প্রবৃদ্ধি নির্ভর বাজেটের সমালোচনায় ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশা

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত বাজেটের কঠোর সমালোচনা করে ওয়াকার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির এ বিপর্যয়ের সময় প্রবৃদ্ধি নির্ভর বাজেট সঠিক হয়নি। এ বাজেটে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন ফজলে হোসেন বাদশা। এ সময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া। এর আগে বেলা ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের অষ্টম অধিবেশন শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, এ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমাদের অর্থমন্ত্রী একটা প্রবৃদ্ধি নির্ভর বাজেট করেছেন। আমি মনে করি, বিশ্বের অর্থনীতি যখন বিপর্যয়ের মুখোমুখি, পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নয়ন খাত যখন বিপর্যয়ের মুখোমুখি, তখন আমাদের প্রবৃদ্ধি নির্ভর বাজেট করা সঠিক হয়নি। কারণ এখানে মনে রাখা দরকার ছিল, আমাদের দেশে এ সরকার দারিদ্র্য সীমা ২১ শতাংশের নিচে নামিয়ে এনেছে, কিন্তু সেই দারিদ্র্য সীমা বেড়ে এখন কত ওপরে উঠবে, সেটা আমি জানি না। এমনও হতে পারে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ আবার দারিদ্র সীমার নিচে নেমে যেতে পারে। প্রবৃদ্ধি নির্ভর বাজেট বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিকভাবে কতখানি প্রযোজ্য, তা ভেবে দেখার আহ্বান জানাই।

স্বাস্থ্যখাতের আমূল পরিবর্তন আনার এবং স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আজ সমস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার একটা কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। এটা নিয়ে আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। একটা কথা মনে রাখা দরকার, আমাদের আশেপাশে অনেক দেশ আছে। পাশে শ্রীলংকা আছে, থাইল্যান্ড আছে, ভারত-পাকিস্তানও আছে। আজ তাদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন, আমাদের স্বাস্থ্যখাতে কি পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিগত দিনগুলোতে। এতে কি জনস্বাস্থ্যকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে? স্বাস্থ্যখাতে এ সময়ে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এটা অপ্রতুল। এর চেয়ে বেশি কিছু বলব না। এটা ভেবে দেখবেন।

অর্থমন্ত্রীকে সংবিধানের মূলনীতি পড়ার আহ্বান জানিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, অর্থমন্ত্রী একটু সংবিধানের মূলনীতি পড়ে দেখবেন। সংবিধানের মূলনীতিতে স্বাস্থ্যখাতকে বঙ্গবন্ধু কতখানি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেটা একটু দেখবেন। সংবিধান পড়ে আমাদের বাজেট তৈরি করা দরকার। সংবিধান না পড়ে বাজেট তৈরি করতে গেলে বাংলাদেশের গতিমুখ পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন আমরা বলি, আমরা কানাডা হব, আমরা আমেরিকা হব, এখন এ সমস্ত কথা কিন্তু আর আসে না। এ সমস্ত বিছিন্ন কথা ভ্রান্তি থেকে আসে।

স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির সমালোচনা করে বাদশা বলেন, স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে একটি কথাই বলব। ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কথা বলেছেন। সেই কমিউনিটি ক্লিনিককে যদি আমরা ধারাবাহিকভাবে বিকশিত করতাম, বাংলাদেশের তৃণমূলে আমরা যদি একটা ভিত্তি গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে আজ যত বড় করোনা আসুক না কেন তা মোকাবিলা করার একটা পথ খুঁজে পেতাম। সে পথ ধরে আমরা এগোইনি। বরং আমাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। সে সমস্ত অভিযোগের কথা আমি তুলতে চাই না। সম্প্রতি একটা অভিযোগ আছে, এন৯৫ মাস্ক কিনতে গিয়ে আজ দুর্নীতি করা হচ্ছে। এ করোনার মধ্যে যদি দুর্নীতির কথা আসে, তবে এর চেয়ে দুর্ভাগ্য হতে পারে না।