সিরিজ শুরুর আগে নতুন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান জানিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজটা জিততেই যাচ্ছেন। সেটার ইঙ্গিত মিলছিল প্রথম ম্যাচেই। তবে প্যাট কামিন্সের কাছে শেষমেশ হারতে হয়েছিল সেদিন। তবে আজ আর কোনো বাধাই টিকল না তাদের সামনে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দাপুটে পারফর্ম্যান্সে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়েছে ৯ উইকেটে। ১৪১ বল হাতে রেখে এই জয় পেয়েছে পাকিস্তান। দাপটটা কেমন দেখিয়েছে সফরকারীরা, তা বুঝতেই পারছেন!
অ্যাডিলেইড ওভালে আজ পাকিস্তানের এই জয়ের কারিগর ছিলেন হারিস রউফ। ৫ উইকেট নিয়ে তিনি একাই ধসিয়ে দিয়েছেন অজিদের মিডল অর্ডার। তবে স্বাগতিকদের ইনিংসে শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছিলেন শাহিন আফ্রিদি। বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকা দুই ওপেনার জেক ফ্রেজার ম্যাগার্ক আর ম্যাথিউ শর্টকে ফেরান তিনি।
সেই যে শুরু, এরপর আর অজি ব্যাটিং লাইন আপের কেউ দাঁড়াতেই পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৫ রানের ইনিংস এসেছে স্টিভেন স্মিথের ব্যাট থেকে। এছাড়া আর কেউ ২০ রানও করতে পারেননি। তার কৃতিত্বটা হারিসের। ক্যারিয়ার-সেরা ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি ২৯ রান খরচায়। শাহিন আফ্রিদি ইনিংস শেষ করেন ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে। যার ফলে ৩৫তম ওভারেই ১৬৩ রান তুলে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
জবাব দিতে নেমে পাকিস্তান কোনো সুযোগই দেয়নি স্বাগতিকদের। শুরুটা কিছুটা ধীরগতিরই ছিল সাইম আইয়ুব আর আব্দুল্লাহ শফিকের। তবে যখন তারা খোলস ছেড়ে বেরোলেন, তখন আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
সাইমের আগ্রাসী ব্যাটিং ম্যাচে যাও আশা ছিল অস্ট্রেলিয়ার, তাও শেষ করে দেয়। দলীয় ১৩৭ রানে তিনি যখন ফিরছেন সেঞ্চুরি থেকে ১৮ রান দূরে থেকে, ততক্ষণে খেলা থেকে ছিটকেই গেছে অস্ট্রেলিয়া। অমন পরিস্থিতি থেকে পাকিস্তানের জয় ভিন্ন অন্য কিছু হতে হলে গত বুধবার রাতে শারজায় যা হয়েছে, তেমন কিছু নেমে আসতে হতো অ্যাডিলেইডে। জ্যাম্পা, কামিন্সদের কারো হয়ে উঠতে হতো মোহাম্মদ গাজানফার।
তবে বাবর আজম আর আব্দুল্লাহ শফিক মিলে আর কোনো ভুলচুক হতে দেননি, কামিন্স-জ্যাম্পাদের গাজানফার হতে দেননি। বাবর যখন ইনিংসের দশম ছক্কায় দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেছেন, তখন ম্যাচের আরও ২৩.৩ ওভার বাকি। সিরিজে তাতে সমতা ফেরে ১-১ ব্যবধানে।
এই জয়ের সঙ্গে আরও একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার বিমানে ওঠার আগে রিজওয়ানের সিরিজ জিততে চাওয়ার অভিপ্রায় ফাঁকা বুলি ছিল না আদৌ! তবে সেটা বাস্তবে রূপ নেয় কি না, সে প্রশ্নের জবাব পেতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। পার্থে সিরিজের শেষ ওয়ানডেটা হবে সেদিনই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর–
অস্ট্রেলিয়া ১৬৩/১০, ৩৫ ওভার (স্টিভেন স্মিথ ৩৫; হারিস রউফ ৫/২৯, শাহিন আফ্রিদি ৩/২৬)
পাকিস্তান ১৬৯/১, ২৬.৩ ওভার (সাইম আইয়ুব ৮২, আব্দুল্লাহ শফিক ৬৪*; অ্যাডাম জ্যাম্পা ১/৪৪)
ফল– পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।