বিশ্বকাপ মিশনের শুরুতে জয়ে চোখ টাইগারদের
ক্রিকেট অনুরাগীদের অপেক্ষার প্রহর শেষ। আজ রোববার, ১৭ অক্টোবর মাঠে গড়াচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১। উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের লড়াই আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। টাইগারদের মাঠের লড়াই শুরু রাত ৮টায়।
বিশ্বকাপ মিশন জয় দিয়ে শুরু করতে চায় টাইগাররা। দুর্দান্ত ক্রিকেট লড়াইয়ে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে প্রতিপক্ষ স্কটিশদের উড়িয়ে দিয়ে উচ্ছ্বাসের সাগরে ভাসতে চায় দেশের ক্রিকেটাররা।
বিশ্বকাপ দোরগোড়ায়। অথচ টাইগার ক্রিকেটাররা যেন বড়ই বিবর্ণ। অন্তত অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচের ফল সেটাই বলছে। অবশ্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়েছিল ওমান ‘এ’ দলের বিপক্ষে আন-অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে। তাতে ৬০ রানের বড় জয়ই ছিনিয়ে নিয়েছিল বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দোর্দন্ড প্রতাপ দেখিয়ে টানা তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা টাইগাররা যেন অচেনা হয়ে ছিল অফিসিয়াল দুই প্রস্তুতি ম্যাচে। শ্রীলঙ্কার কাছে ৪ উইকেটে হারের পর আয়ারল্যান্ডের কাছে ৩৩ রানে হেরে লজ্জায় ডুবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
তবে সে যাই হোক আগের তিন সিরিজ জয় আর ঘরের মাঠের দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুখস্মৃতি ভালো পারফরম্যান্স করতে অনুপ্রেরণা যুগাতে নিশ্চিত সঙ্গী হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের।
প্রস্তুতি পর্বটা ভালো না হলেও দুশ্চিন্তা নেই টাইগার শিবিরে। বরং ঘরের মাঠের দাপুটে পারফরম্যান্স বিশ্বকাপের মাঠে বইয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী দেশের ক্রিকেটাররা। বিসিবির নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন জানিয়েছেন তেমনটাই, ‘অবশ্যই আরেকটু ভালো আশা করেছিলাম। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে। কারণ আবুধাবির ব্যাটিং কন্ডিশন ভালো ছিল। সেখানে টপ অর্ডারে কারও বড় রান হলে ভালো হতো। এমনিতে দল হিসেবে আমার মনে হয় আমরা ভালো আছি। সবাই বেশ আত্মবিশ্বাসী। তবে অবশ্যই গা গরমের ম্যাচগুলো ভালো খেললে প্রস্তুতি আরেকটু ভালো হতো।’
প্রস্তুতি ম্যাচে ছিলেন না বাংলাদেশের নিয়মিত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। যার একটা বাজে প্রভাব হয়তো পড়েছে দলে। যে কারণেই ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে এমন বেহাল অবস্থা। তবে সুখবর হলো- পিঠের চোট কাটিয়ে দলে ফিরছেন রিয়াদ।
আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে তার নেতৃত্বেই। আইপিএল শেষে স্কোয়াডে যোগ দিয়েছেন মুস্তাফিজ ও সাকিব। তাই পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে ভালো খেলার প্রত্যাশায় এখন টাইগাররা।
তবে একটা ঘাটতি থেকেই গেছে দলে। দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরি ও তরুণদের দলে জায়গা করে দিতে বিশ্বকাপ দল থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এই প্রথম স্টার ক্রিকেটার তামিমকে ছাড়া বিশ্বকাপের মাঠে নামছে বাংলাদেশ। আগের সবকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই লাল-সবুজের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন তিনি।
তবে ছেড়ে কথা বলবে না প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। বাংলাদেশকে হারানোর জন্যরীতিমতো হুমকিই দিয়ে রেখেছেন স্কটিশ কোচ শেন বার্জার, ‘আমরা জানি, নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে আমরা সব দলকেই বিপাকে ফেলতে পারব। সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ সব দলকেই কাছাকাছি নিয়ে আসে। আমরা জানি, আমাদের সামর্থ্য আছে। যদি নিজেদের সেরাটা দিতে পারি, যে কোনো দলকে হারাতে পারি আমরা, তা বাংলাদেশ হোক বা ওমান ও পাপুয়া নিউগিনি।’
স্কটিশদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে বেশ কজন। ব্যাটিং-বোলিংয়ে গভীরতাও অনেক। তাদেরকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। গত ১০ দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চারটি ম্যাচ খেলে তারা জয় পেয়েছে সবকটিতেই। গত ৫ অক্টোবর তারা হারায় আয়ারল্যান্ডকে, যে দলের কাছে পরে প্রস্তুতি ম্যাচে হেরে যায় বাংলাদেশ। এরপর স্কটিশরা হারায় পিএনজি, নেদারল্যান্ডস ও নামিবিয়াকে। যে কারণে বাংলাদেশকে ওমান আর পাপুয়া নিউগিনির মতো দল হিসেবেই দেখছেন স্কটিশ ক্রিকেট গুরু বার্জার।
ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে স্কটিশ কোচের কথার ডিপ্লোমেটিক জবাব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘স্কটিশ কোচ কি বলেছেন তাতে আমি ভাবছি না। আমি আমাদের সামর্থ্য জানি। আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে যতটুকু থাকবে আমরা সেরকম হার্ড ক্রিকেট খেলব। আমরা বিনয়ী থাকতে চাই, সম্মান করি। তবে হার্ড ক্রিকেটও খেলব।’
হার্ড ক্রিকেটের ব্যাখ্যায় ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করি। পাওয়ার হিটার বলতে গেইল, পোলার্ড, রাসেল পাওয়ার হিটার। কিন্তু কেন উইলিয়াসনকে পাওয়ার হিটার তো বলা যায় না। তিনি স্কিলড হিটার। আমরা নিজেদের স্কিলড হিটার মনে করছি। আমরা পাওয়ার হিটারের চেয়ে ভালো স্কিলড হিটার হতে পারি। এটা নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের ওই জিনিসগুলো ঠিক হলে অবশ্যই ভাল কিছু সম্ভব।’