২১৮ রানে এগিয়ে বাংলাদেশ
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে চট্টগ্রাম টেস্ট যেখানে দাড়িয়ে সেখান থেকে বাংলাদেশ স্বস্তির হাসি হাসতেই পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ২৫৯ রানে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভাল হয়নি। ৪৭ রানে হারায় ৩ উইকেট। কিন্তু প্রথম ইনিংসের লিডটাই বাংলাদেশের অনেক ভাবনা দূর করে দিয়েছে। প্রথম ইনিংসের ১৭১ রানের লিডের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোরবোর্ডে উঠা ৪৭ রানের যোগফল জানাচ্ছে ম্যাচে বাংলাদেশ এগিয়ে ২১৮ রানে।
চট্টগ্রামের উইকেটের যে অবস্থা তাতে শেষ ইনিংসে এখানে তিনশ রানই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেই লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া থেকে বাংলাদেশ খুব বেশি দূরে নয়।
সকালের সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চটজলদি উইকেট হারালেও বেশ দ্রুতগতিতে রান তোলে তারা। ৭৬ রানের হাফসেঞ্চুরি করেন উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট। মিডলঅর্ডার ব্যাটম্যানদের কল্যানে দলের ইনিংস ২৫০ রান পার করে। কিন্তু শেষের ব্যাটিংয়ে হঠাৎ করেই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে সফরকারীরা। শেষ ৫ উইকেট হারায় তারা মাত্র ৬ রানে!
মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাটিংয়ের মতো বোলিং সেশনেও বাংলাদেশের সেরা পারফর্মার। সকালে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট পান মিরাজ। সেই সাফল্য ধরে রাখেন পুরো ইনিংস জুড়ে। ৫৮ রান খরচায় ৪ উইকেট পান ডানহাতি এই স্পিনার। ব্যাটে-বলে চট্টগ্রাম টেস্টকে পুরোদুস্তর যেন নিজের করে নিচ্ছেন মেহেদি মিরাজ।
১৭১ রানের লিড নিয়ে দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমেই বড় বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের স্পিনে তামিম এলবিডব্লু শূন্য রানে। সেই সঙ্গে একটা রিভিউও নষ্ট করলেন! দুই বল পরেই নাজমুল হোসেন শান্তও আউট শূন্য নিয়ে! স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন নাজমুল। ওপেনার সাদমান ইসলাম রান তোলার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলেন। কিন্তু শ্যানন গ্র্যাব্রিয়েলের বাউন্সারের কাছে হার মানেন তিনি।
লেগসাইডের বাউন্সার এড়াতে চোখ বন্ধ করে ব্যাট উঁচিয়ে দেন। বল তার গ্লাভসে লেগে উইকেটকিপারের গ্লাভসে জমা হয়।
দিনের শেষ ভাগে মুশফিকুর রহিম ক্যাচ দিয়েছিলেন। সেই ক্যাচ শর্ট লেগের ফিল্ডার ধরেনও। কিন্তু তারা কেউ নিশ্চিত ছিলেন না এটি গ্লাভস বা ব্যাটে লেগে এসেছে কিনা? হালকা আপিল হয়; কিন্তু তাতে তেমন জোর ছিল না। আম্পায়ারও নিশ্চল থাকেন। কিন্তু রিপ্লেতে পরিস্কার দেখা যায় বল মুশফিকের প্যাডে লাগার পর গ্লাভসেও লেগেছিল! ওয়েস্ট ইন্ডিজ রিভিউ নিলে মুশফিক নিশ্চিত আউট!
হোটেলে ফিরে এই রিপ্লে যখনই দেখবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ততবারই হতাশ হবে তারা। উইকেটটা ছিল মুশফিকের। যিনি এখন ব্যাট করছেন ১০ রানে। সঙ্গে অপরাজিত ৩১ রানে নিয়ে আছেন অধিনায়ক মমিনুল হক।
একটু জানিয়ে দেই-ক্যারিয়ারের ৯টি টেস্ট সেঞ্চুরির ছয়টিই আছে মমিুনলের চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। সাত নম্বরের দেখা মিলবে ম্যাচের চতুর্থদিন?
আগের দিনের ইনজুরির কারণে সাকিব তৃতীয়দিন মাঠেই নামতে পারেননি। এই ম্যাচের বাকি সময় তিনি খেলার মতো ফিটনেস পাবেন কিনা-তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৩০/১০ ও দ্বিতীয় ইনিংস: ৪৭/৩।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৫৯/১০ (৯৬.১ ওভারে, ব্রাথওয়েট ৭৬, ব্ল্যাকউড ৬৮, মেয়ার্স ৪০, সিলভা ৪২, মিরাজ ৪/৫৮, তাইজুল ২/৪৮, নাঈম ইসলাম ২/৫৪, মুস্তাফিজুর ২/৪৬)।