জনসভার মঞ্চ প্রস্তুত, একক শক্তি প্রদর্শন বিএনপির
ঐক্যের ডামাডোল পিটিয়ে হঠাৎ করেই সবাইকে পাশ কাটিয়ে কেন এই জনসভা। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া তো নয়ই ২০ দলীয় জোটের শরিকদের আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানানো হয়নি।
তবে কি বিএনপি নিজেদের শক্তিমত্তা যাচাই করতে চাচ্ছে, এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
সম্প্রতি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশে যোগ দিয়েছে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এ নাগরিক সমাবেশে জোটের শরিকদের আমন্ত্রণ জানানো না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই। যা প্রকাশ পায় ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে। সেখানে সমাবেশে যোগ দেয়ায় প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা হয় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের।
খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া, জোটের শরিকদের আসন বিন্যাস ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নানা দাবি দাওয়া নিয়ে বেশকিছু দিন ধরেই চাপের মুখে আছে বিএনপি। এসব চাপ প্রশমিত করতেই দলটি নিজেদের শক্তি যাচাই করতে এককভাবে জনসভা করছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
পহেলা সেপ্টেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জনসভা করেছিল বিএনপি। সেখানে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ নির্বাচন, ইভিএম বাতিল, ইসির পুনর্গঠন, সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির কাছে জনগণের আলাদা একটা প্রত্যাশা রয়েছে। জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিএনপি আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছে। বিএনপি সেগুলো এখনো বলে নাই। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জোট এবং রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, যুক্তফন্টসহ অনেকেই তাদের অবস্থান পরিস্কার করছে। এখন আমাদের অবস্থানটা সুস্পষ্ট হওয়া খুব বেশি জরুরি। সেটা জনগণের সামনে তুলে ধরবো।
নতুন করে বিএনপি দেশের জনগণকে কি জানাতে চায়?- এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জনগণের প্রত্যাশা হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। আগামী সম্ভাব্য নির্বাচনের আগেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সংসদ ভেঙে দেয়া, নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দেয়া এবং নতুন করে মামলা না দেয়া। একইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, কোটা আন্দোলন ও রাজপথ মুক্ত করার আন্দোলনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরকে মুক্ত করাসহ ভবিষৎ বাংলাদেশ বির্নিমাণে বিএনপি ও তার বন্ধুরা যদি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পায় সেক্ষেত্রে কি কি করণীয় এ বিষয়গুলো জনসভায় স্পষ্ট করা হবে।
এদিকে রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টা থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা মহানগরী থেকে বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকায় পৌঁছেছেন বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেছিল বিএনপি। ওই সভায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য রেখেছিলেন। বর্তমানে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে খালেদা এখন কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকায় গত ১ সেপ্টেম্বর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা করেছিল বিএনপি। এরপর এটাই বড় কর্মসূচি দলটির।