‘ভুতুড়ে বিলের নামে সরকার সিরিঞ্জ দিয়ে জনগণের রক্ত টানছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বিদ্যুতের ‘ভুতুড়ে’ বিলের মাধ্যমে সরকার সিরিঞ্জ দিয়ে জনগণের রক্ত টেনে নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (২৭ জুন) সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, অনেকে আমাদেরকে বলছেন যেখানে বিদ্যুৎ বিল হওয়ার কথা ১ হাজার থেকে ১১‘শ ১২‘শ টাকা। সেখানে ২০ হাজার, ২৫ হাজার টাকা বিল আসছে। এই ভুতুড়ে বিলের জন্য গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে সরকারের এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকার এদিকে তাকাচ্ছেন না। তারা নির্লজ্জভাবে গায়ের জোরে আবার বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে।

সিরিঞ্জ দিয়ে যেমন রক্ত টান দেয়- এই সরকার জনগণের শরীরে সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত টান দিচ্ছে এই বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করে। আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, সরকার সংসদে বিল উপস্থাপন করেছেন।

রিজভী বলেন, তাদের (সরকার) টাকা দরকার। এই টাকা কোথায় যাচ্ছে জানেন? এটাও গতকাল বিভিন্ন পত্রিকায় বেরিয়েছে- ৫ হাজার কয়েক‘শ কোটি টাকা সুইস ব্যাংকের জমা আছে। এই টাকা কার? এই টাকা মন্ত্রীদের, এই টাকা আমলাদের, এই টাকা ক্ষমতাসীন দলের লোকদের। ১১ থেকে ১২ বছর জনগণের এই টাকা আত্মসাত করে সুইস ব্যাংক ফুলে-ফেঁপে একেবারে বিশাল মহিরুহে পরিণত করেছে তারা। এখন আরও টাকা দরকার, সুইস ব্যাংকে আরও কালো টাকা পাঠাতে হবে-এই লক্ষ্য নিয়ে বছরে কয়েকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি তেলের দাম তারা বৃদ্ধি করছে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ মরছে, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই, অক্সিমিটার নেই, চিকিৎসা নেই ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ছাড়া। এতো কথা হয়তো গণমাধ্যমে আসছে কিন্তু সব আসছে না। হাসপাতালে গিয়ে করোনা রোগী কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না। কারণ ওরা জনগণকে সুবিধা দেওয়া, জনগণের কষ্ট লাঘব করার কোনো কাজ তারা করেনি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে গেছে, একেবারে ভঙ্গুর। মানুষ এখন কুকুর-বিড়ালের মতো রাস্তায় মারা যাচ্ছে, করোনা আক্রান্ত মানুষ রাস্তায় মারা যাচ্ছে-এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার, এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের উপহার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সম্রাটের মতো’ দেশ শাসন করছেন মন্তব্য করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। কোনো এক দেশের সম্রাট বলেছিলেন, আই অ্যাম ‘ল, আমিই হলাম আইন। শেখ হাসিনা হলেন সেই সম্রাটের মতো। আমিই আইন, আমি যেটা বলব, সেটাই মানতে হবে। কিসের পার্লামেন্ট। এই নিশিরাতে পার্লামেন্ট জো‘হুকুমের পার্লামেন্ট।

তিনি বলেন, সরকার মনে করে আমি যেটা বলব সেটাই আইন। কেউ কিছু বললে লাল ঘরে পাঠিয়ে দেবো, বেশি কথা বলো না, বেশি কথা বললে আমি একেবারে লাল ঘরে পাঠিয়ে দেবো। বিরোধী দল ও বিরোধী মতের জন্য একেবারে পারমানেন্ট করে রেখেছে লাল ঘর, ইটের লাল দেয়ালের মধ্যে বন্দি করে রাখব। আমরা বলতে চাই, আমাদের বন্দি করবেন তারপরেও আমরা প্রতিবাদ করবো। আমাদেরকে মামলা দেবেন, আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে যাবেন-আমরা তো প্রস্তুত সব সময়। কিন্তু আপনার অন্যায়-অবিচার-অত্যাচার-জুলুম আর এ দেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন (সংশোধন) বিল সংসদে উত্থাপনের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়।