বছরের শুরুটা এর চেয়ে বাজে হতে পারত না অ্যান্ডি মারের। অনেক আশা নিয়ে মেলবোর্নের কিয়া অ্যারেনায় ভিড় জমিয়েছিলেন হাজারো দর্শক। একজন কিংবদন্তির টেনিসশৈলী দেখতে এসেছিলেন তারা। কিন্তু একরাশ হতাশা নিয়ে শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডেই সরাসরি সেটে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। আর্জেন্টিনার টমাস মার্তিন এচেভেরির কাছে ৬-৪, ৬-২ ও ৬-২ সেটে হেরে গেছেন সাবেক এই বিশ্বসেরা টেনিস তারকা।
ক্যারিয়ার সায়াহ্নে থাকা মারেকে নিয়ে প্রত্যাশা খুব বেশি না থাকলেও প্রথম রাউন্ডেই তার যাত্রা সাঙ্গ হবে, এমনটা ভাবেননি কেউ। তবে চোট আর অফ ফর্মের লড়াই করা মারের সময়টা যে একেবারে পক্ষে নেই। শেষ ৮ ম্যাচের সাতটিতেই হারতে হয়েছে তাকে। নতুন মৌসুমের শুরুটাও ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে।
কিয়া অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনো ছাপ ছিল না। ম্যাচটা যে মারের হতে যাচ্ছে না, তা বুঝতে প্রথম সেটটাই যথেষ্ট ছিল। একসময় ৪-৪ সমতায় থাকলেও সহজেই মারেকে পাশ কাটিয়ে যান ৩০তম বাছাই এচেভেরি, সেট জিতে নেন ৬-৪ ব্যবধানে।
পরের দুই সেটে আরও অসহায় মারে। ভাবলেশহীন মুখে সে দুই সেটে সমান ৬-২ ব্যবধানে হার মানেন মারে। এমন বিদায়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা তার অধরাই রইল। পাঁচবার ফাইনাল খেললেও অস্ট্রেলিয়ায় একবারও গ্র্যান্ডস্লাম জয়োৎসব করতে পারেননি মারে।
হতাশার ভারত সফরের শেষ দিকে আছে বাংলাদেশ। আর বাকি একটা ম্যাচ। এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত একটা ম্যাচেও জিততে পারেনি দল। তবে দলের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস নজর দিচ্ছেন ইতিবাচক দিকে।
ভারতে বড় বড় দলও গিয়ে খাবি খায়। অনেক বড় দলের জন্য এই মাটিকে মনে করা হয় চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ হিসেবে। সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন পোথাস।
এরপর তিনি জানালেন সামনে থাকা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির কথাও। তিনি বলেন, ‘ভারতে অনেক দলই এসে বাজে সফর কাটিয়ে যায়। আমাদেরকে যেদিকে নজর দিতে হবে তা হচ্ছে শিখতে পারছি কী না, সামনের দিকে তাকাতে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসছে সামনে, টি-টোয়েন্টি আছে।’
ভারতের মাটি সব দলের জন্যই কঠিন। সেখানে সফর করতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবানও ভাবছেন পোথাস। তার ভাষ্য, ‘আমরা সবসময়ই জিততে চাই, দুনিয়ার যেকোনো খেলাতেই এটি সবাই করে থাকে। তবে আমাদের বাস্তবিকভাবেও চিন্তা করতে হবে। আমরা কিছুটা ভাগ্যবানও যে ভারত সফরে আসতে পেরেছি। কারণ এখানে অনেক কিছু শেখা হয়েছে আমাদের। শিক্ষাটা সৎভাবে হতে হবে।’
সাফল্যের জন্য টানা শিখে যাওয়ার গুরুত্ব কেমন, তাও জানালেন পোথাস। তিনি বলেন, ‘আপনি চাইলে বিশ্বের সেরা কারও সাথে কথা বলে দেখতে পারেন, তারা আপনাকে বলবে যে, প্রতিদিনই শেখার দিন। যখন আপনি শেখা বন্ধ করে দেবেন, তখনই সমস্যা শুরু হবে। ফলে এটা কোনো সমস্যা নয় আমাদের। এমনকি ভারতের সূর্যকুমার যাদবও ম্যাচ শেষে বলেছিল সে অনেক কিছু শিখেছে, কীভাবে বোলারদের ব্যবহার করতে হবে। সবসময় আপনাকে শিখতে হবে।’
একটা সফরে যাচ্ছেন, ঠিক এই সময় যদি আপনার দলের অধিনায়ক চোটে পড়েন, এর চেয়ে বড় দুঃসংবাদ আর কীইবা হতে পারে? দক্ষিণ আফ্রিকা আজ শুনেছে ঠিক তেমন কিছুই। চোটের কারণে টেম্বা বাভুমা ছিটকে গেছেন অন্তত প্রথম টেস্ট থেকে।
আবুধাবিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলছিলেন বাভুমা। সেখানেই তিনি ব্যথা পান কনুইয়ে। সেই চোটই এবার তাকে মিরপুর টেস্ট থেকে ছিটকে দিয়েছে।
তার বিদায়ের ফলে বাংলাদেশে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে এমন ক্রিকেটার আর রইল না দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশ সফরে খেলেছিলেন তিনি, এরপর থেকে দলটা আর আসেনি বাংলাদেশে।
তার বদলে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের স্কোয়াডে এনেছে ডেভাল্ড ব্রেভিসকে। তার এখনও অভিষেক হয়নি সাদা পোশাকে। এদিকে দলটাকে প্রথম টেস্টে নেতৃত্ব দেবেন এইডেন মার্করাম।
আগামী ২১ অক্টোবর সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। ম্যাচটা হবে মিরপুরে। এরপর আগামী ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
বাংলাদেশ সফরের দক্ষিণ আফ্রিকা দল
টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), ডেভিড বেডিংহাম, ম্যাথু ব্রিটজকে, ডেভাল্ড ব্রেভিস, টনি ডি জর্জি, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, উইয়ান মুল্ডার, সেনুরান মুথুসামি, লুঙ্গি এনগিডি, ডেন প্যাটারসন, ডেন পিট, কাগিসো রাবাদা, ট্রিস্টান স্টাবস, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১১তম আসরের ড্রাফটের আর খুব বেশি সময় নেই। এর আগে খেলোয়াড়দের মূল্য ও ক্যাটাগরি প্রকাশ করা হয়েছে। ৬ ক্যাটাগরিতে আছেন ১৮৮ খেলোয়াড়। তবে এই তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস।
আজ শুক্রবার ইমরুল এক ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তার প্রশ্ন, গ্রেডিংটা আসলে কোন নীতির ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। তিনি নিজের উদাহরণও টেনেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে ক্রিকেটারদের গ্রেডিং দেখে চিন্তা করছি গ্রেডিংটা আসলে কিসের ভিত্তিতে করা হয়। জাতীয় দল, সারা বছরের ঘরোয়া পারফরম্যান্স, বিপিএলের পারফরম্যান্স নাকি শুধু নাম দেখে করা হয়। বছরজুড়ে ক্রিকেটের আশেপাশে না থাকা ক্রিকেটারের জায়গা হলো ‘বি’ গ্রেডে। অথচ গত বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা ‘সি’ গ্রেডে। তবে কি শুধু নাম কিংবা চেহারা দেখেই বিপিএলের ড্রাফটের গ্রেড নির্ধারণ করা হয়?’
এরপর বিপিএলের পারফর্ম্যান্স দিয়ে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া, ও এরপর পারফর্ম করেও না ফিরতে পারা নিয়েও হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘বিপিএলের ২০১৮-১৯ মৌসুমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে আমি ভালো করতে পারিনি। যে কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজের পর আমাকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিসিবির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা হলো তখন বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বিপিএলে আমার পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো ছিল না। যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি তাই আমি কোনো সংকোচ ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম’’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘জাতীয় দলে ফিরতে আমি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকি। ২০১৯-২০ মৌসুমে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ১৩ ম্যাচে ৪৪২ রানও করেছিলাম। কিন্তু এমন পারফরম্যান্সের পরও আমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। এমনকি জাতীয় দলের কোন ক্যাম্পেও রাখা হয়নি। তবে কি বিপিএলে পারফর্ম না করলেই বাদ? কিন্তু পারফর্ম করলে, সেটাও তো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ক্রিকেটের দুর্দিন কি তবে শেষ হবে না?’
পাকিস্তানের দুঃসময় যেন চলছেই। বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর দলটা ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথম ম্যাচে হেরে বসেছে। ইংলিশদের কাছে হেরেছে আবার বিব্রতকর এক রেকর্ড গড়ে।
এর আগেই আরও একটা দুঃসংবাদ পেয়ে গেছে শান মাসুদের দল। এই দুঃসংবাদ এসেছে মাঠের বাইরে থেকে। লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে।
আবরার প্রথম ইনিংসে বোলিং করে আর সব পাকিস্তানী বোলারের মতোই খরুচে ছিলেন। ৩৫ ওভার বল করে তিনি ১৭৪ রান বিলিয়েছেন, তবু উইকেটের দেখা পাননি।
তবে টানা তিন দিন বোলিং-ফিল্ডিংয়ের ধকলটা নিতে পারেননি তিনি। চতুর্থ দিন মাঠে নামতে পারেননি তিনি। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাকে। বেশ কিছু পরীক্ষাও করানো হয়েছে তার। বিষয়টি জানিয়েছে পাক ক্রিকেট বোর্ড।
আজ পঞ্চম দিনে পাকিস্তান তাকে ছাড়াই খেলতে নেমেছে। অলআউটও হতে হয়েছে নবম উইকেট পতনের পর, কারণ তিনি মাঠে আসতে অপারগ। তার অবস্থা যে খুব একটা সুবিধের নয়, তার আঁচ মিলছে এ থেকেই।