করা তামিম কুমিল্লার তাওহিদ হৃদয়কে টপকে বনে গেছেন বনে গেছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

তামিম ফেরার পর তেড়েফুঁড়ে খেলতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন মিরাজ (২৯)। স্লটে থাকা বলে বড় শট হাঁকাতে গিয়ে টাইমিংয়ের গরমিলে ধরা পড়েন লং অনে থাকা জনসন চার্লসের হাতে।

দুই ওপেনার ফেরার পর বরিশালের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম এবং কাইল মায়ার্স। এর মধ্যে মায়ার্সকে দুইবার আউট করার সুযোগ পেয়েও হেলায় হারিয়েছে কুমিল্লা। মঈনের বলে কুমিল্লার ফিল্ডাররা দুইবার মায়ার্সের ক্যাচ ছেড়েছেন।

দুইবার জীবন পেয়ে বরিশালকে জয়ের হাতছোঁয়া দূরত্বে পৌঁছে দেন মায়ার্স। আন্দ্রে রাসেলের করা ১৫তম ওভারে দুটি করে চার-ছক্কার সাহায্যে তোলেন ২১ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মঈন আলির তালুবন্দি হয়ে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫ চার এবং ২ ছয়ে ৪৬ রান।

মুস্তাফিজের করা সেই ওভারেই ১৩ রান করে আউট হন মুশফিকও। তবে ডেভিড মিলার (৮*) এবং মাহমুদউল্লাহ (৭*) বরিশালকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন।