সরকার দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়: মঈন খান

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, 'বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা চেয়েছিলেন গণতান্ত্রিক স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র মৃত। সরকার দেশে নতুনভাবে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়।' 

বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) এর উ‌দ্যোগে 'মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান ও গণতন্ত্র‘ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় তি‌নি এসব কথা ব‌লেন। 

বিজ্ঞাপন

তি‌নি বলেন, সরকার হয়তো পুলিশ দিয়ে, বোমা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকবেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন আগামী প্রজন্মের কাছে আপনার কোন বাংলাদেশ রেখে যাচ্ছেন? আসুন সংঘাতের রাজনীতি পরিহার করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি ব্যবহার নিশ্চিত করি। তা না হলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ খারাপ পরিণতি অপেক্ষা করছে।' 

তিনি আরও বলেন, 'এই সরকার মনে করছে তারা উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে টিকে থাকবে। কিন্তু সেটি না। স্বাধীনতার বিজয়ের প্রাক্কালে দেশের মানুষ ভেবেছিল বাংলাদেশ হবে একটি স্বাধীন দেশ। কিন্তু তার ঠিক আগ মুহূর্তে রাজাকার আলবদররা এক হয়ে দেশের মেধাস্বত্তকে হত্যা করেছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে মেধা শুন্য করে ফেলা। সেজন্যই মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। যা বিশ্বে বিরল ঘটনা। আমরা তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে বাস করছি।' 

তি‌নি বলেন, 'আজকে আমরা কোন বাংলাদেশে আছি এখানে ভিন্নমতের কথা বলার সুযোগ নেই। আজকে বর্তমান সরকার দেশে বাকশাল কায়েম করতে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। গুম খুন করছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ অতীতে বাকশাল শাসন মানেনি। এখনো মানবেনা। দেশের মানুষ চায় তারা ৫ বছরে একবার ভোট দিতে। তারা নিজেরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়। কিন্তু সেই ভোটাধিকার গেলো কোথায়? তারাই তো বলেছিলো আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিবো! আজকে তারাই কেনো বলে আমার ভোট আমি দেব দিনের ভোট রাতে দিব!' 

তিনি আরও বলেন, 'আজকে আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে পরিচয় দেন। তাহলে একদলীয় বাকশাল শাসন কেনো?'  

মঈন খান আরও বলেন, 'অনেকেই বলেন নতুনভাবে বাংলাদেশে কেনো স্যাংশন আসেনি। এজন্য বিএনপি নাকি হতাশ? তাহলে কি আরও স্যাংশন এলে আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিত? কেনো স্যাংশন দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে?
আওয়ামী লীগ নাকি জনগণের দল! তাহলে তারা আওয়ামী লীগ কেনো? নাকি উর্দু প্রেম ভুলতে পারেনি? এই প্রশ্ন তো আমি করতেই পারি! আমরা দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে প্রত্যাখান করেছে।' 

বিএসপিপির সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হাই শিকদার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এ্যাব‘র প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিএইউজে‘র সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রকৌশলী মাহবুব আলম, নার্সেস এসোসিয়েশনের জাহানারা সিদ্দিকী, এ্যামট্যাবের বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।