বিএনপির শরীক দল বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে যুগপৎ আন্দোলনের জোট ছেড়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় তার নির্বাচনী আসন হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো হাটহাজারী উপজেলা বিএনপি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলাদল ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় দলের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিম শেষ বয়সে এসে স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ লালসার জন্য অনৈতিক সুযোগ- সুবিধা গ্রহণ করে এমন ঘৃণিত কাজ করেছেন।
২০১৮ সালে বিএনপি নিজ দলের শতভাগ যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিয়ে জোটকে সম্মান দেখিয়ে মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিমের মত একজন সিঙ্গেল ম্যানকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ করেছে। বিএনপির সকল ইউনিট তার পক্ষে কাজ করেছে। কিন্তু তখনও তিনি সে সময়ের মহাজোট প্রার্থীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
নির্বাচনে মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিমের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলায় দলের বহু নেতা কর্মী হামলা মামলা এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কিন্তু মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিম একবারের জন্যও কারো খোঁজ খবর নেননি।
লিখিত বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মেজর জেনারেল (অবঃ) ইব্রাহিমকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলাম। পাশাপাশি তাকে আমরা চট্টগ্রামে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।
দলের কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ বা তাকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করলে তার বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।
পৃথক বিবৃতিতে হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ, সদস্য সচিব গিয়াসউদ্দিন চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. মুরাদ চৌধুরী, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম জনি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. আকবর আলী, উত্তর জেলা জাসাসের সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম টুটুল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা লায়লা ইয়াসমিন প্রমুখ।
জানা গেছে, বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে যুক্তফ্রন্ট নামে একটি জোট গঠন করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন সৈয়দ ইবরাহিম। তিনি নতুন ওই জোটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, এই মুহূর্তে আমার রাজনৈতিক অক্ষমতা এই যে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পেরে উঠছি না। ২৮ অক্টোবরের পর সুনির্দিষ্ট একটা অবস্থা এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে পরিস্থিতি পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন যে, চুপ থাকব না কি বিকল্প ব্যবস্থা নেব। আমি বিকল্প অবস্থান নিয়েছি, নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
জাতীয় সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিক মতিয়া চৌধুরীর মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে জোহরের নামাজ শেষে গুলশানের কেন্দ্রীয় মসজিদে (আজাদ মসজিদ) জানাজার নামাজ শেষে শ্রদ্ধা জানায় দলটি।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের জানাজায় স্থানীয় কিছু নেতা দলটির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। এসময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিবার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ পরিবারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এর আগে, এদিন সকাল ১০টায় রাজধানীর রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে তার বাসভবনের সামনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তার প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া শ্রদ্ধা জানায় দৈনিক সংবাদ পরিবার।
- মতিয়া চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত
- অগ্নিকন্যা খ্যাত মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
- রাজনীতিতে যেভাবে উত্থান ‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়ার
মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আজ বাদ যোহর গুলশান আযাদ মসজিদে আরেকটি জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে মতিয়া চৌধুরীকে। এজন্য নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের কাছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে। না পেলে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে দাফন করা হবে।
শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। তার নির্বাচনী এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তার মরদেহ সেখানে নেওয়া হবে না বলেও জানান মাসুদুল।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। মাঝে তাকে বাসায় আনা হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় আবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মতিয়া চৌধুরী ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। ছাত্ররাজনীতি শেষে তিনি ন্যাপে যোগ দিয়েছিলেন। রাজনীতির মাঠে অগ্নিকন্যা হিসেবে খ্যাত ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। দলটির কৃষি সম্পাদকসহ বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
৪৩তম বিসিএস নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহম্মেদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ৪৩তম বিসিএসে ঢালাও নিয়োগের মাধ্যমে নিষিদ্ধের দাবি ওঠা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৪৩তম বিসিএসে যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার বেশিরভাগই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএসের যে কার্যক্রম গুলো সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো স্থগিত করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনের দু'মাস না যেতেই কোনোরকম যাচাই বাছাই ছাড়া আওয়ামী লীগের অনুগত ও ছাত্রলীগের ক্যাডারদের পুনবার্সন করার জন্য ৪৩তম বিসিএসের দু'হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপন ছাত্র জনতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানী ও বিশ্বাস ঘাতকতার সামিল।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৪৪তম বিসিএসের তিন হাজার মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। সেইসঙ্গে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার মূল্যায়ন শেষ পর্যায়ে। আর ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আমরা চাই ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিবৃত্ত করতে এই তিনটি নিয়োগ পরীক্ষা পুরোপুরি বাতিল করে, নতুনভাবে পরীক্ষা নিতে হবে।
পুলিশ নিয়োগ নিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে ৮০৩ জনকে নিয়োগ করে। আমরা জানতে পেরেছি এরমধ্যে ২০০ জনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। এবং ৪০৩ জন ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারী সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য। সেইসঙ্গে আ.লীগ সরকার সর্বশেষ ৬৭জন এএসপিকে নিয়োগ প্রদান করে। যারা সবাই ছাত্রলীগের নেতা। এই পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিল না করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কলঙ্কমুক্ত হবে না।
অগ্নিকন্যা খ্যাত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর জানাজা আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্বামী প্রয়াত সাংবাদিক বজলুর রহমানের কবরের পাশে শায়িত করা হবে।
গতকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন প্রয়াত মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী।
মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কবরস্থান কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে।এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় নেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলায় মতিয়া চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী।
ইডেন কলেজের ছাত্রী থাকাকালীন তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে জড়িত হন। ১৯৬২ সালে হামদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে যে প্রবল ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে, তারও সম্মুখসারির সংগঠক ছিলেন মতিয়া চৌধুরী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ১৯৬৩ সালে তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পরের বছরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মতাদর্শিক কারণে বিভক্ত হলে মতিয়া চৌধুরী এক অংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। অন্য অংশের সভাপতি হয়েছিলেন রাশেদ খান মেনন। সেই হিসাবে ছাত্র ইউনিয়ন মতিয়া গ্রুপ ও ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপ নামে পরিচিতি পেয়েছিল।
মতিয়া চৌধুরী তার জ্বালাময়ী বক্তৃতার কারণে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসাবে ছাত্র-জনতার কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন। ছাত্রজীবন শেষ হওয়ার পর ১৯৬৭ সালেই মতিয়া চৌধুরী যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে। দ্রুতই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপকভাবে খ্যাতি অর্জন করেন তার বক্তৃতার কারণে।
১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আইয়ুব খানের পতন হলে শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক রাজনৈতিক বন্দি কারাগার থেকে মুক্তি পান। মতিয়া চৌধুরীও তখন জেল থেকে বেরিয়ে এসে মাঠের রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জীবনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মতিয়া চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ন্যাপের মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের রাজনীতি করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি-গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ-এই ধারার রাজনীতি থেকে মতিয়া চৌধুরী কখনো বিচ্যুত হননি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বামপন্থি রাজনীতিবিদদের ভালো সম্পর্ক ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় মতিয়া চৌধুরীও ছিলেন তার পছন্দের তালিকায়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল গঠন করলে এর ১১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মতিয়া চৌধুরীকেও রাখা হয়।
১৯৭৯ সালে তিনি আওয়ামী লীগের যোগ দেন। তিনি দলটির কৃষি সম্পাদক হয়েছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। বর্তমান তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা গেলে জাতীয় সংসদের উপনেতা নির্বাচিত হন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদেও একই দায়িত্ব পালন করেন।
রাষ্ট্র মেরামতে একটি পূর্ণাঙ্গ যুগোপযোগী সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করতে ছয়টি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। সংবিধান, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা, পুলিশ, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রস্তাব তৈরি করতে এই ছয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের ছাড়া বাকি ৫টি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, সংবিধান সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। এ কমিটিতে সদস্য রাখা হয়েছে ৬ জনকে। নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কারের আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে। সদস্য রাখা হয়েছে ৪ জনকে। পুলিশ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদকে। সদস্য রাখা হয়েছে ৪ জনকে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে। সদস্য করা হয়েছে ২ জনকে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে। সদস্য রাখা হয়েছে ৬ জনকে। তাদের সবাইকে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারেও একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদেরকেও চিঠি দেওয়া হবে।
সূত্রমতে, কমিটিগুলো তাদের কার্যক্রম দু-একদিনের মধ্যে শুরু করবেন। কমিটির কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর সেগুলোকে একত্রিত করে প্রস্তুত করা হবে দলের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রস্তাব। এরপর তা জনসমক্ষে প্রকাশের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানসহ সরকারের ছয়টি সংস্কার কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।