নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পথে ঐক্যফ্রন্ট
শেষ হয়েছে ভোটের আমেজ। চলছে মন্ত্রী পরিষদ গঠন প্রক্রিয়া। শীঘ্রই বসবে নতুন মন্ত্রী-এমপিদের অধিবেশন। শুভ সূচনায় অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের নবযাত্রা। এর ঠিক বিপরীতে নির্বাচনে অকল্পনীয় ভরাডুবির পর পুরনো স্টাইলে নিজেদের কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
ফ্রন্টের সূত্র হতে জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনালে মামলা করা। যেখানে উল্লেখ থাকবে কিভাবে সরকার তার সমস্ত বাহিনী-প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচন পরিচালনা করেছে, এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে, সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, প্রার্থীদের উপর হামলা ছাড়াও ভোট কেন্দ্র দখল ও আগের দিন রাতেই সিল মেরে বাক্স ভরা হয়েছে ইত্যাদি অভিযোগ তুলে ধরা হবে।
এ প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে সারাদেশের প্রার্থীদের থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। জ্বালাও পোড়াও, হরতাল অবরোধ ও সহিংস আন্দোলনের পরিবর্তে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির চিন্তা রয়েছে। যেখানে প্রতিবাদ, গণ অনশন, মানববন্ধন, সভা-সমাবেশসহ শান্তিপূর্ণ সকল কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও বার্তা২৪কে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
কর্মসূচির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বিকালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় বৈঠক আহবান করা হয়েছে। ঐ বৈঠক থেকেই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু।
মোস্তফা মহসিন মন্টু জানান, ৩০ ডিসেম্বর একটি প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে এবং আমরা সেদিনই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টেয়ারিং কমিটির অন্যতম সদস্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বার্তা২৪কে বলেন, এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আন্দোলন করতে হবে। পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হবে। এটাই আমাদের ১ নম্বর কর্মসূচি। ইতোমধ্যে এক সপ্তাহ চলে গেছে, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মামলা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আমরা মামলায় জিতলেও সেক্ষেত্রে ৫ বছর লেগে যেতে পারে। সে পর্যন্ত জনগণকে সংঘবদ্ধ রাখতে হবে।
নির্বাচন পরবর্তী কর্মসূচি কিংবা আন্দোলন নিয়ে অনেকটাই হাল ছেড়ে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। অনেকেই গা বাঁচিয়ে চলছেন। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা জানান, এ ধরনের নির্বাচন কল্পনার অতীত। আমরা ধারণা করেছিলাম সরকার যতই ইঞ্জিনিয়ারিং করুক অন্তত ৪০-৫০ টা আসন আমরা পাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত হোয়াইট ওয়াশ করে দিবে এটা ভাবাই যায় না। আমাদের এখন করনীয় হবে ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো এবং পর্যালোচনা করে প্রস্তুতি নেওয়া। পরবর্তীতে যেন এ ধরনের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
বার্তা২৪ এর সাথে কথা হয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমরা দলের ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোকে প্রাধান্য দিচ্ছি। অনেক নেতাকর্মী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যেসব নেতাকর্মী জেলে রয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নিতে কেন্দ্রের নির্দেশনা রয়েছে।