সরকার জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে: রিজভী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

করোনার এই সংকটকালে প্রতিটি দেশের সরকার প্রধান সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশে নিশি রাতের সরকার প্রধান শেখ হাসিনা করোনার ভয়ে নিজেকে গণভবনে বন্দি রেখে জনগণের সঙ্গে তামাশায় লিপ্ত রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, গত শনিবার দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভায় আগের মতোই ব্যাপক সহিংসতা, রক্তপাত ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন করেছে ক্ষমতাসীনরা। নির্বাচন নিয়ে অন্ধকার শ্বাসরোধী পরিবেশের কোন পরিবর্তনই হয়নি। সিরাজগঞ্জের শহীদগঞ্জে জনগণের ভোটে বিজয়ী আমাদের কাউন্সিলর প্রার্থী তরিকুল ইসলামকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে আওয়ামী জঙ্গী সন্ত্রাসীরা। তরিকুলের হত্যাকারী প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বুদ্দিন বাহিনীকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সিরাজগঞ্জ যখন উত্তাল তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সরাসরি খুনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, ‘কাউন্সিলর হত্যা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র!’ নিহত নির্বাচিত কাউন্সিলর যেহেতু বিএনপির নেতা, তাই তার কাছে হয়ে গেলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা! শুধু অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা কতটা নৃশংস হতে পারে এটা তার জাজ্জল্য প্রমাণ। এদের মনে কোন অনুশোচনা নেই। যতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে ততদিন দেশের ফাঁড়া কাটবে না।

তিনি বলেন, সর্বত্র চর দখলের মতো কেন্দ্র দখল করে ভোট কারসাজির ডিজিটাল মেশিন ইভিএম দিয়ে প্রকাশ্যে কারচুপি করা হয়েছে। বহু কেন্দ্রে ইভিএমে নৌকা ছাড়া কোন প্রতীক রাখেনি। মানুষ ভোট দিতে গিয়ে দেখে যে, শুধু নৌকায় ভোট পড়ছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা, কৃত্রিম লাইন তৈরি করে ভোটাদেরকে ভোট কেন্দ্রে যেতে না দেওয়া, নৌকা ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়া, কেন্দ্র থেকে এজেন্ট ও প্রার্থীদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া, ভোটের ফলাফল সরকার দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ঘোষণা করা, আমাদের নেতাকর্মীদের হয় কারাগারে নয়তো এলাকা ছাড়া করা, এসবই হয়েছে এই পৌর নির্বাচনে। অনিয়ম, ভোট জালিয়াতি ও পেশি শক্তির বিষয়ে অভিযোগ করা হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, 'রকিবুল হুদা কিংবা নুরুল হুদা' চক্র গত এক দশক ধরেই বেহুদা নির্বাচনের মাধ্যমে যে নানারকম নির্বাচনী মডেল জন্ম দিয়েছেন তা জনগণের স্মৃতি থেকে এখনও বাসী হয়ে যায়নি।

রিজভী বলেন, দেশের জনগণ জানে, আওয়ামী লীগের আমলে জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে জনগণের ভোটে হারজিত নির্ধারিত হয় না। হারজিত নির্ধারিত হয় গণভবনে। নির্বাচন কমিশন স্রেফ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পোস্ট বক্স। নির্বাচন কমিশনের কাজ, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে পাঠানো তালিকা প্রকাশ করা। এ খেলার মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা আর খেলোয়াড় হিসেবে আছে পুলিশ প্রশাসন। নির্লজ্জ রেফারি নির্বাচন কমিশন এখানে হাতের পুতুল।

বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, কখনো নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে জনগণকে ব্যস্ত রাখা কিংবা কখনো আব্দুল কাদের মির্জার মতো ‘আইটেম বয়’ মার্কেটে ছেড়ে গণমাধ্যমকে ব্যস্ত রাখা-এইসব অপকৌশলের ব্যাপারে জনগণ সচেতন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, মানুষকে নিয়ে, মানুষের স্বার্থ নিয়ে এইসব রঙ্গ তামাশার জবাব মানুষ কড়ায়-গন্ডায় ফিরিয়ে দেবে।