জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগকে চায় না: জি এম কাদের

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জিএম কাদের

জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি কোন জোটেই নেই। বর্তমানে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে চায়না, জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগকে চায়না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

শনিবার (১৩ মার্চ) জাপার বনানী কার্যালয়ে  পার্টির যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যদের সাংগঠনিক সভার তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সাথেও আমাদের কান যোগাযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশকে জুলুমখানায় পরিণত করেছে, আমরা দেশের মানুষকে সকল জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্তি দেবো। আমরা বিরোধী দলে আছি, সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে আমরা দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলবো। জাতীয় পার্টি কখনই পরগাছা হয়ে রাজনীতি করবে না। জাতীয় পার্টির নিজস্ব রাজনীতি আছে, নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়েই রাজনীতির মাঠে এগিয়ে যাবে।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ১৯৯১ সালের পর থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। দুটি দলই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের অধিকারহরণ করে দেশের মানুষকে জিম্মি করেছে। ৯১ সালের পর থেকে দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সুশাসন নির্বাসনে দিয়েছে। দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কবর দিয়েছে। সকল স্তরে দলীয়করণের মাধ্যমে লুটপাটের মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়েছে দুটি দলের নেতা-কর্মীরা। তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করে। ছোটখাটো নির্বাচনে তারা কোটি কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নামে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চায়না। কারণ, তারা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দেশের মানুষ দিশেহারা, তারা এই দুটি দলের হাত থেকে মুক্তি চায়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে দুঃশাসন সৃষ্টি করেছে, আমরা দেশের মানুষের জন্য প্রকৃত গণতন্ত্র উপহার দেবো। রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি স্তম্ভের মধ্যে সরকার প্রধানের হাতে নির্বাহী বিভাগ ও আইন সভা আর রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বিচার বিভাগের নিরানব্বই ভাগই সরকার প্রধানের হাতে। তাই সরকার প্রধান যা চান, তাই হচ্ছে - এটাকে গণতন্ত্র বলা চলেনা। দুর্নীতি ও দলীয় করণের মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র এখন স্বৈরতন্ত্রের পর্যায়ে।

সরকারি দল না করলে এখন আর কেউ চাকরি পায়না, ব্যবসা করতে পারেনা।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিটি নির্বাচনে যাবে। চ্যালেঞ্জ ছাড়া কোন নির্বাচনেই কাউকে ছেড়ে দেয়া হবেনা। তবে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে দলের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, নির্যাতনের শিকার লেখক মুশতাক জেলখানায় মারা গেছেন। নির্যাতিত কর্টিুনিস্ট কিশোর জামিন পেয়েছে মুশতাকের মৃত্যুর পরে। দেশের মা-বোনরা ধর্ষিত হচ্ছে, বিচার পাচ্ছে না। শুধু ভৌগলিক স্বাধীনতার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়নি। বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্যই আমাদের একাত্তরের মুক্তি সংগ্রাম। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মানুষের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছে।

অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী মীর আব্দুস সবুর আসুদ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মোহাম্মদ নোমান মিয়া, আমির উদ্দিন আহমেদ ঢালু, মো. শামসুল হক, এডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী, মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া, ইকবাল হোসেন তাপস, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ জুলফিকার হোসেন প্রমুখ।