বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারকে কেন্দ্রীয় বিএনপি শোকজ (কারণ দর্শানোর) নোটিশ পাঠিয়েছে।
দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় বিএনপির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শনিবার (১১ জানুয়ারি) মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা আয়োজনের জন্য তাদের বিরুদ্ধে এই নোটিশ দেওয়া হয়।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে ফারুক ও জিয়া সিকদারের কাছে পাঠানো শোকজ নোটিশে তাদেরকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বরিশাল বিমানবন্দর থেকে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাসহ নগরীতে প্রবেশ করেছেন। আপনারা কেন সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় পড়বেন না, এ বিষয়ে লিখিত জবাব পাঠাবেন। ফারুক ও জিয়া সিকদার শোকজ নোটিশ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন এবং জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আভ্যন্তরীণ বিরোধের মধ্যে এ শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সম্মেলনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় বিএনপির হাতে থাকলেও, মহানগরে নেতাদের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। দুই নেতা শোডাউন প্রদর্শনের জন্য তাদের অনুসারীদের নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা শুরু করেন যা পরে দলের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে কিছু নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
দলীয় সিদ্ধান্তের বরখেলাপ ও বিরোধীদের তোপের মুখে দলীয় সিনিয়র নেতারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় মহাসচিব রূহুল কবির রিজভীর মাধ্যমে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলে নির্দেশনা ছিল শোডাউন নিষিদ্ধ। বরিশালে যা হয়েছে তা দলীয় শৃঙ্খলার চরম বিরোধী। সাধারণ জনগণও এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এজন্য তাদের শোকজ করা হয়েছে। বরিশাল মহানগর বিএনপিতে কোনো সাংগঠনিক সংস্কার নেই, বরং এটি এখন এক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, অনেক বড় নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কাজ করছেন, যা দলের শৃঙ্খলার ক্ষতি করছে।
এরই মধ্যে শহরের বিভিন্ন গ্রুপ নতুন কমিটির পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। আব্দুল আউয়াল মিন্টু ২৫ নভেম্বর চিঠি দিয়ে সম্মেলনের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা দিয়েছেন। বরিশাল মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটির ওপর বিরোধী দলগুলি সাংগঠনিক শুদ্ধিকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যাহাতে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
একটি গ্রুপ নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন, যিনি পূর্বে দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন মনে করলেও বর্তমানে এই দলে সক্রিয় হয়েছেন। অন্যদিকে, একটি অনানুষ্ঠানিক গ্রুপ, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মীর জাহিদুল ইসলাম, ইতোমধ্যেই বিরোধী অবস্থান নিয়েছে।
বরিশালে বিএনপির ভবিষ্যৎ অনেকটাই তলানিতে চলে যাচ্ছে, দলে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার অভাব ও একের পর এক ইস্যুতে সম্মেলনের প্রস্তুতিতে অন্তর্কলহ দেখা দিয়েছে।