প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করোনার অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।
করোনার অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও সচল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজকে স্বাগত জানিয়ে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, এই প্রণোদনা প্রদানের উদ্দেশ্য যেন কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, হয়রানি ও দুর্নীতির কারণে ব্যাহত না হয়। তার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, সেবা পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির অন্য সকল খাতকেও সচল রাখার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রণোদনা ও সহায়তা প্রদান করতে হবে।
কৃষক ও খামারিরা তাদের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছেন। কৃষি খাত ও পোল্ট্রি, মৎস্য, প্রাণীসম্পদসহ কৃষি খাত যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য সরকারকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।
কৃষকের উৎপাদিত ফসল, খামারিদের উৎপাদিত খাদ্যপণ্য বিপণনে যেন কোনো সংকট না হয় তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে হবে। বোরো ধান উঠার সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনা এখনই প্রস্তুত রাখতে হবে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, প্রধানমন্ত্রী সামাজিক নিরাপত্তা আওতা বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও এ খাতে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেননি। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায়- প্রবাসী রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা চাকরি হারালে তাদের এবং দেশে তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য আর্থিক বরাদ্দ প্রস্তুতি রাখতে হবে। শহর গ্রামের প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা জালের আওতায় আনতে হবে। অসহায়দের খাদ্য সহায়তা ও নগদ আয় সহায়তা প্রদান করতে হবে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগণের জন্য বিনাসুদে ব্যক্তিগত ঋণের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানিসহ ইউটিলিটি বিল আদায় তিন মাস বন্ধ এবং তিনমাসের বকেয়া বিল কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দিতে হবে। বাড়ি ও দোকান ভাড়া প্রদানে অপারগদের কাছ থেকে তিনমাসের ভাড়া আদায় বন্ধ ও তাদের বকেয়া তিনমাসের ভাড়া পরবর্তী ছয় মাসে কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দিতে হবে, বাড়ির মালিকদের প্রয়োজনে বিনাসুদে ঋণ প্রদান করতে হবে।
সর্বোপরি যেকোনো মূল্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে লকডাউন, আইসোলেশন, বাড়িতে সঙ্গরোধ, প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গরোধ, টেস্ট, শনাক্তকরণ, উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদানের জন্য টেস্ট কিট, মেশিনপত্র, আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর, পিপিই, মাস্ক সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। সাধারণ অসুস্থ মানুষদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা চালু রাখতে হবে।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, করোনা মোকাবেলার যুদ্ধে প্রথম কাতারের যোদ্ধা চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-স্বাস্থ্যসেবার সাথে যুক্ত সকল পেশাজীবী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ঝুঁকি ভাতা ও প্রণোদনা প্রদানের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা দিতে হবে।