দীর্ঘদিনের খরা কাটিয়ে বিএনপির বিশাল জনসমাবেশ
সবশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। তখন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এরপরে দলটির সঙ্গে অনেক কিছুই ঘটে গেছে । দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হয়ে এখন জেলে রয়েছেন। এছাড়া দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে মামলা আবার অনেকে রয়েছেন জেলে। ফলে সারা দেশে জুড়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।
আর এসব সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিশাল জনসভা করতে পেরে উৎফুল্ল দলটির নেতাকর্মীরা। এছাড়া দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি ও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সমাবেশের তাৎপর্যও রয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। ফলে দেশের সকল প্রান্ত থেকে দলটির নেতাকর্মীরা হাজার কষ্ট এড়িয়ে সমাবেশে হাজির হয়েছেন।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশস্থল ও এর আশপাশের এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সূর্যের তীব্র তাপের মধ্যেও সমাবেশে আগত বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার কোনো কমতি দেখা যায়নি। এছাড়া দলের চেয়ারপারসনকে জেল থেকে মুক্ত ও আসন্ন নির্বাচনে দলের অবস্থানকে শক্ত করতে শক্তি প্রদর্শনে কোনো কমতি রাখেনি নেতাকর্মীরা।
দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে দলটির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। দলটির নেতাকর্মীদের এমন স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসুমদ্রে পরিণতি হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর রাজপথেও দলটি নেতাকর্মীদের মিছিল ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
আগত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘুমিয়ে থাকার সময় শেষ। এখন নির্বাচন পর্যন্ত দলের প্রতিটি নেতাকর্মীদের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে যেতে হবে। আর এই আন্দোলন সংগ্রামের শুরু হচ্ছে আজকের এই জনসাভা থেকে। দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসেছেন নির্বাচনকে সামনে রেখে দিক নির্দেশনা মূল্যক বক্তব্য শুনতে।
এ বিষয় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির কর্মী কানন বার্তা২৪.কমকে বলেন, দীর্ঘ দিনের খরা কাটিয়ে দল এমন একটি বিশাল সমাবেশ করতে পারায় অনেক উৎসাহ পাচ্ছি। যা আগামীদের রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে আমাদেরকে আরও উৎজীবিত করবে।
ঢাকা উত্তরের বিএনপির আরেক কর্মী দিদার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজকের এই সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ এসেছেন। এই সমাবেশের মাধ্যমে দল আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্ত জনসমর্থন দেখাতে পেরেছে। এতে তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভালো একটি মেসেজ যাবে। দল আরও শক্তিশালী হয়ে আন্দোলন করতে পারবে।
এদিকে লক্ষ্য করা গেছে গ্রেফতার এড়াতে মিছিল ও শ্লোগান ছাড়াই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করছেন তারা। তাই সোহরাওয়ার্দীতে চুপিসারে প্রবেশ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে বিএনপির সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমাবেশের বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় সিসি ক্যামেরা ও একটি পুলিশ কানট্রেল রুম স্থাপন করছে ডিএমপি। এছাড়া বিপুল পরিমানে পুলিশ ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।
এ বিষয়ে পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তারা চেষ্টা করছেন যেন সমাবেস্থলে কোনো ধরনের বিশৃংখলা সৃষ্টি না হয়।