জিয়া চ্যারিটেবল মামলা: খালেদার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
জিয়া চ্যারিটেবল মামলা: খালেদার আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৭ অক্টোবর আসামি পক্ষের আইনজীবীকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেছেন, তারা খালেদা জিয়ার মামলার ডিফেন্ড করছেন, প্রতিনিধিত্ব করছেন না। আদালত এ বিষয়েও আগামী ৭ অক্টোবর আইনি ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড.মো. আখতারুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।
এই মামলায় আসামি মনিরুল ইসলাম স্থায়ী জামিনে ছিলেন। তবে রোববার তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আর অন্তবর্তীকালীন জামিনে থাকা মুন্নাকে আগেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে আদালতের প্রতি অনাস্থা নিয়ে মনিরুল ইসলাম খান ও ড. জিয়াউল ইসলাম মুন্নার আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
আদলত মুলতবি হলে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষীর কার্যক্রম শেষ , যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। মামলাটির রায়ের জন্য তারিখ ঘোষণার জন্য আমরা দরখাস্ত দিয়েছিলাম। এর প্রেক্ষিতে আদালত আগামী সপ্তাহে তারিখ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার আসামিরা মামলাকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে জানিয়ে কাজল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতের কাছে বারবার জামিন চাওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে আদালত বলেছে, যদি বেগম জিয়া আদালতে অনুপস্থিত থাকে তাহলে তার পক্ষে আইনজীবীরা যেন তার পক্ষে মামলাটা প্রতিনিধিত্ব করে পরিচালনা করে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হল খালেদা জিয়ার ওকালতনামায় ৪২৬ জন আইনজীবীর নাম আছে। তারা কেউই এসে কেউ প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা শুধু জামিন বাড়াতে এসে ডিফেন্ড করে, কিন্তু পরিচালনা করতে চায়না।
এদিকে বেগম জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘বরাবরের মত খালেদা জিয়ার জামিন বৃদ্ধির আবেদন করেছি আমরা। এর প্রেক্ষিতে পিপি তার আইনগত যুক্তি দিয়েছে। সব শুনে বিজ্ঞ আদালত বেগম জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না সে জন্য কারণ দর্শানোর একটি নোটিশ দিয়েছেন। আইনগত ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। অন্য দুই আসামির জামিন বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’
অপর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘গত ২০ তারিখ আদালত স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বেগম জিয়ার হাজিরা মওকুফ করেছে। আমরা সেদিনই বলেছিলাম আদালতের এই আদেশ বে-আইনি হয়েছে। কেননা জেলে থাকা কোন আসামির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ করার কোন বিধান আইনে নাই, তিনি বাইরে থাকলে ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ করতে পারতেন। হাইকোর্টেও এ ধরনের কোন নির্দেশনা নেই। সেকারণেই আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি এ আদেশের বিরুদ্ধে। আদালতের ২০ তারিখের আদেশও বলা হয়েছে বেগম জিয়ার সমর্থনকারী আইনজীবীরা ইচ্ছে করলে আদালতে তাদের বক্তব্য রাখতে পারবে। সেখানেও কিন্তু তিনি প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীর কথা বলেন নি।’
‘খালেদা জিয়া আদলতে আসতে চায় না সরকারের এমন বক্তব্য সঠিক না।তিনি বরাবর আদলতে এসেছেন। তার ছেলে, মায়ের মৃত্যু দিবসে আদালতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থেকেছেন। তিনি কখনো জেল কর্তৃপক্ষকে বলেন নি যে, তিনি আদালতে আসতে অনিচ্ছুক।’
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ৭ অক্টোবর।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেন-দেনের অভিযোগে এ মামলা করে দুদক।