বাংলাদেশ যেন প্রোটিয়া কোচদের রিহ্যাব সেন্টার: মাশরাফি
সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লুড়াকু পুঁজি গড়েও হার মেনেছে বাংলাদেশ। এই হারের কারণ খুঁজতেই চলছে এখন ময়না তদন্ত। সমালোচকদের কাঠগড়ায় ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ভুল সিদ্ধান্ত আর লিটন দাসের ফিল্ডিং কাণ্ড। লিটন দুটি ক্যাচ মিস করায় জয়ের কাছাকাছি গিয়েও মূলত খেলা থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা।
মূল পর্বে লঙ্কানদের বিপক্ষে পাঁচ উইকেটের হারটা হজম করতে পারছেন না দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। মেনে নিতে পারছেন না সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে ক্রিকেটবোদ্ধারাও। তাদের দলের হারের কারণ অনুসন্ধানে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। হারের জন্য সাবেক এ টাইগার ক্যাপ্টেন ক্রিকেটারদের সঙ্গে দায় দেখছেন কোচিং স্টাফদেরও।
২০১৯ বিশ্বকাপের পরও কোচিং স্টাফদের মধ্যে ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক এখনো টাইগারদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও সাবেক টাইগার অধিনায়কের কাছে মনেই হচ্ছে না দলে কোনো ফিল্ডিং কোচ আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে মাশরাফি লিখেন, ‘লিটন ক্যাচ মিসের কোন এক্সকিউজ দিব না এমনকি লিটন নিজেও দেবে না। তবে ক্যাচ মিস খেলার একটা অংশই। কিন্তু ফিল্ডিং কোচের কাছে কি এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। ক্যাচ মিস কি এই প্রথম হলো। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর ম্যানেজমেন্টের প্রায় সবাই চাকরি হারিয়েছে স্রেফ বর্তমান ফিল্ডিং কোচ ছাড়া। তাহলে আমরা বিশ্বকাপে বা তারপর কি সেরা ফিল্ডিং সাইড হয়ে গিয়েছি।’
টিম ম্যানেজমেন্ট যেন মাশরাফির কাছে রিহ্যাব সেন্টার। দক্ষিণ আফ্রিকায় যারা চাকরি পায় না। তারাই এখানে চাকরি করছে, ‘এখন টিম ম্যানেজমেন্ট দেখলে মনে হয় একটা রিহ্যাব সেন্টার যেখানে সাউথ আফ্রিকার সব চাকরি না পাওয়া কোচগুলো একসঙ্গে আমাদের রিহ্যাব সেন্টারে চাকরি করছে। এদের বাদ দেওয়া আরও বিপদ। কারণ, চুক্তির পুরো টাকাটা নিয়ে চলে যাবে। তাহলে দাঁড়ালো কী, তারা যতদিন থাকবে আর মন যা চাইবে তাই করবে। হেড কোচ এক এক করে নিজ দেশের সবাইকে আনছে এরপর যারা অস্থায়ীভাবে আছে তাদেরও সরাবে আর নিজের মতো করে ম্যানেজমেন্ট সাজাবে। তাও মেনে নিলাম কিন্তু রাসেল (হেড কোচ) ম্যানেজমেন্টের জন্য যেভাবে স্টেপ-আপ করে মূল দলের জন্য তাহলে লুকিয়ে কেন। কেন তামিম, মুশফিক, রিয়াদ ভালো থাকে না। এটা ঠিক করা কি তার কাজ না।’
কিন্তু তারপরও মাশরাফি মনে করেন দায়টা ক্রিকেটারদেরই নিতে হবে, ‘তারপরও দায় খেলোয়াড়দেরকেই নিতে হয় বা হবে। এটাই স্বাভাবিক কারণ। মাঠে তারাই খেলে কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার যে খেলোয়াড়দের সেরকম পরিবেশ করে দিতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে, তাদের বিপদে কেউ পাশে না থাকুক অন্তত টিম ম্যানেজমেন্ট থাকবে।'
ক্রিকেট মানুষের কাছে এখন শুধু খেলা নয়। রীতিমতো তা আবেগে পরিণত হয়েছে। যে কারণে কোচের চাহিদা মেটানোর আগে দেশের স্বার্থ দেখার আহ্বান জানিয়েছেন মাশরাফি, 'আমি আমার ক্যাপ্টেন্সির শেষ প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম এই দলের কোচ যে-ই হোক না কেন, এখন এই দলের রেজাল্ট করার সময় এক্সপেরিমেন্টের না। কোচের চাহিদা মেটানোর আগে আমাদের দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। কারণ, ক্রিকেট দেশের মানুষের কাছে এখন স্রেফ খেলা নাই, রীতিমতো আবেগে পরিণত হয়েছে।’