১১ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ৯২ রানে হারল বাংলাদেশ
১২০ রানে ২ উইকেট। সেখান থেকে ১৪৩ রানে অলআউট। কি বলবেন একে? খাঁড়া পাহাড় থেকে পড়ে যাওয়া! ঠিক যেন তাই হলো বাংলাদেশের ইনিংসে। আর তাতেই স্বপ্নের মৃত্যু। তাতেই বড় হার। আফগানিস্তানের ২৩৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল মাত্র ১৪৩ রানে। ম্যাচ হারল ৯২ রানে।
শারজায় এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ৯ নভেম্বর, একই মাঠে।
আফগানিস্তানের ২৩৫ রানের জবাবে বাংলাদেশের শুরুটা ভালো কিছু হয়নি। ওপেনার তানজিদ হাসান ব্যর্থ। অফস্পিনার মোহাম্মদ গজনফরের প্রথম শিকার তিনি। সেই গজনফরই পরে বাংলাদেশের বাকি ইনিংস ধসিয়ে দেন। রশিদ খান ও গজনফরের স্পিনেই কাটা পড়ে বাংলাদেশের লম্বা ব্যাটিং লাইন আপ। এই ম্যাচে আফগানিস্তানের স্পিনের কোনো জবাবই দিতে পারেনি বাংলাদেশ।
ওপেনার তানজিদ হাসানকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অপর ওপেনার সৌম সরকার দলকে সামনে টেনে নেন। সৌম্য সরকার তার সেই পুরানো ‘অসুখে’ কাটা পড়েন। উইকেটে সেট হয়ে আউট হলেন। ৪৫ বলে ৩৩ রান করেন সৌম্য। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে আফগানিস্তানের ২৩৫ রানকে খুব দূরের কিছু মনে হচ্ছিল না। অধিনায়ক শান্তর ব্যাটেও বড় রানের ইঙ্গিত মিলছিল। সমাধান দেখিয়েছিল এই জুটিই। সমস্যার শুরুও হলো যেন এখানেই। ১২০ রানে এই জুটি ভাঙ্গতেই বাংলাদেশের বাকি ইনিংস যেন এক লহমায় শেষ!
২ উইকেটে ১২০ রান থেকে হঠাৎ অলআউট ১৪৩ রানে। বিয়োগফল জানাচ্ছে শেষ ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ মাত্র ২৩ রান যোগ করে। আর এই ধংসযজ্ঞের মুল কারিগর তরুণ অফস্পিনার গজনফর ও অভিজ্ঞ রশিদ খান। গজনফর তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করলেন এই ম্যাচে। ৬.৩ ওভারে ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন এই তরুণ। অন্যপ্রান্তে রশিদ খানও ততক্ষণে আনপ্লেয়েবল। ৮ ওভারে ২৮ রানে ২ উইকেট শিকার করেন তিনি।
নাজমুল হোসেন শান্ত ৬৮ বলে ৪৭ রান করে মোহাম্মদ নবির বলে ফিরে আসার পরই পুরো বাংলাদেশ ইনিংস যেন চোখের পলকেই গুটিয়ে যায়। শান্ত যে ভঙ্গিতে নবির নিরীহ ভঙ্গিতে সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হলেন তাকে আপনি অনায়াসে আত্মহত্যা বলতে পারেন।
অধিনায়কের পথ ধরেই যেন দলের বাকি সবাই একে একে আফগানিস্তানের স্পিন গিলেটিনে গলা পেতে দিলেন!
ওয়ানডেতে অনেক ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভালো অবস্থানে থাকার পরও এমন ভয়াবহ ব্যাটিং ধস! এই বিস্ময় অনেকদিন ধরে ভোগাবে দলকে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ২৩৫ (৪৯.৩ ওভারে, হাসমতউল্লাহ শহিদি ৫২, নবি ৮৪, সেদিকুল্লাহ আতাল ২১, নাঈব ২২, তাসকিন ৪/৫৩, মুস্তাফিজ ৪/৫৮) বাংলাদেশ: ১৪৩/১০ (৩৪.৩ ওভারে, সৌম্য ৩৩, শান্ত ৪৭, মিরাজ ২৮, গজনফর ৬/২৬, রশিদ খান ২/২৮)। ফল: আফগানিস্তান ৯২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা: গজনফর।