হার দিয়ে পাকিস্তান সিরিজ শুরু টাইগারদের
শুরুতে আগুনে বোলিং করে টাইগার ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের টপ-অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে তো দাঁড়াতেই দেননি মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। কিন্তু শুরুর সেই দুরন্ত সূচনা ধরে রাখতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কাছে ৪ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। অতিথিরা জয় ছিনিয়ে নিলো চার বল হাতে রেখেই।
দুঃস্বপ্নের বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে দেশে ফেরে ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে একটি জয়ও ছিনিয়ে নিতে পারেনি তারা। জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্য নিয়েই ঘরের মাঠ মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেমে ছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। কিন্তু লক্ষ্যটা পূরণ হলো না। জয়টা অধরাই থেকে গেল। জয় নামক সোনার হরিণ ছোঁয়ার জন্য আগামীকালের দ্বিতীয় ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে এখন কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যদের।
একটা সময় ম্যাচটা হেলে পড়েছিল বাংলাদেশের দিকে। জয়ের স্বপ্নমালা বুঁনে যাচ্ছিল দেশের ছেলেরা। কিন্তু শেষ দিকের অনিয়স্ত্রিত বোলিং আর পাকিস্তানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায় টাইগারদের। ১৯.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্য টপকে ১৩২ রান তুলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা।
শুরুতেই টাইগাররা ফেলে দেন পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (১১) বোল্ড করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। আর বাবর আজমের (৭) উইকেট উপড়ে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। হায়দার আলীকে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন মেহেদী হাসান। আর শোয়েব মালিক শূন্য রানে রান আউটের শিকার হন।
মাঝে বিরতি দিয়ে অতিথিদের ব্যাটিং লাইন-আপে আঘাত করেন তাসকিন আহমেদ। তারকা এ পেসারের বলে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান ফখর জামান। ফেরার আগে ৩৪ রান এনে দিয়ে যান তিনি। আর খুশদিল শাহকে ৩৪ রানে ফিরিয়ে দেন শরীফুল ইসলাম। ৩৫ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ৩ চার ও এক ছয়ে।
শেষ দিকে বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন দুজনে। ১০ বলে এক বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ২১* রানের হার না মানা ছোট্ট অথচ কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন শাদাব। ৮ বলে এক বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ১৮* রানে অপরাজিত থেকে শাদাবকে সঙ্গ দিয়ে যান নওয়াজ।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বড় পুঁজি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। এলোমেলো ব্যাটিংয়ে ১২৭ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
ব্যাটিংয়ের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি টাইগারদের। ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে শুরু হয়ে যায় ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিল। সেই বিপদ সামলে ব্যাটিং দৃঢ়তা দেখিয়ে যাচ্ছিলেন আফিফ হোসেন। দিয়ে যাচ্ছিলেন বড় সংগ্রহের আভাস। তবে দুই অঙ্কে পৌঁছালেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। তরুণ এ অলরাউন্ডার ফিরে যান দলের বিপদের সময়ে ৩৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে। ৩৪ বলের ইনিংসটি সাজান তিনি ২ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়।
মোহাম্মদ ওয়াসিম পান জোড়া উইকেট। সাইফ হাসানের পর সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি নাজমুল হাসান শান্তকে। তিনি ফেরার আগে দলীয় স্কোরে যোগ করেন মাত্র ৭ রান। পরে মোহাম্মদ নওয়াজ উপড়ে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট। এ টাইগার ক্যাপ্টেন করেছেন মাত্র ৬ রান।
বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপে প্রথম আঘাতটা হানেন হাসান আলী। মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ক্রিজ থেকে বিদায় করে দেন তিনি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখকে। পরে মোহাম্মদ ওয়াসিম ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার সাইফ হাসানকে। দুজনেই এক রান করে তুলেন।
আফিফ হোসেনের পর বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইন-আপে হাল ধরেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। ভালো ব্যাটিং করেও ২৮ রানের বেশি তুলতে পারেননি এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। তার ২২ বলের ইনিংসটিতে ছিল ২ ছক্কা। তারপর দুই রান নিয়ে ফিরেছেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। শেষ দিকে ২০ বলে ১ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৩০* রানের হার না মানা এক ঝড়ো ইনিংস খেলেন মেহেদী হাসান।
পাকিস্তানের হয়ে হাসান আলী তিনটি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম দুটি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান।
তার আগে অবশ্য মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস ভাগ্য সহায় হয়েছিল টাইগারদের। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন টাইগার ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।