করোনার প্রকৃত তথ্য গুম করছে সরকার: ফখরুল

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুরনো ছবি

পুরনো ছবি

গুম-খুনের সরকার করোনার প্রকৃত তথ্য গুম করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গুম-খুনের সরকার করোনার প্রকৃত তথ্য গুম করছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, জনমনে ধারণা গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে যে মৃত ও আক্রান্তের সঠিক চিত্র লুকিয়ে রাখছে ক্ষমতাসীনরা। সরকার তাদের বিভিন্ন গোঁজামিলের তথ্য গোপন করতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। সরকারি হিসাবের সঙ্গে আক্রান্ত ও মৃত্যুর যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। ঢাকা শহরের কিছু কবরস্থানে লাশ দাফনের চিত্র দেখলেই বুঝতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। যদিও লাশের মিছিলে যুক্ত হওয়া মানুষ সরকারের কাছে কেবলই একটি সংখ্যা মাত্র। এমন অবস্থায় আপনি, আমি কেউই নিরাপদ নই। শনাক্ত হওয়ার সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই যা প্রায় প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। মারাত্মক ছোঁয়াচে এই রোগে যতটা আক্রান্ত হওয়ার ভয়, তার চেয়ে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত এই ভেবে যে, ন্যূনতম চিকিৎসা পাওয়া যাবে কি-না?

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশি ভাই-বোনেরা আক্রান্ত ও মারা গেলেও সঠিক তথ্য নেই সরকারের কাছে। উদাহরণ হিসেবে আমেরিকায় অনেক প্রবাসীর মৃত্যু হলেও তাদের পাশে দাড়ায়নি সরকার। শুধু সৌদি আরবেই এ পর্যন্ত করোনা ও উপসর্গে মারা গেছেন ৪১৫ জন। এর মধ্যে সেবা দিতে গিয়ে জীবন হারিয়েছেন ৫ জন চিকিৎসক। করোনায় পর্যন্ত ফ্রন্টলাইনার্স (চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী) বৈশ্বিক হারে আক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি। কর্তব্যের আহ্বানে এ পর্যন্ত চিকিৎসক জীবন দিয়েছেন ৫১ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৯৩ জন, নার্স এবং টেকনোলজিস্ট ৪ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত। দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে মোট পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজারের অধিক। জীবন উৎসর্গ করেছেন ৩২ পুলিশ সদস্য। মাঠের যোদ্ধা সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন ৪২৪ জন (২৩ জুন পর্যন্ত)। আর করোনায় প্রাণ দিয়েছেন ৭ অকুতোভয় সৈনিক। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা মারা গেছেন কমপক্ষে ৬ জন। এছাড়া দেশের খ্যাতনামা শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ গুণীজন হারানোর অপূরণীয় ক্ষতি কোনোদিন কাটাতে পারবে না দেশ। এখনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাজারো নাগরিক। জানি না কতজন ফিরবেন আমাদের মাঝে?

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ত্রাণ চুরির যে চিত্র দেশবাসী গণমাধ্যমে দেখেছে তাতে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগারদের যেন কিছুতেই চরিত্রের পরিবর্তন হয়নি। তাদের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান আক্ষেপ করে বলেছিলেন 'সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেলাম চোরের খনি'। সরকারপন্থী কতিপয় দলবাজ চিকিৎসকের দায়িত্বহীন বক্তব্য ও ভুলবার্তা বর্তমান বিপর্যয়কর পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণসহ অনেক বিশেষজ্ঞরা।

ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসহ সার্বিক পরিস্থিতিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন চীনা বিশেষজ্ঞ দল। নমুনা পরীক্ষা কম হওয়া এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে লকডাউন হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন তারা। নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবচেয়ে সফল দেশ চীনের বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলের বক্তব্যে স্পষ্ট, বাংলাদেশে করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কোনো কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না। দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার আগে 'প্রতিরোধ পরিকল্পনা' যে নেওয়া হয়নি, তা এখন একেবারেই স্পষ্ট।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও করোনা পর্যবেক্ষণ সেলের আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বিএনপি ও করোনা সেলের সমন্নয়ক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ছাত্র দলেন সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।