জনসভা থেকে বিএনপির ৭ দফা দাবি ঘোষণা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে: আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের কাছে ৭ দফা দাবি ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ১২টি অঙ্গীকার ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত জনসভায় এ ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির দাবিগুলো হলো-
১.নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় সংসদ বাতিল।
২। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তাঁর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। সকল বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো মামলা না দেয়া, পুরোনো মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার না করা, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী-সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি।
৩। সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
৪। ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
৫। নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে কোন ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা।
৬। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করা।
৭। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা।
জনগণের উদ্দেশ্যে বিএনপির অঙ্গীকার ঘোষণা-
১। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা।
২। সব প্রতিহিংসার রাজনীতির অবসানে জাতীয় ঐকমত্য গঠন।
৩. রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দলীয়করণের ধারার বদলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
৪। রাষ্ট্রক্ষমতায় গ্রহণযোগ্য ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা।
৫। স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা।
৬। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে আরও আধুনিক, শক্তিশালী ও কার্যকর করা।
৭। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
৮। দুর্নীতি প্রতিরোধে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথভাবে সংস্কার ও কার্যকর করা।
৯। সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা বিধান করা।
১০। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় এ মূলনীতিকে অনুসরণ করে জাতীয় মর্যাদা এবং স্বার্থ সংরক্ষণ করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সৎ প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্ব ও সমতার ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিনিয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১১। কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদকে মদদ না দেয়া এবং কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেয়া।
১২। সর্বনিম্ন আয়ের নাগরিকদের মানবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করে, আয়ের বৈষম্যের অবসানকল্পে অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ এবং শ্রমজীবী জনগণের জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা।
এসময় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।